কমির বিচার: ট্রাম্পের প্রতিহিংসা, বাইডেনের নীরবতা! আসল সত্যি?

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ফেডারেল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই)-এর পরিচালক জেমস কোমির বিরুদ্ধে অভিযোগ এবং প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে জো বাইডেন প্রশাসনের পদক্ষেপের মধ্যেকার পার্থক্য নিয়ে বিতর্ক চলছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, উভয় ক্ষেত্রেই বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, তবে পরিস্থিতি বিবেচনায় তাদের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ কিছু পার্থক্য রয়েছে।

কোমির বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছে মূলত প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সরাসরি হস্তক্ষেপে।

ট্রাম্প প্রকাশ্যে কোমির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন এবং তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের অভিযুক্ত করার জন্য চাপ সৃষ্টি করেছিলেন। এমনকি তিনি এই অভিযোগগুলো দ্রুত করার জন্য কর্মকর্তাদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করেন।

এই ঘটনাটি বিচার বিভাগের স্বাভাবিক কার্যক্রমের পরিপন্থী ছিল, যেখানে কোনো প্রেসিডেন্টের বিচার প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করার কথা নয়, বিশেষ করে যখন রাজনৈতিক স্বার্থ জড়িত থাকে।

অন্যদিকে, বাইডেন প্রশাসনের আমলে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলোর ক্ষেত্রে এমনটা দেখা যায়নি।

যদিও বাইডেন কিছু ক্ষেত্রে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে চলমান তদন্ত নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন, যা বিচার বিভাগের কিছু নিয়মের লঙ্ঘন ছিল, তবে ট্রাম্পকে অভিযুক্ত করার সিদ্ধান্তের পেছনে তার সরাসরি ভূমিকা ছিল এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

বরং, ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো এনেছিল একজন বিশেষ কৌঁসুলি, যিনি বাইডেনের অ্যাটর্নি জেনারেলের থেকেও স্বাধীনভাবে কাজ করছিলেন।

এই দুই ঘটনার মূল পার্থক্য হলো, অভিযুক্ত করার প্রক্রিয়ায় প্রেসিডেন্টের সরাসরি হস্তক্ষেপের মাত্রা।

ট্রাম্প কোমির বিরুদ্ধে অভিযোগ আনার জন্য প্রকাশ্যে চাপ সৃষ্টি করেছিলেন এবং এর ফলস্বরূপ একজন সরকারি কৌঁসুলি পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিলেন।

অন্যদিকে, বাইডেন এমন কোনো পদক্ষেপ নেননি যা ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনতে সরাসরি প্রভাব ফেলেছে।

অভিযোগের বিষয়বস্তুর দিকে তাকালে দেখা যায়, কোমির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো মূলত মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া এবং কংগ্রেসের কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টির সঙ্গে সম্পর্কিত।

অন্যদিকে, ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলোর মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন গুরুতর বিষয়, যেমন – গোপনীয় নথি অবৈধভাবে নিজের কাছে রাখা, নির্বাচনে হস্তক্ষেপের চেষ্টা এবং ক্যাপিটলে হামলাকারীদের উস্কানি দেওয়া।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই দুটি ঘটনার তুলনা করলে বোঝা যায়, বাইডেন প্রশাসন তাদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনার ক্ষেত্রে আরও সতর্ক ছিল এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতাকে সমুন্নত রাখতে চেষ্টা করেছে।

তবে উভয় ক্ষেত্রেই বিচার বিভাগের স্বাধীনতা এবং রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যা নিশ্চিত করা জরুরি।

তথ্যসূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *