যুক্তরাষ্ট্রের সরকারে অচলাবস্থা? সমঝোতায় পৌঁছাতে ব্যর্থ হওয়ায় বন্ধ হওয়ার পথে কার্যক্রম।
যুক্তরাষ্ট্রে সরকারের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়ার গুরুতর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকানদের মধ্যে বাজেট নিয়ে তীব্র মতবিরোধ দেখা দেওয়ায় এমনটা হতে চলেছে। সময়সীমা প্রায় শেষ, কিন্তু এখনো পর্যন্ত কোনো সমাধান সূত্র মেলেনি।
মূল সমস্যা হল স্বাস্থ্যখাতে ভর্তুকি এবং স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ক আইন, যা ‘অ্যাফোর্ডেবল কেয়ার অ্যাক্ট’ বা ওবামাকেয়ার নামে পরিচিত, তা নিয়ে দুই দলের মধ্যে তীব্র মতপার্থক্য রয়েছে। রিপাবলিকানরা চাচ্ছেন ভর্তুকি বিষয়ক আলোচনায় কোনো পরিবর্তন না আনতে, অন্যদিকে ডেমোক্র্যাটরা তাদের দাবি থেকে সরতে নারাজ। এছাড়াও, সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে হওয়া কিছু স্বাস্থ্য বিষয়ক সংস্কার নিয়েও তাদের মধ্যে দ্বিমত রয়েছে।
আলোচনা ফলপ্রসূ করতে হোয়াইট হাউসে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সহ শীর্ষস্থানীয় নেতাদের একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু সেই বৈঠক থেকেও কোনো সমাধান আসেনি। সিনেটে রিপাবলিকান নেতারা একটি প্রস্তাব পেশ করেছেন, যেখানে সরকারের কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার জন্য স্বল্পকালীন একটি বাজেট অনুমোদনের কথা বলা হয়েছে। তবে ডেমোক্র্যাটরা এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। তাদের দাবি, স্বাস্থ্যখাত বিষয়ক বিষয়গুলো সমাধানে সুস্পষ্ট নিশ্চয়তা থাকতে হবে।
উভয় দলই একে অপরের উপর দোষারোপ করছে। রিপাবলিকানদের অভিযোগ, ডেমোক্র্যাটরা তাদের দাবি আদায়ের জন্য সরকারের স্বাভাবিক কার্যক্রমকে জিম্মি করে রেখেছে। অন্যদিকে ডেমোক্র্যাটরা বলছেন, রিপাবলিকানরা স্বাস্থ্যখাতের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো এড়িয়ে যাচ্ছেন।
সরকারের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেলে এর সরাসরি প্রভাব পড়বে সরকারি কর্মীদের উপর। অনেক কর্মীকে সাময়িকভাবে চাকরি হারাতে হতে পারে। এছাড়াও, জরুরি পরিষেবাগুলোতেও দেখা দিতে পারে অচলাবস্থা। এমন পরিস্থিতিতে জনজীবনে নেমে আসতে পারে চরম দুর্ভোগ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অচলাবস্থা দীর্ঘ সময় ধরে চললে তা দেশের অর্থনীতিতে মারাত্মক প্রভাব ফেলবে। বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের কাজ বন্ধ হয়ে যাবে, যা সামগ্রিক উন্নয়নে বাধা সৃষ্টি করবে।
বর্তমানে, সিনেটে রিপাবলিকান নেতারা তাদের প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটি চালিয়ে যাচ্ছেন। তারা আশা করছেন, ডেমোক্র্যাটরা শেষ পর্যন্ত তাদের অবস্থানে নমনীয় হবেন। তবে পরিস্থিতি এখনো অনিশ্চিত। সমঝোতা না হলে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে আবারও একটি ‘শাটডাউন’ বা সরকারি কার্যক্রম বন্ধের ঘটনা ঘটবে।
এই প্রতিবেদনটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে লেখা হয়েছে।