যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডোতে ইসরায়েলি জিম্মিদের সমর্থনে বিক্ষোভকারীদের উপর বোমা হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলার শুনানি চলছে। মঙ্গলবার (আজ) স্থানীয় সময়, কলোরাডোর আদালতে এই মামলার শুনানিতে অভিযুক্ত মোহাম্মদ সাবরি সোলিমানের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলোর প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়।
এই হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে সোলিমানের বিরুদ্ধে খুন, হত্যার চেষ্টা এবং বিদ্বেষমূলক অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে।
জানা যায়, গত ১লা জুন, কলোরাডোর একটি ব্যস্ততম স্থান পার্ল স্ট্রিট-এ ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির দাবিতে একটি বিক্ষোভ চলছিল। সেই সময় সোলিমান অন্তত দুটি বোমা ছুঁড়ে মারে।
ঘটনার সময় তিনি “ফিলিস্তিন মুক্তি পাক” বলে চিৎকার করছিলেন। পুলিশের কাছে তিনি স্বীকার করেছেন, তার পরিকল্পনা ছিল বিক্ষোভকারীদের হত্যা করার, তবে তিনি আগে কাউকে আঘাত করেননি বলে ভয় পেয়ে যান।
অভিযুক্ত মোহাম্মদ সাবরি সোলিমান একজন মিশরীয় নাগরিক। তিনি বর্তমানে অবৈধভাবে পরিবারসহ যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করতেন।
ফেডারেল কর্তৃপক্ষও এই বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে। কলোরাডার আদালতের এই শুনানির মূল উদ্দেশ্য ছিল, বিচারক ন্যান্সি উড্রোফ সালোমনের সামনে প্রমাণ উপস্থাপন করা এবং তা যাচাই করে দেখা, সোলিমানের বিরুদ্ধে অভিযোগের ভিত্তিতে বিচার শুরু করার মতো পর্যাপ্ত প্রমাণ আছে কিনা।
আদালতে উপস্থাপিত নথিপত্র অনুযায়ী, এই হামলায় ৮২ বছর বয়সী কারেন ডায়মন্ড নামের এক বৃদ্ধা গুরুতর আহত হন এবং পরে তার মৃত্যু হয়। এছাড়াও, এই হামলায় ১৩ জন গুরুতর আহত হন এবং আরও কয়েকজন সামান্য আহত হন।
এই ঘটনায় একটি কুকুরও আহত হয়েছিল। সরকারি কৌঁসুলিরা জানিয়েছেন, নিহত বৃদ্ধা কারেন ডায়মন্ড স্থানীয় সিনাগগে সাহায্য করতেন এবং বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী অ্যাটর্নি, লরা ক্রেমার-বেবিচ গত সপ্তাহে বিচারক জন এল. কেইনের কাছে জানান, ফেডারেল কৌঁসুলিরা ডায়মন্ডের মৃত্যুর সঙ্গে সম্পর্কিত অতিরিক্ত অভিযোগ সোলিমানের বিরুদ্ধে আনবেন কিনা, সে বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেননি।
ফেডারেল কৌঁসুলিরা বলছেন, ভুক্তভোগীদের ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক থাকার কারণে আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল। তবে, সোলিমানের আইনজীবীরা বলছেন, এই হামলা বিদ্বেষমূলক অপরাধ নয়, বরং জায়নবাদের (ইসরায়েলে একটি ইহুদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার রাজনৈতিক আন্দোলন) প্রতি তার বিরোধিতার ফল।
যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল আইন অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তির রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে সংঘটিত হামলাকে বিদ্বেষমূলক অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয় না। সোলিমান ইতিমধ্যে বিদ্বেষমূলক অপরাধের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
তবে, রাজ্যের অভিযোগের বিষয়ে তিনি এখনো কোনো জবাব দেননি।
আদালতের নথি অনুযায়ী, এই হামলায় মোট ২৯ জনকে ভুক্তভোগী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সোলিমানের আইনজীবীরা আদালতের কাছে শুনানি স্থগিত করার আবেদন করেছিলেন, কারণ তারা ডায়মন্ডের ময়না তদন্তের প্রতিবেদন পাননি এবং তারা আরও বিস্তারিত চিকিৎসা রেকর্ড পর্যালোচনা করতে চান।
তথ্য সূত্র: সিএনএন