কঙ্গোতে বন্যা: ১০০ জনের বেশি নিহত!

প্রবল বর্ষণে কঙ্গো প্রজাতন্ত্রে ভয়াবহ বন্যা, নিহত শতাধিক।

পূর্ব আফ্রিকার দেশ কঙ্গো প্রজাতন্ত্রে (Democratic Republic of Congo) ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে সৃষ্ট বন্যায় একশ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

দেশটির দক্ষিণ কিভু প্রদেশের একটি গ্রামে এই ভয়াবহ বিপর্যয় ঘটে, যেখানে ইতোমধ্যেই যুদ্ধ এবং বাস্তুচ্যুতির কারণে মানবিক সংকট চলছে।

স্থানীয় কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলো জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতের প্রবল বৃষ্টিপাতের ফলে কাসাবা গ্রামটি জলের তোড়ে ভেসে যায়।

শুক্রবার সকালে জানা যায়, কাসাবা নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করে লোকালয়ে প্রবেশ করে।

এর ফলে ঘরবাড়িগুলো জলমগ্ন হয়ে যায় এবং পানির স্রোতে সবকিছু ভেসে যায়।

কাসাবা গ্রামের আঞ্চলিক কর্মকর্তা বার্নার্ড আকিলি জানান, নিহতদের মধ্যে বেশিরভাগই শিশু ও বৃদ্ধ।

বন্যায় আহত হয়েছেন ২৮ জন এবং প্রায় ১৫০টি বাড়ি সম্পূর্ণভাবে বিধ্বস্ত হয়েছে।

দক্ষিণ কিভুর আঞ্চলিক প্রশাসক স্যামি কালোনজি জানিয়েছেন, বন্যায় অন্তত ১০৪ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছে এবং ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

প্রদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী থিওফাইল ওয়ালুলিকা মুজালিওয়া জানিয়েছেন, উদ্ধার কাজ ব্যাহত হচ্ছে কারণ যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে এবং জরুরি পরিষেবাগুলোও স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে পারছে না।

বর্তমানে শুধু রেড ক্রস-এর কর্মীরা সেখানে উদ্ধার কাজে সহায়তা করছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শনিবার পর্যন্ত প্রায় ১১৯ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

কঙ্গো প্রজাতন্ত্রে এই ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ নতুন নয়।

দেশটির পূর্বাঞ্চলে প্রায়ই বন্যা দেখা যায়, বিশেষ করে গ্রেট লেক অঞ্চলের কাছাকাছি এলাকাগুলোতে।

এর প্রধান কারণ হলো বনভূমি ধ্বংসের কারণে পাহাড়গুলো দুর্বল হয়ে পড়েছে।

গত বছর দক্ষিণ কিভু প্রদেশের কিভু লেকের কাছাকাছি এলাকায় বন্যায় প্রায় ৪০০ জনের মৃত্যু হয়েছিল।

এছাড়া, গত মাসেই দেশটির রাজধানী কিনশাসাতে বন্যায় ৩৩ জন নিহত হয়।

কঙ্গো প্রজাতন্ত্রে দশকের পর দশক ধরে সরকারি বাহিনী ও বিদ্রোহীদের মধ্যে সংঘর্ষ চলছে।

সম্প্রতি রুয়ান্ডা সমর্থিত এম২৩ বিদ্রোহী গোষ্ঠী উত্তর কিভু রাজ্যের রাজধানী গোমা দখল করে নেয়, যার ফলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে।

এই ঘটনায় প্রায় ৩,০০০ মানুষ নিহত এবং ২,৮৮০ জন আহত হয়েছে।

এছাড়া, বাস্তুচ্যুত হয়েছে আরও কয়েক লক্ষ মানুষ।

সবমিলিয়ে এটি বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ মানবিক সংকট হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *