আপনার কফি পানের অভ্যাস কি সুস্থ জীবনের চাবিকাঠি? সম্প্রতি এক গবেষণায় এমনটাই ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। বিশ্বজুড়ে কফির জনপ্রিয়তা বাড়ছে, বিশেষ করে আমাদের বাংলাদেশেও এর কদর বাড়ছে।
সকালে এক কাপ চা অথবা কফি – অনেকেরই দিন শুরু হয় এই পানীয় দুটি দিয়ে। তবে নতুন একটি গবেষণা বলছে, কফি পানের অভ্যাস হয়তো মহিলাদের সুস্থভাবে বয়স্ক জীবনে সাহায্য করতে পারে।
টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন অনুষদের অধ্যাপক ড. সারা মাহদভীর নেতৃত্বে পরিচালিত এই গবেষণায় জানা গেছে, যারা তাদের ৫০ বছর বয়সে প্রতিদিন ১ থেকে ৩ কাপ ক্যাফিনযুক্ত কফি পান করেছেন, তাদের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদী রোগ থেকে মুক্ত থেকে ভালো শারীরিক, মানসিক এবং জ্ঞানীয় স্বাস্থ্য নিয়ে বৃদ্ধ বয়সে পৌঁছানোর সম্ভাবনা বেশি।
গবেষকরা নার্সদের স্বাস্থ্য বিষয়ক একটি স্টাডির অংশ হিসাবে, ৪৭,০০০ এর বেশি মহিলার খাদ্যাভ্যাস বিশ্লেষণ করেছেন। গবেষণার ফলাফল সম্প্রতি আমেরিকার পুষ্টি সোসাইটির বার্ষিক সভায় উপস্থাপন করা হয়েছে। তবে, বিস্তারিত গবেষণা খুব শীঘ্রই প্রকাশ করা হবে বলে জানা গেছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, ক্যাফিনযুক্ত কফি পান করলে এই উপকার পাওয়া যায়, কিন্তু চা বা ডিক্যাফিনেটেড কফির ক্ষেত্রে এমনটা দেখা যায়নি। এমনকি, যারা বেশি পরিমাণে কোলা বা অন্যান্য ক্যাফিনযুক্ত সোডা পান করেন, তাদের সুস্থভাবে বয়স্ক হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়। কফি পানের এই ইতিবাচক প্রভাবের কারণ জানতে আরও গবেষণা প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
তবে, এই গবেষণা থেকে এটা বোঝা যায় না যে, যারা কফি পান করেন না, তারা যদি হঠাৎ করে কফি পান শুরু করেন, তাহলে তাদের স্বাস্থ্য ভালো হবে কিনা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই গবেষণা থেকে কফি পানের পরিমাণ কমানোরও কোনো প্রয়োজনীয়তা নেই। কারণ অনেক সংস্কৃতিতে কফি একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং আনন্দদায়ক পানীয়। তবে, যাদের উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, উদ্বেগ বা ঘুমের সমস্যা রয়েছে, তাদের কফি পানের বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।
ড. মাহদভী আরও যোগ করেন, কফি হয়তো দীর্ঘ জীবন লাভের সহায়ক হতে পারে, তবে এটি সবার জন্য প্রযোজ্য নাও হতে পারে। বিশেষ করে মহিলাদের ক্ষেত্রে হরমোনের পরিবর্তনের কারণে ক্যাফিন শরীরে ভিন্নভাবে কাজ করে। তাই, কফি পানের উপকারিতা নির্ভর করে ব্যক্তিবিশেষের স্বাস্থ্য এবং হরমোনের উপর।
সুতরাং, আপনি যদি কফি ভালোবাসেন, তবে এই গবেষণা আপনার জন্য একটি ভালো খবর হতে পারে। তবে মনে রাখতে হবে, সুস্থ জীবনযাপনের জন্য স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ, নিয়মিত শরীরচর্চা এবং পর্যাপ্ত ঘুমের কোনো বিকল্প নেই।
তথ্য সূত্র: সিএনএন