গোপন কনক্লেভ: কিভাবে নির্বাচিত হন নতুন পোপ?

বিশ্বের ক্যাথলিক সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মগুরু পোপ নির্বাচনের প্রক্রিয়াটি বেশ গোপনীয়তার সঙ্গে সম্পন্ন হয়। এই বিশেষ প্রক্রিয়াটি ‘কনক্লেভ’ নামে পরিচিত, যার অর্থ লাতিন ভাষায় ‘চাবি সহ’।

প্রাচীনকালে কার্ডিনালরা নতুন পোপ নির্বাচনের জন্য একত্রিত হয়ে তালাবদ্ধ থাকতেন, এই কারণেই এই নামের উৎপত্তি। মধ্যযুগে শুরু হওয়া এই প্রক্রিয়াটি সময়ের সাথে সাথে বিভিন্ন পোপের মাধ্যমে সংস্কার করা হয়েছে।

পোপ নির্বাচনের জন্য কার্ডিনালদের একটি বিশেষ অধিবেশনে মিলিত হতে হয়। এই অধিবেশনটি অনুষ্ঠিত হয় ভ্যাটিকানের সিস্টিন চ্যাপেলে। আধুনিক কনক্লেভের মূল নিয়মকানুন তৈরি হয় পোপ দ্বিতীয় জন পলের সময়, ১৯৯৬ সালে প্রকাশিত ‘ইউনিভার্সি ডোমিনিচি গ্রিগিস’ নামক একটি নির্দেশিকার মাধ্যমে।

পরবর্তীকালে, ষোড়শ বেনেডিক্টও এতে কিছু পরিবর্তন আনেন।

নতুন পোপ নির্বাচনের জন্য, কার্ডিনালদের গোপন ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দিতে হয়। নির্বাচিত হতে হলে, দুই-তৃতীয়াংশ ভোটের প্রয়োজন হয়।

এই কনক্লেভের সময় অনেক বিষয় গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। বর্তমান পোপ ফ্রান্সিসের সংস্কারমূলক কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হবে নাকি পরিবর্তন আনা হবে, সেই বিষয়েও আলোচনা হয়।

সংস্কারপন্থীরা চান বর্তমান ধারা বজায় থাকুক, অন্যদিকে রক্ষণশীলরা চান ধীরে চলো নীতি অনুসরণ করতে।

কনক্লেভের সময় কিছু বিশেষ রীতি-নীতি পালন করা হয়। এর মধ্যে অন্যতম হল, শপথ গ্রহণ এবং ভোট দেওয়ার প্রক্রিয়া।

ভোটের ফল ঘোষণার জন্য সাদা ধোঁয়া ব্যবহার করা হয়, যা নতুন পোপ নির্বাচিত হওয়ার সংকেত দেয়।

নতুন পোপ নির্বাচিত হওয়ার পর, তিনি সেন্ট পিটার্স বাসিলিকা থেকে ‘উরবি এট ওরবি’ বা ‘শহর ও বিশ্বের প্রতি’ প্রথম আশীর্বাদ দেন।

এই গুরুত্বপূর্ণ কনক্লেভ প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই ক্যাথলিক চার্চের নতুন প্রধান নির্বাচিত হন। এরপর নতুন পোপের অভিষেক অনুষ্ঠিত হয়, যা সাধারণত সেন্ট পিটার্স বাসিলিকায় হয়ে থাকে।

এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তিনি ক্যাথলিক চার্চের প্রধান হিসেবে তাঁর দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

তথ্য সূত্র: বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *