মার্কিন কংগ্রেসে উত্তেজনার আবহ, আসন্ন অধিবেশনগুলোতে গুরুত্বপূর্ণ বিতর্কের সম্ভাবনা।
যুক্তরাষ্ট্রের আইনসভা, কংগ্রেস, আসন্ন অধিবেশনগুলোর জন্য প্রস্তুত হচ্ছে, যেখানে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে তীব্র বিতর্ক হতে পারে। সরকারের অর্থ বরাদ্দ, জেফরি এপস্টাইনের সঙ্গে সম্পর্কিত নথি প্রকাশ এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পুলিশি ব্যবস্থা—এসব বিষয় এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে।
আগামী ৩০শে সেপ্টেম্বরের মধ্যে সরকারের অর্থ বরাদ্দের সময়সীমা রয়েছে। এই সময়সীমা পার হওয়ার আগেই ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকানদের মধ্যে সমঝোতা হওয়া জরুরি। তবে ডেমোক্র্যাটরা এরই মধ্যে ট্রাম্প প্রশাসনের ক্ষমতার ওপর আরও বেশি নিয়ন্ত্রণ এবং প্রেসিডেন্টের কিছু নীতির পরিবর্তনের দাবি জানাচ্ছেন। অন্যদিকে, হোয়াইট হাউস থেকে জানানো হয়েছে, তারা কোনো ছাড় দিতে রাজি নয়। ফলে, অচলাবস্থা সৃষ্টির সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে।
আলোচনার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল কুখ্যাত ফাইনান্সার জেফরি এপস্টাইনের সঙ্গে সম্পর্কিত গোপন নথি প্রকাশ করা। এই ইস্যুতে রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা যাচ্ছে। ডেমোক্র্যাট প্রতিনিধি থমাস ম্যাসি এবং রো খান্না ইতিমধ্যে এই বিষয়ে তাদের সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করছেন। তারা বিশ্বাস করেন, এই নথি প্রকাশ পেলে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সামনে আসবে।
সিনেটে ট্রাম্পের নেওয়া কিছু সিদ্ধান্তের কারণেও আলোচনা-সমালোচনা চলছে। সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ফেডারেল রিজার্ভের গভর্নর লিসা কুককে বরখাস্ত করার পর বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। ডেমোক্র্যাটরা এই পদক্ষেপকে ক্ষমতার অপব্যবহার হিসেবে দেখছেন। এছাড়াও, ট্রাম্প প্রশাসনের বিভিন্ন নিয়োগ নিয়েও সিনেটে আলোচনা হতে পারে।
সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আগামী সেপ্টেম্বরে কংগ্রেসের আলোচ্যসূচিতে আরও কিছু বিষয় যুক্ত করেছেন। তিনি একটি বড় ধরনের অপরাধ বিষয়ক প্যাকেজ নিয়ে কাজ করছেন, যা রাজনৈতিক বিতর্ক আরও বাড়াতে পারে। এছাড়াও, রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের সময়সীমা বাড়ানোর বিষয়েও ভোট হতে পারে।
সরকারের অর্থ বরাদ্দ নিয়ে ডেমোক্র্যাটরা ট্রাম্পের সঙ্গে লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। হোয়াইট হাউস প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলারের বিদেশি সাহায্য বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা কংগ্রেসের ক্ষমতাকে খর্ব করার শামিল। ডেমোক্র্যাট নেতারা এই পদক্ষেপকে ‘বেআইনি’ এবং ‘ক্ষমতা দখলের চেষ্টা’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতারা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়েও আলোচনা করবেন। রিপাবলিকান সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম রাশিয়ার ওপর আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য ট্রাম্প প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি মনে করেন, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে আলোচনার টেবিলে আনতে রাজি করাতে হবে।
কংগ্রেসের এই অধিবেশনগুলোতে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের সম্ভাবনা রয়েছে, যা আন্তর্জাতিক সম্পর্ক এবং অভ্যন্তরীণ নীতিতে প্রভাব ফেলতে পারে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন