১১ বছরের কিশোরীর ঘৃণামূলক অপরাধ! মুসলিম ছাত্রীদের উপর বর্বর হামলা, দেশজুড়ে নিন্দা

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কানেকটিকাট অঙ্গরাজ্যের একটি স্কুলে দুই মুসলিম ছাত্রীর উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ১২ বছর বয়সী এক কিশোরীকে ঘৃণা অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

শুক্রবার স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এই তথ্য জানিয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওয়াটারবেরির একটি মিডল স্কুলে দুই ছাত্রী, যারা সম্পর্কে যমজ বোন, তাদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। তাদের হিজাব টেনে ছিঁড়ে ফেলা হয় এবং মারধর করা হয়।

হামলার শিকার হওয়া দুই ছাত্রীর বয়স ১৩ বছর। ঘটনার তদন্তের পর, কর্তৃপক্ষের ধারণা, এই হামলার পেছনে ধর্ম বা জাতিগত বিদ্বেষ কাজ করেছে, যা একটি ‘হেইট ক্রাইম’-এর সংজ্ঞায় পড়ে।

ঘটনার শিকার দুই কিশোরীর পরিবার জানিয়েছে, তারা মিশর থেকে এসে গত বছর যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস শুরু করেছে। ঘটনার দিন, জিমন্যাস্টিক ক্লাসের সময়, তাদের উপর হামলা হয়।

তাদের মধ্যে একজনের মুখে আঘাত লাগে এবং অন্যজনের গলায় কিছু ধরে আঘাত করা হয়। আহত দুই ছাত্রীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে তাদের আঘাতের প্রমাণ পাওয়া যায়।

কাউন্সিল অন আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশনস (সিএআইআর)-এর কানেকটিকাট চ্যাপ্টারের প্রধানের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, হামলার শিকার হওয়া ওই দুই ছাত্রীকে তাদের সহপাঠীরা মারধর করে। ঘটনার সময় রমজান মাস চলছিল।

এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত অপর এক ছাত্রীকে কিশোর অপরাধীদের পুনর্বাসন কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। তবে অভিযুক্ত কিশোরী আদালতে হাজির হয়েছে কিনা বা তার কোনো আইনজীবী আছে কিনা, সে বিষয়ে এখনো কিছু জানা যায়নি।

ওয়াটারবেরি শহরের মেয়র এই ঘটনাকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তবে সিএআইআর জানিয়েছে, এই দুই ছাত্রী এর আগেও তাদের ধর্ম ও জাতিগত পরিচয় নিয়ে স্কুলে কিছু সহপাঠীর কাছ থেকে বুলিংয়ের শিকার হয়েছে।

সিএআইআর-এর প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, গত বছর সংস্থাটি ইসলামোফোবিয়ার শিকার হওয়া ৮,৬৫৮টি অভিযোগ পেয়েছে, যা আগে কখনও দেখা যায়নি।

স্থানীয় পুলিশ প্রাথমিকভাবে এই ঘটনাটিকে মারামারি বা সাধারণ আঘাতের ঘটনা হিসেবে দেখছিল। তবে পরে ছাত্রীদের পরিবার জানায়, এটি একটি ঘৃণামূলক অপরাধ। এরপর পুলিশ ঘটনাটির পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত শুরু করে।

ওয়াটারবেরি শহরের পুলিশ প্রধান জানিয়েছেন, প্রতিটি শিক্ষার্থীর বিদ্যালয়ে নিরাপদ ও সম্মানজনক পরিবেশে শিক্ষা লাভের অধিকার রয়েছে এবং তারা এই বিষয়টি নিশ্চিত করতে স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কাজ করছেন।

তথ্যসূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *