টেক্সাসের পার্বত্য অঞ্চলে অবস্থিত একটি শান্ত শহর কমফোর্ট। অস্টিনের প্রায় দুই ঘণ্টা দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত এই শহরের জনসংখ্যা দুই হাজারের কাছাকাছি।
উনিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে জার্মান মুক্তচিন্তাবিদদের একটি দল এখানে বসতি স্থাপন করে, যাদের মূল লক্ষ্য ছিল একটি শান্তিপূর্ণ ও আরামদায়ক জীবন যাপন করা।
ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট:
কমফোর্ট শহরটির নামকরণের পেছনে রয়েছে গভীর তাৎপর্য। জার্মান বিপ্লবের পর এই অঞ্চলের মুক্তচিন্তাবিদগণ এখানে এসে একত্রিত হন।
তারা ধর্মীয় ও রাজনৈতিক গোঁড়ামির পরিবর্তে যুক্তি ও গণতন্ত্রকে বেশি গুরুত্ব দিতেন। এই মুক্তচিন্তাবিদদের একটি দল দাসপ্রথা বিলোপের পক্ষে ছিলেন এবং তারা আমেরিকার প্রতি অনুগত ছিলেন।
এই কারণে গৃহযুদ্ধের সময় তাদের অনেককে জীবন দিতে হয়েছিল। তাদের উৎসর্গীকৃত ‘ট্রিউ ডের ইউনিয়ন মনুমেন্ট’ আজও তাদের স্মৃতি বহন করে।
ঐতিহ্য ও আকর্ষণ:
একসময় এই এলাকাটি পশমের ব্যবসার জন্য পরিচিত ছিল। পরবর্তীতে কৃষি ও বাইরের নানা ধরনের বিনোদন এখানকার অর্থনীতির উন্নতিতে সাহায্য করেছে।
বর্তমানে, কমফোর্ট একটি জাতীয় ঐতিহাসিক স্থান হিসেবে স্বীকৃত। এখানে উনিশ শতকের অনেক পুরনো ভবন এখনো বিদ্যমান, যা শহরটিকে বিশেষ মর্যাদা এনে দিয়েছে।
কমফোর্টে যা দেখবেন ও করবেন:
শহরের কেন্দ্রস্থলে পায়ে হেঁটে ঘুরে কেনাকাটা করতে পারেন। এখানে বুটিক, ওয়াইনারি, আর্ট গ্যালারি এবং মৃৎশিল্পের স্টুডিওতে আপনার অবসর সময় কাটাতে পারেন।
- বেন্ডিং ব্রাঞ্চ ওয়াইনারি: এখানে পুরনো দিনের কৌশল ও আধুনিক প্রযুক্তির সমন্বয়ে ওয়াইন তৈরি করা হয়।
- ফ্রি থিঙ্কার্স জেনারেল স্টোর: এই দোকানে পোশাক, গয়না, ব্যাগ, জুতা, মোমবাতি, গেম এবং নোটবুক-এর মতো নানান জিনিস পাওয়া যায়।
- দেবজির ভিনটেজ: এখানে প্রাচীন আসবাবপত্র, সিরামিক ও অন্যান্য সংগ্রহযোগ্য জিনিস পাওয়া যায়।
- ৮ম স্ট্রিট মার্কেট: এই বাজারে বিভিন্ন ধরনের ভিনটেজ জিনিস পাওয়া যায়, যা আপনার ঘর সাজাতে কাজে লাগবে।
- সিয়োভেইন অ্যান্ডার্সের দোকান: এখানে উপহার সামগ্রী, যেমন – আলপাকা থেকে তৈরি বিভিন্ন খেলনা, গরুর চামড়ার কার্পেট এবং আরও অনেক কিছু পাওয়া যায়।
- হিল কান্ট্রি পটারি: এই আর্ট গ্যালারিতে বিভিন্ন ধরনের আধুনিক শিল্পকর্ম প্রদর্শিত হয়।
- হাইস ক্যাফে ও স্টোর: এখানে স্বাস্থ্যকর খাবার পাওয়া যায়, যেমন – সালাদ, স্যান্ডউইচ এবং স্যুপ।
- কমফোর্ট কফি কোং: এখানে কফি, চা, প্রাতরাশের বিভিন্ন পদ এবং দুপুরের খাবার পাওয়া যায়।
- কমফোর্ট পিৎজা: এখানে কাঠের আগুনে তৈরি পিৎজা, বিয়ার ও অন্যান্য মুখরোচক খাবার উপভোগ করা যায়।
কোথায় থাকবেন:
- হোটেল জাইলস: ১৪০ বছরের বেশি সময় ধরে এই হোটেলটি পর্যটকদের স্বাগত জানাচ্ছে।
- ক্যাম্প কমফোর্ট: এখানে আধুনিক সব সুবিধা সহ বিভিন্ন ধরনের কক্ষ, কেবিন ও এয়ারস্ট্রিম ক্যাম্পার-এর ব্যবস্থা রয়েছে।
কমফোর্ট শহরটি তার শান্ত ও মনোরম পরিবেশের জন্য পরিচিত। যারা শহরের কোলাহল থেকে দূরে কিছু সময় কাটাতে চান, তাদের জন্য এই স্থানটি আদর্শ।
তথ্য সূত্র: ট্রাভেল অ্যান্ড লেজার