স্বর্গীয় আকর্ষণ! প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ক্যারিবীয় দ্বীপটি এখন সকলের জন্য!

করোনা দ্বীপ: কলম্বিয়ার সমুদ্র উপকূলে এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা, যা এখন সবার জন্য উন্মুক্ত।

বিশ্বজুড়ে ভ্রমণ প্রেমীদের জন্য কলম্বিয়ার সমুদ্র উপকূলে অবস্থিত করোনা দ্বীপ (Corona Island)-এ অবকাশ যাপনের এক দারুণ সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এতদিন শুধুমাত্র বিশেষ আমন্ত্রণে এই দ্বীপে প্রবেশের সুযোগ ছিল, তবে সম্প্রতি জনসাধারণের জন্য দ্বীপটি উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে।

দ্বীপটি যেন প্রকৃতির এক অপার লীলাভূমি। এখানে রয়েছে স্বচ্ছ নীল জলরাশি, যা দর্শকদের মন মুগ্ধ করে। এখানকার “টিকি-স্টাইলের” বাংলোগুলোতে রয়েছে সমুদ্রের দিকে মুখ করা বারান্দা এবং ব্যক্তিগত জকুজি।

কাপলদের জন্য বিশেষভাবে তৈরি এই বাংলোগুলোতে একটি রাতের জন্য থাকতে খরচ হবে প্রায় ৬৫৮ মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৭২ হাজার টাকার সমান (পরিবর্তনশীল বিনিময় হার)। এই মূল্যে কাটাকাটা ও ফেরত আসার জন্য স্পিডবোটের ব্যবস্থা, সকালের নাস্তা, দুপুরের খাবার এবং রাতের খাবার সহ করোনার বিয়ার উপভোগ করার সুযোগও রয়েছে।

যারা দিনের বেলা দ্বীপটি ঘুরে আসতে চান, তাদের জন্য রয়েছে ডে-পাস। এর মাধ্যমে জনপ্রতি খরচ হবে প্রায় ১৬৩ মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১৮ হাজার টাকার মতো (পরিবর্তনশীল বিনিময় হার)। ডে-পাসের সুবিধাভোগীরা স্পিডবোটে করে দ্বীপে আসা-যাওয়ার পাশাপাশি বিচ বেড এবং সানlounger ব্যবহার করতে পারবেন এবং তিন পদের দুপুরের খাবার উপভোগ করতে পারবেন।

দ্বীপটি শুধুমাত্র সমুদ্র সৈকতের সৌন্দর্য্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এখানে একটি রেস্টুরেন্ট রয়েছে, যেখানে স্থানীয় স্বাদের বিভিন্ন খাবার উপভোগ করা যায়। এছাড়াও, সানক্লাব নামক একটি উন্মুক্ত বার রয়েছে, যেখানে সূর্যাস্তের সময় পানীয় ও সঙ্গীতের আসর বসে।

দ্বীপের কেন্দ্রে একটি শান্ত লউঞ্জ এলাকা রয়েছে, যেখানে সমুদ্রের ঢেউ, ম্যাকাও পাখি এবং টিটি বানরের শব্দে প্রকৃতির মনোমুগ্ধকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়।

করোনার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অতিথিদের জন্য “বিশেষভাবে তৈরি দিনের বেলা এবং রাতের বিভিন্ন অভিজ্ঞতা” উপভোগের সুযোগ থাকবে, যা তাদের প্রকৃতির সঙ্গে পুনরায় মিলিত হতে সাহায্য করবে।

যোগা, কায়াকিং এবং স্ট্যান্ড-আপ প্যাডেলবোর্ডিং-এর মতো বিভিন্ন কার্যক্রমের পাশাপাশি ম্যানগ্রোভ বন তৈরি এবং কোরাল প্রাচীর পুনরুদ্ধারের মতো পরিবেশ-বান্ধব কার্যক্রমেও অংশ নেওয়া যাবে, যার জন্য অতিরিক্ত খরচ করতে হবে।

করোনার গ্লোবাল ভাইস প্রেসিডেন্ট ক্লারিসা পান্তোজা এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, “আমরা প্রকৃতি প্রেমী এবং ভ্রমণ উৎসাহীদের এই অসাধারণ পরিবেশে আসার জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছি, যেখানে প্রতিটি অভিজ্ঞতা প্রকৃতির সৌন্দর্যকে ধরে রাখতে সহায়তা করে।”

করোনা দ্বীপ “১০০% প্রাকৃতিক” উপাদান এবং পরিবেশ সুরক্ষার প্রতি করোনার অঙ্গীকারের একটি অংশ। এটি বিশ্বের একমাত্র দ্বীপ, যা সমুদ্র সংরক্ষণে নিবেদিত অলাভজনক সংস্থা ওশেনিক গ্লোবার (Oceanic Global)-এর কাছ থেকে প্লাস্টিক-মুক্ত ব্লু সিল-এর তিন-তারা স্বীকৃতি লাভ করেছে।

দ্বীপের অধিকাংশ বিদ্যুতের চাহিদা মেটানো হয় সৌর প্যানেলের মাধ্যমে এবং স্থানীয় কারিগরদের তৈরি নকশার মাধ্যমে ঐতিহ্যবাহী নির্মাণশৈলী ব্যবহার করে এখানকার অবকাঠামো তৈরি করা হয়েছে। এই দ্বীপটি কচ্ছপের ডিম পাড়ার স্থান হিসেবেও পরিচিত।

যারা এখানে থাকতে বা ভ্রমণ করতে আগ্রহী, তারা Airbnb, Expedia, Booking.com, এবং TripAdvisor-এর মতো প্ল্যাটফর্মে অথবা সরাসরি livecoronaisland.com ওয়েবসাইটে বুকিং করতে পারবেন।

কলম্বিয়া যেতে ভিসার প্রয়োজন হবে এবং ভ্রমণ খরচ নির্ভর করবে বিমান টিকিটের মূল্যের ওপর।

তথ্য সূত্র: ট্রাভেল অ্যান্ড লিজার

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *