যুক্তরাষ্ট্রের কানেকটিকাট অঙ্গরাজ্যে এক নারীর বিরুদ্ধে সৎ ছেলেকে দুই দশক ধরে বন্দী করে নির্যাতন ও অনাহারে রাখার অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত ৫৬ বছর বয়সী কিম্বার্লি সুলিভানকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। তিনি বর্তমানে জামিনে মুক্ত আছেন।
আগামী বুধবার আদালতে তার হাজিরা দেওয়ার কথা রয়েছে।
অভিযোগ উঠেছে, দীর্ঘ ২০ বছর ধরে কিম্বার্লি তার সৎ ছেলে, ৩২ বছর বয়সী ওই ব্যক্তিকে বন্দী করে রেখেছিলেন। তাকে নিয়মিত মারধর করা হতো এবং পর্যাপ্ত খাবারও দেওয়া হতো না।
নির্যাতনের শিকার ওই ব্যক্তি অবশেষে মুক্তি পেতে নিজের ঘরে আগুন ধরিয়ে দেন।
ঘটনাটি গত ১৭ই ফেব্রুয়ারির। ওয়াটারবেরি শহরের একটি বাড়িতে আগুন লাগার খবর পেয়ে দমকল বাহিনী সেখানে পৌঁছায়। তারা গুরুতর আহত অবস্থায় ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করে।
আগুনে গুরুতরভাবে আহত হওয়ায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তিনি পুলিশকে জানান, মুক্তি পাওয়ার জন্যই তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে ঘরে আগুন লাগিয়েছিলেন।
পুলিশের কাছে দেওয়া জবানবন্দিতে ওই ব্যক্তি বলেছেন, তিনি ছোটবেলা থেকেই বন্দী জীবন যাপন করছিলেন। ১১ বছর বয়স থেকে তাকে একটি স্টোরেজ রুমে বন্দী করে রাখা হতো।
ধীরে ধীরে তার বন্দীত্ব আরও কঠোর হয়। এমনকি ঘরের বাইরে যাওয়ার অনুমতিও তার ছিল না। খাবারের বদলে তাকে সামান্য কিছু ডিমের ও টুনার স্যান্ডউইচ এবং অল্প পরিমাণ পানি দেওয়া হতো।
তার অভিযোগ, কৈশোরে পৌঁছানোর পরে দিনের প্রায় পুরোটা সময় তিনি একটি ঘরে বন্দী থাকতেন। বাথরুমের প্রয়োজন হলে তিনি জানালা দিয়ে বাইরে প্রস্রাব করতেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ওই ব্যক্তির মা জানিয়েছেন, তার ছেলে দীর্ঘদিন ধরে নিখোঁজ ছিল। তিনি জানেন না, কিভাবে এই ঘটনা ঘটল।
তিনি আরও জানান, তার ছেলে যখন মাত্র ছয় মাস বয়সী ছিল, তখন তিনি তাকে প্রতিপালনের জন্য অন্যের কাছে দিয়েছিলেন।
বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই ব্যক্তি শারীরিক ও মানসিক উভয় দিক থেকেই সুস্থ হওয়ার চেষ্টা করছেন। ওয়াটারবেরির মেয়র পল কে. পেরেনেস্কি জানিয়েছেন, তারা ওই ব্যক্তির পাশে আছেন এবং তাকে সব ধরনের সহায়তা দেবেন।
কিম্বার্লির আইনজীবী জানিয়েছেন, তার মক্কেল এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করার জন্য প্রস্তুত রয়েছেন।
তথ্যসূত্র: সিএনএন