সোশ্যাল মিডিয়ায় শোকের ছায়া: কলম্বিয়ান প্রভাবশালীকে গুলি করে হত্যা!

সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে, ‘ইনফ্লুয়েন্সার’ বা প্রভাবশালী ব্যক্তিরা বেশ পরিচিত মুখ। সম্প্রতি কলম্বিয়া ও মেক্সিকোতে দুজন নারী ইনফ্লুয়েন্সারের মৃত্যু সারা বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।

এদের মধ্যে কলম্বিয়ার মারিয়া জোসে এস্তুপিনান নামের ২২ বছর বয়সী এক তরুণীকে তার নিজ বাসভবনে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। একই ঘটনার কয়েক দিন আগে, মেক্সিকোতে নিজের বিউটি পার্লারে লাইভ করার সময় নিহত হন ২৩ বছর বয়সী ভ্যালেরিয়া মার্কেজ।

গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, গত ১৫ই মে, মারিয়া জোসে এস্তুপিনানকে কুকুটা শহরে তার বাড়িতে ঢুকে গুলি করে হত্যা করে এক ব্যক্তি, যিনি নিজেকে ডেলিভারি ম্যান হিসেবে পরিচয় দিয়েছিলেন। দেশটির ন্যাশনাল জেন্ডার কমিশনের প্রধান ম্যাগদা ভিক্টোরিয়া অ্যাকোস্টা সংবাদ সম্মেলনে জানান, ঘটনার তদন্ত চলছে।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যম নটিসিয়াস কারাকোল-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, সন্দেহভাজন ব্যক্তি এস্তুপিনানকে একাধিকবার গুলি করে পালিয়ে যায়। ঘটনার সময় এস্তুপিনানের আর্তচিৎকার শোনা যায় এবং পরে হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।

পুলিশের ধারণা, এস্তুপিনানের প্রাক্তন প্রেমিক এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে। কারণ, এর আগে তিনি প্রাক্তন প্রেমিকের বিরুদ্ধে গার্হস্থ্য সহিংসতার অভিযোগ এনেছিলেন। কুকুটা মেট্রোপলিটন পুলিশের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, নিহত তরুণী তার প্রাক্তন প্রেমিকের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের মামলা করেছিলেন এবং এর জন্য ক্ষতিপূরণও পাওয়ার কথা ছিল।

নিহত হওয়ার আগের দিনই তিনি এই মামলায় জয়ী হয়েছিলেন।

অন্যদিকে, মেক্সিকোতে নিহত ইনফ্লুয়েন্সার ভ্যালেরিয়া মার্কেজের ঘটনাটিও একইরকম উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। ১৩ই মে, নিজের বিউটি পার্লারে টিকটক লাইভ করার সময় তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঘটনার কয়েক দিন আগে একজন লোক পার্লারে গিয়ে নিজেকে ডেলিভারি ম্যান পরিচয় দিয়ে ভ্যালেরিয়ার সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়েছিল। মেক্সিকান কর্তৃপক্ষ ধারণা করছে, ভ্যালেরিয়াকে সম্ভবত ভাড়াটে খুনিরা হত্যা করেছে।

ইনফ্লুয়েন্সারদের নিরাপত্তা এবং বিশেষ করে নারীদের প্রতি সহিংসতার এই ঘটনাগুলো বিশ্বজুড়ে গভীর উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। কলম্বিয়ার ‘মুজের দেনুনসিয়া ই মুয়েভেটে’ নামক একটি সংস্থার পরিচালক অ্যালেহান্দ্রা ভেরা এই প্রসঙ্গে বলেছেন, “কলম্বিয়ান রাষ্ট্র এই তরুণীর সুরক্ষায় ব্যর্থ হয়েছে।

বাংলাদেশেও নারীদের প্রতি সহিংসতা একটি গুরুতর সমস্যা। বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা এবং নারী অধিকার কর্মীরা এই বিষয়ে সোচ্চার রয়েছেন।

এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করতে, সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি এবং নারীদের জন্য উপযুক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা জরুরি। বিশিষ্ট নারী অধিকার কর্মী আয়েশা খানম এ প্রসঙ্গে বলেন, “নারীর প্রতি সহিংসতা একটি বৈশ্বিক সমস্যা, যা প্রতিরোধে আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। শুধু আইন প্রণয়নই যথেষ্ট নয়, প্রয়োজন সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন।

তথ্য সূত্র: পিপল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *