পোপ নির্বাচনের ছবি: ‘কনক্লেভ’ কতটা বাস্তব?

“কনক্লেভ” : পোপ নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে এক নতুন চলচ্চিত্র। সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া “কনক্লেভ” চলচ্চিত্রটি বিশ্বজুড়ে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

ছবিটিতে পোপ নির্বাচনের জটিল প্রক্রিয়া এবং এর ভেতরের রাজনীতি অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। পরিচালক এডওয়ার্ড বার্গার-এর পরিচালনায় রালফ ফাইনেস, স্ট্যানলি টুচ্চি, ইসাবেলা রসেলিনি এবং জন লিথগো-এর মতো খ্যাতনামা অভিনেতাদের অভিনয় ছবিটিকে দিয়েছে ভিন্ন মাত্রা।

ছবিটি মূলত ব্রিটিশ ঔপন্যাসিক রবার্ট হ্যারিসের ২০১৬ সালের একটি থ্রিলার অবলম্বনে নির্মিত। যেখানে ভ্যাটিকানের অভ্যন্তরের ক্ষমতা, ধর্মীয় বিশ্বাস এবং উচ্চাকাঙ্ক্ষার এক মিশ্র চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।

“কনক্লেভ” -এ দেখা যায়, কীভাবে কার্ডিনালরা নতুন পোপ নির্বাচনের জন্য একত্রিত হন এবং তাদের মধ্যে চলে নানা আলোচনা ও দর কষাকষি। নির্বাচনে কে প্রার্থী হবেন, তা নিয়ে চলে গোপনীয়তা রক্ষার এক কঠিন লড়াই।

ছবিটি মুক্তি পাওয়ার পর ক্যাথলিক চার্চের কিছু সদস্যের মধ্যে সমালোচনা দেখা গেছে। অনেকেই মনে করেন, ছবিতে চার্চের শীর্ষ কর্মকর্তাদের উচ্চাকাঙ্ক্ষা, দুর্নীতি এবং ক্ষমতার লোভকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

তবে, সমালোচকদের বাইরে অনেকে এই সিনেমাটিকে পোপ নির্বাচনের বাস্তব চিত্র হিসেবে দেখছেন। তাদের মতে, ছবিতে পোপ নির্বাচনের সময় কার্ডিনালদের মধ্যেকার জোট গঠন এবং চার্চের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনার বিষয়টি বেশ ভালোভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।

সাধারণত, পোপ নির্বাচনের প্রক্রিয়া অত্যন্ত গোপনীয়তার সঙ্গে সম্পন্ন হয়। এই প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণকারীরা বাইরের কারও সঙ্গে কোনো প্রকার যোগাযোগ করতে পারেন না।

এমনকি তারা গণমাধ্যম বা অন্য কোনো উৎস থেকেও কোনো খবর গ্রহণ করতে পারেন না। এই গোপনীয়তা রক্ষার বিষয়টি “কনক্লেভ” ছবিতে খুব ভালোভাবে তুলে ধরা হয়েছে।

নির্বাচনের সময়, ৮০ বছরের কম বয়সী কার্ডিনালরা ভোট দেন। তারা সিস্টিন চ্যাপেলে মিলিত হন এবং ভোটের মাধ্যমে নতুন পোপ নির্বাচন করেন।

ভোটের ফল ঘোষণার পর, সিস্টিন চ্যাপেলের চিমনির উপর সাদা ধোঁয়া উঠানো হয়, যা নতুন পোপ নির্বাচিত হওয়ার ঘোষণা দেয়।

“কনক্লেভ” চলচ্চিত্রটি বাস্তবসম্মত করার জন্য অনেক চেষ্টা করা হয়েছে। সিনেমার নির্মাতারা সিস্টিন চ্যাপেলের অভ্যন্তরে চিত্রগ্রহণের অনুমতি পেয়েছিলেন।

তাছাড়া, কার্ডিনালদের পোশাক, তাদের জীবনযাত্রা এবং নির্বাচনের ভেতরের নানা খুঁটিনাটি বিষয়গুলো ছবিতে তুলে ধরা হয়েছে।

তবে, কিছু ক্ষেত্রে ছবির নির্মাতারা সামান্য ভুল করেছেন। যেমন, সিস্টিন চ্যাপেলের ভেতরের সজ্জা এবং কার্ডিনালদের একে অপরের সঙ্গে কথা বলার ধরনে কিছু পার্থক্য দেখা যায়।

সমালোচকদের মতে, ছবির শেষাংশের ঘটনাপ্রবাহ কিছুটা অপ্রত্যাশিত ও বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছে।

বিশ্লেষকদের মতে, “কনক্লেভ” শুধুমাত্র পোপ নির্বাচনের প্রক্রিয়া নিয়ে তৈরি একটি চলচ্চিত্র নয়। এটি একজন কার্ডিনালের বিশ্বাস এবং আত্ম-অনুসন্ধানের গল্পও বটে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *