নিউ ইয়র্কের কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে নিরাপত্তা রক্ষীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বুধবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে প্রবেশ করে বিক্ষোভকারীরা ফিলিস্তিনের পতাকা ও ব্যানার লাগানোর পাশাপাশি বিভিন্ন স্থানে শ্লোগান লিখে দেয়।
এর পরেই সেখানে পুলিশ মোতায়েন করা হয় এবং অনেক বিক্ষোভকারীকে আটক করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বিক্ষোভকারীরা লাইব্রেরিতে প্রবেশ করে কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই সেখানে অবস্থান নেয়। তারা কর্তৃপক্ষের পরিচয় জানতে চাওয়ার অনুরোধও প্রত্যাখ্যান করে।
এর পরেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে নিউ ইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্টকে (এনওয়াইপিডি) খবর দেয়।
সংঘর্ষের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইজন নিরাপত্তা কর্মী আহত হয়েছেন। বিক্ষোভকারীদের আটকের পর তাদের সমর্থনে লাইব্রেরির বাইরে জড়ো হন আরও অনেক ফিলিস্তিনপন্থী।
তারা আটককৃতদের মুক্তির দাবিতে শ্লোগান দিতে থাকে।
কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট ক্লিয়ার শিপম্যান এক বিবৃতিতে জানান, বিক্ষোভকারীরা পড়াশোনার পরিবেশ নষ্ট করেছে এবং চূড়ান্ত পরীক্ষার প্রস্তুতির সময়ে এই ধরনের আচরণ ‘জঘন্য’।
নিউ ইয়র্কের মেয়র এরিক অ্যাডামস জানান, যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘অনধিকার প্রবেশ’ করেছে, তাদের সরানোর জন্য পুলিশ সেখানে গিয়েছিল।
রাজ্যপাল ক্যাথি হচুল শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের অধিকারের কথা উল্লেখ করলেও, সহিংসতা, ভাঙচুর বা সম্পত্তির ক্ষতির তীব্র নিন্দা জানান।
এই বিক্ষোভের মধ্যেই জানা যায়, মার্কিন বিচার বিভাগ সম্প্রতি ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভের সময় সহিংসতার অভিযোগে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে ঘৃণা অপরাধের অভিযোগ এনেছে।
অভিযুক্ত তারেক বাজরুক এর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি এর আগে ফিলিস্তিনপন্থি বিভিন্ন বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন এবং সেখানে তিনি কয়েকজন ইহুদির ওপর হামলা চালান।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যেই বিক্ষোভের বিষয়ে কিছু নতুন নীতি ঘোষণা করেছে।
- এর মধ্যে রয়েছে, পরিচয় গোপন করতে মুখোশ পরা নিষিদ্ধ করা
- বিক্ষোভকারীদের আইডি কার্ড দেখানো বাধ্যতামূলক করা।
কর্তৃপক্ষের দাবি, এই পদক্ষেপগুলো তাদের ক্যাম্পাসকে আরও সুরক্ষিত করবে।
কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটি অ্যাপার্টহাইড ডিভেস্ট নামক একটি ফিলিস্তিনপন্থী ছাত্র সংগঠন, যারা এই বিক্ষোভের আয়োজন করে, তাদের মতে, বিশ্ববিদ্যালয়টি ‘সাম্রাজ্যবাদী সহিংসতা’ থেকে লাভবান হচ্ছে।
তারা আরও জানায়, দমন-পীড়ন প্রতিরোধের জন্ম দেয় এবং কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় যদি দমন-পীড়ন বাড়ায়, তবে বিক্ষোভকারীরা তাদের প্রতিবাদ অব্যাহত রাখবে।
আটককৃত তারেক বাজরুকের আইনজীবী জানিয়েছেন, তারা তাদের মক্কেলের পক্ষে আইনি লড়াই চালাবেন।
বিচারক বাজরুককে জামিনে মুক্তি দিতে রাজি হলেও, বৃহস্পতিবার ফেডারেল আদালতে শুনানির জন্য তাকে আটক রাখা হয়েছে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস