ঘরের ভয়াবহ চিত্র: সৎ মায়ের বন্দীত্ব থেকে মুক্তি পাওয়া যুবকের কাহিনী!

ওয়াটারবেরি, কানেকটিকাট থেকে একটি মর্মান্তিক খবর পাওয়া গেছে। এখানে, এক ব্যক্তির প্রতি নিষ্ঠুরতার চূড়ান্ত দৃষ্টান্ত স্থাপন করে, তার সৎ মা তাকে ২০ বছর ধরে একটি বাড়িতে বন্দী করে রেখেছিলেন।

সম্প্রতি, আগুনে ঘরটি পুড়ে যাওয়ার পরে তিনি মুক্তি পান।

পুলিশ সম্প্রতি সেই বাড়ির ছবি প্রকাশ করেছে, যা বন্দী জীবনের ভয়াবহতা প্রকাশ করে। ছবিগুলোতে দেখা যায়, ঘরটির অবস্থা অত্যন্ত করুণ – ভাঙা মেঝে, দেয়ালের পলেস্তারা খসে পড়া, এবং আবর্জনা ও ধুলোবালি জমে আছে।

জানা গেছে, ওই ব্যক্তি খুবই দুর্বল হয়ে পড়েছিলেন। তার বয়স এখন ৩২ বছর, উচ্চতা ৫ ফুট ৯ ইঞ্চি, এবং ওজন ছিল মাত্র ৭০ পাউন্ড।

অভিযোগ উঠেছে, ওই ব্যক্তির সৎ মা, কিম্বার্লি সুলিভান, তাকে দীর্ঘদিন ধরে বন্দী করে রেখেছিলেন এবং পর্যাপ্ত খাবার ও জল দেননি। ফেব্রুয়ারি মাসে, তিনি প্রিন্টার পেপার এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে আগুন ধরিয়ে ঘর থেকে পালাতে সক্ষম হন।

ভুক্তভোগী ব্যক্তি পুলিশকে জানিয়েছেন, তাকে একটি ছোট কক্ষে আটকে রাখা হতো, যা প্লাইউড এবং তালা দিয়ে সুরক্ষিত ছিল। তিনি আরও জানান, একসময় তিনি চতুর্থ শ্রেণীতে পড়ার সময় তার খারাপ অবস্থার কথা জানিয়েছিলেন, কিন্তু তার সৎ মা তাকে স্কুল থেকে ছাড়িয়ে নেন এবং সব ঠিক আছে বলতে বাধ্য করেন।

কিম্বার্লি সুলিভানের বিরুদ্ধে অপহরণ ও গুরুতর আঘাতের অভিযোগ আনা হয়েছে। যদিও তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন এবং বর্তমানে তিনি জামিনে মুক্ত রয়েছেন। তার আইনজীবী বলেছেন, “অভিযোগগুলো যতই ভয়াবহ হোক না কেন, আইনের চোখে তিনি এখনো দোষী সাব্যস্ত হননি।”

এদিকে, ওয়াটারবেরি শহরের মেয়র পল কে. পেরেনেস্কি জানিয়েছেন, “আমরা তাকে এই অকল্পনীয় ট্রমা থেকে সেরে উঠতে সব ধরনের সহায়তা দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।” স্থানীয় পুলিশ এবং অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তারাও তাকে সাহায্য করছেন।

ওয়াটারবেরি শহরের শিশু ও পরিবার বিভাগ (ডিপার্টমেন্ট অফ চিলড্রেন অ্যান্ড ফ্যামিলিজ) তাদের পুরোনো রেকর্ড খুঁজে পেয়েছে, যেখানে ২০০৫ সালে কিম্বার্লি সুলিভান এবং তার সৎ ছেলের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তারা ঘটনার তদন্ত করছে এবং স্বচ্ছতার সঙ্গে তাদের ফলাফল জানানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

এই ঘটনার পর, সমাজের মানুষজন হতবাক এবং ক্ষুব্ধ। সবাই মিলে ওই ব্যক্তির সুস্থ জীবনে ফিরিয়ে আসার জন্য প্রার্থনা করছেন।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *