আতঙ্ক! ডোনাল্ড ট্রাম্পের লোক: হোমল্যান্ডে বাড়ছে ক্ষমতার দাপট

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগে (Department of Homeland Security – DHS) ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাবেক সহযোগী কোরি লিওয়ানডস্কির ক্ষমতা ক্রমশ বাড়ছে। যদিও সরকারিভাবে তিনি একজন ‘বিশেষ সরকারি কর্মচারী’ (Special Government Employee – SGE) হিসেবে স্বল্প মেয়াদে কাজ করছেন, তবুও বিভিন্ন সূত্রে খবর, বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ অনেক সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে তার প্রভাব বাড়ছে।

খবর অনুযায়ী, তিনি বর্তমানে হোমল্যান্ড সিকিউরিটির সেক্রেটারি ক্রিস্টিন নোয়েমের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করছেন।

হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের অভ্যন্তরীণ সূত্রে জানা যায়, লিওয়ানডস্কি বিভাগের কর্মী ছাঁটাই থেকে শুরু করে গুরুত্বপূর্ণ নীতি নির্ধারণ, এমনকি ফেডারেল ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সির (FEMA) তহবিল বিতরণেও প্রভাব বিস্তার করছেন।

সাধারণত, এসজিই পদমর্যাদার কর্মীরা বছরে সর্বোচ্চ ১৩০ দিন কাজ করতে পারেন। কিন্তু লিওয়ানডস্কির ক্ষেত্রে, তার কাজের পরিধি এবং দায়িত্ব অনেক বেশি।

জানা গেছে, ২০১৬ সালে ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণার ম্যানেজার হিসেবে কাজ করার আগে লিওয়ানডস্কি লবিস্ট এবং কৌশলগত উপদেষ্টা হিসেবেও কাজ করেছেন। সম্প্রতি সেক্রেটারি নোয়েমের সঙ্গে তিনি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে যোগ দিয়েছেন, যার মধ্যে আর্জেন্টিনার একটি বৈঠকও ছিল।

এছাড়া, চিলি এবং ইকুয়েডরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনাতেও তিনি অংশ নেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা সিএনএনকে জানিয়েছেন, “হোমল্যান্ড সিকিউরিটিতে কার্যত চিফ অফ স্টাফের মতোই ক্ষমতাধর হয়ে উঠেছেন লিওয়ানডস্কি। সবাই তাকে ভয় পান, কারণ কর্মীদের বরখাস্ত করার একচ্ছত্র ক্ষমতা তার হাতে।”

সূত্র আরও জানায়, সেক্রেটারি নোয়েমের ‘গেটকিপার’ হিসেবেও তাকে দেখা হয়।

আরেকটি সূত্রে জানা গেছে, অভ্যন্তরীণ কিছু সিদ্ধান্তের কারণে লিওয়ানডস্কির সঙ্গে হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তাদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয়।

তবে হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র অ্যাবিগেল জ্যাকসন লিওয়ানডস্কিকে ট্রাম্পের দীর্ঘদিনের বিশ্বস্ত উপদেষ্টা হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

তিনি আরও বলেন, “হোমল্যান্ড সিকিউরিটির উল্লেখযোগ্য ফল—একটি সুরক্ষিত সীমান্ত, নিরাপদ আমেরিকান সম্প্রদায় এবং অপরাধী অবৈধ অভিবাসীদের সফলভাবে বিতাড়ন—এগুলোই প্রমাণ।”

লিওয়ানডস্কির ক্ষমতা বিস্তারের প্রেক্ষাপটে প্রশ্ন উঠেছে, স্বল্প মেয়াদের কর্মচারী হয়েও তিনি কীভাবে এত গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ করছেন এবং এত ক্ষমতা দেখাচ্ছেন?

ফেডারেল সরকারের নিয়ম অনুযায়ী, এসজিই পদে থাকা কর্মীদের ক্ষেত্রে অনেক কম আনুষ্ঠানিকতা এবং বিধিনিষেধ থাকে। তবে গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা অবস্থায় তাদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, ফেডারেল ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সির (FEMA) ওপর লিওয়ানডস্কির প্রভাব।

ট্রাম্প প্রশাসন এই সংস্থাটিকে দুর্বল করার চেষ্টা করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায়, লিওয়ানডস্কি এখানেও তার প্রভাব বিস্তার করেছেন। এমনকি, কর্মীদের বরখাস্ত করা এবং গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রেও তার ভূমিকা ছিল।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, লিওয়ানডস্কির এই ক্ষমতা এবং প্রভাব ভবিষ্যতে আরও বাড়তে পারে।

কারণ, ট্রাম্প প্রশাসনের নীতি হলো, স্বল্প মেয়াদের কর্মকর্তাদের ওপর বেশি নির্ভরশীলতা রাখা।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *