নির্বাচন: যুক্তরাষ্ট্রের আসন পরিবর্তনে ডেমোক্র্যাটদের জয়, এরপর কী?

যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন ২০২৬ সালের মধ্যবর্তী নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে নির্বাচনী এলাকার সীমানা পুনর্নির্ধারণ (Redistricting – নির্বাচনী এলাকা পুনর্গঠন) নিয়ে চলছে জোর তৎপরতা। ডেমোক্রেট ও রিপাবলিকান উভয় দলই চাইছে নিজেদের সুবিধামতো নির্বাচনী এলাকার বিন্যাস ঘটাতে, যা তাদের দলগুলোর জন্য প্রতিনিধি পরিষদে আসন সংখ্যা বাড়াতে সহায়ক হবে।

খবর অনুযায়ী, ক্যালিফোর্নিয়ার ভোটাররা একটি নতুন কংগ্রেসনাল ম্যাপ অনুমোদন করেছেন, যা ডেমোক্রেটদের জন্য সুবিধা নিয়ে আসবে। অন্যদিকে, টেক্সাস রাজ্যে এরই মধ্যে রিপাবলিকানদের অনুকূলে একটি মানচিত্র গৃহীত হয়েছে।

এই পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, উভয় দলই তাদের রাজনৈতিক ক্ষমতা ধরে রাখতে এবং বাড়াতে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করছে। ক্যালিফোর্নিয়ার এই পদক্ষেপ অনেকটা টেক্সাসের সিদ্ধান্তের বিপরীতে গেছে।

এমন পরিস্থিতিতে উভয় রাজ্যের ফলাফল একে অপরের অর্জনকে হয়তো বাতিল করে দেবে। তবে, মিসৌরি, নর্থ ক্যারোলিনা এবং ওহাইও-এর মতো রাজ্যগুলোতে এরই মধ্যে রিপাবলিকানদের অনুকূলে মানচিত্র গৃহীত হয়েছে। এছাড়া, ইন্ডিয়ানা এবং কানসাসেও একই ধরনের পদক্ষেপের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই নির্বাচনী এলাকার বিন্যাস পরিবর্তনের ফলে প্রতিনিধি পরিষদের নিয়ন্ত্রণ কার হাতে থাকবে, তা অনেকখানি নির্ভর করছে। উদাহরণস্বরূপ, ভার্জিনিয়া রাজ্যের ডেমোক্রেটরাও তাদের রাজ্যে নির্বাচনী এলাকার পুনর্বিন্যাসের চেষ্টা করছেন।

এই ধরনের পরিবর্তনগুলো ২০২৬ সালের নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক ইতিহাসে দেখা যায়, সাধারণত প্রেসিডেন্ট যে দলের, মধ্যবর্তী নির্বাচনে সেই দল প্রায় ৩০টির বেশি আসন হারায়। তবে, এবারের পরিস্থিতি ভিন্ন হতে পারে।

বর্তমানে রিপাবলিকানদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা খুবই সামান্য। যদি দলগুলোর মধ্যে আসন ভাগাভাগির এমন পরিবর্তন হয়, তবে তা নির্বাচনে বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে। বোস্টন কলেজের অধ্যাপক ডেভিড হপকিন্স-এর মতে, “ডেমোক্রেটিক সংখ্যাগরিষ্ঠতা এবং রিপাবলিকান সংখ্যাগরিষ্ঠতার মধ্যে ব্যবধান খুবই সামান্য হওয়ায়, একটি রাজ্যের নির্বাচনী এলাকা পুনর্গঠনের সিদ্ধান্তও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”

এই নির্বাচনী এলাকার সীমানা পরিবর্তনের লড়াই ২০২৬ সালের নির্বাচনের পরই থেমে যাবে না। রিপাবলিকান স্টেট লিডারশিপ কমিটি (Republican State Leadership Committee – আরএসএলসি)-এর মতে, এখন থেকে প্রতি নির্বাচনের আগেই এই ধরনের লড়াই চলবে।

নিউইয়র্কের ডেমোক্রেটরা ২০২৮ সালের নির্বাচনের আগে নির্বাচনী এলাকা পুনর্গঠনের জন্য একটি সাংবিধানিক সংশোধনী প্রস্তাব করছেন। এছাড়া, যে রাজ্যগুলোতে সরকার বিভক্ত, সেখানেও আগামী নির্বাচনে ক্ষমতার পালাবদলের পর এমন পদক্ষেপ দেখা যেতে পারে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, ২০২৭ সালের পুনর্গঠন এবং ২০২৮ সালের মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের নির্বাচনের জন্য এরই মধ্যে প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে। ক্ষমতার এই লড়াইয়ে কে জয়ী হবে, তা সময়ই বলবে।

তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *