কমনওয়েলথ কি দাসত্বের ক্ষতিপূরণ নিয়ে আলোচনায় নেতৃত্ব দেবে?
কমনওয়েলথ, যা একসময় ঔপনিবেশিক শাসনের স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে দেখা হতো, সেই সংগঠনের কি এখন দাসত্বের কারণে হওয়া ক্ষতিপূরণ নিয়ে আলোচনা শুরু করা উচিত? এমন প্রশ্ন এখন বিশেষভাবে প্রাসঙ্গিক। অতীতের অনেক অন্যায় আজও বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের ওপর গভীর প্রভাব ফেলে চলেছে।
এই প্রেক্ষাপটে, কমনওয়েলথ-এর সদস্য দেশগুলোর মধ্যে ঐতিহাসিক এই অন্যায়গুলো নিয়ে আলোচনা শুরু করার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর অনেক দেশ স্বাধীনতা লাভ করে। সেই সময়ে, কমনওয়েলথ-এর ধারণা ছিল বিভিন্ন দেশের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধি করা এবং বাণিজ্য সহজ করা। বর্তমানে, এই সংগঠনটিকে নতুন করে প্রাসঙ্গিকতা প্রমাণ করতে হবে।
এর জন্য, অতীতে সংঘটিত হওয়া দাসত্বের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা জরুরি।
আফ্রিকা থেকে ক্রীতদাসদের ধরে নিয়ে যাওয়ার ফলে সেখানকার মানুষের জীবনে যে ক্ষতি হয়েছিল, তা আজও বিদ্যমান। এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত দেশগুলোকে তাদের অতীতের ভুলগুলো স্বীকার করতে হবে এবং ক্ষতিপূরণের বিষয়ে আলোচনা করতে হবে।
এই ক্ষতিপূরণ হতে পারে বিভিন্ন ধরনের—যেমন অবকাঠামো তৈরি, ঋণ মওকুফ করা, অথবা যৌথ উদ্যোগে বিনিয়োগ করা।
বিষয়টি জটিল এবং বিতর্কিত, কারণ ক্ষতিপূরণ কাদের দেওয়া হবে, কত দেওয়া হবে, এবং কীভাবে দেওয়া হবে—এসব প্রশ্নের উত্তর সহজে পাওয়া যায় না। তবে, অতীতের ভুলগুলো স্বীকার করে, আলোচনা শুরু করাটাই গুরুত্বপূর্ণ।
কমনওয়েলথ-এর মাধ্যমে এই আলোচনা শুরু হলে, বিভিন্ন দেশের মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়া বাড়বে এবং ভবিষ্যতে একসঙ্গে কাজ করার পথ সুগম হবে।
আফ্রিকা মহাদেশে অর্থনৈতিক সম্ভাবনা অনেক। এখানকার বাজার দ্রুত বাড়ছে, এবং ২০৫০ সাল নাগাদ বিশ্বের কর্মক্ষম জনসংখ্যার একটি বড় অংশ এখানে বসবাস করবে।
আফ্রিকার দেশগুলোতে খনিজ সম্পদও প্রচুর পরিমাণে রয়েছে, যা ভবিষ্যতের অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। অতীতের ভুলগুলো শুধরে নিয়ে যদি এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো যায়, তবে তা সবার জন্যই লাভজনক হবে।
অতএব, কমনওয়েলথ-এর উচিত হবে এই গুরুত্বপূর্ণ আলোচনায় নেতৃত্ব দেওয়া। এর মাধ্যমে, এটি শুধু অতীতের ভুলগুলোকেই স্বীকার করবে না, বরং ভবিষ্যতের জন্য একটি ভালো দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা