যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটে ডোনাল্ড ট্রাম্পের নীতির তীব্র সমালোচনা করে দীর্ঘ বক্তৃতা দিয়েছেন ডেমোক্রেট সিনেটর কোরি বুকার। সোমবার সন্ধ্যায় তিনি বক্তব্য শুরু করেন এবং টানা ১২ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে কথা বলেন।
মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত তার এই বক্তৃতা চলে। বুকার ট্রাম্প প্রশাসনের বিভিন্ন পদক্ষেপকে গণতন্ত্র ও আমেরিকান জনগণের জন্য গুরুতর হুমকি হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
সিনেটর বুকার তার ভাষণে বলেন, তিনি বিভিন্ন সময়ে ডেমোক্রেট ও রিপাবলিকান উভয় দলের মানুষের কাছ থেকে ট্রাম্প প্রশাসনের নীতির কারণে “দুঃখ ও উদ্বেগের” কথা শুনেছেন। তিনি বিশেষভাবে উল্লেখ করেন, কীভাবে ট্রাম্প প্রশাসন শিক্ষা দপ্তর বিলুপ্ত করার চেষ্টা করছে, বিচার বিভাগের ক্ষমতাকে খর্ব করছে এবং যারা সরকারের সমালোচনা করে তাদের দমন করছে।
বুকারের মতে, এই পদক্ষেপগুলো আমেরিকার “বিশেষ ও অনন্য” প্রতিষ্ঠানগুলোর উপর “বেপরোয়াভাবে ও অসাংবিধানিকভাবে” আঘাত হানছে।
বক্তৃতায় বুকার আমেরিকার রাজনৈতিক অঙ্গনে ঐক্যের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন। তিনি সম্প্রতি টেক্সাসের রক্ষণশীল সিনেটর টেড ক্রুজের সঙ্গে রাতের খাবারের কথা উল্লেখ করেন।
টেড ক্রুজও অতীতে সিনেটে দীর্ঘ সময় ধরে বক্তৃতা করার রেকর্ড গড়েছেন। ২০১৩ সালে তিনি স্বাস্থ্যখাত বিষয়ক একটি বিলের বিরোধিতা করে ২১ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে কথা বলেছিলেন।
বুকারের এই বক্তব্য কোনো ‘ফিলিবাস্টার’ ছিল না, অর্থাৎ কোনো বিলের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার জন্য তিনি সময়ক্ষেপণ করেননি। বরং, তিনি ট্রাম্প প্রশাসনের বিভিন্ন নীতির বিরুদ্ধে জনমত তৈরির চেষ্টা করেছেন।
তার এই দীর্ঘ বক্তৃতায় প্রয়াত রাজনীতিক জন ম্যাককেইন ও জন লুইসের বক্তব্য উদ্ধৃত করা হয়। এছাড়া, বিভিন্ন সংবাদপত্রের নিবন্ধ থেকেও তিনি উদ্ধৃতি দেন।
কোরি বুকারের এই উদ্যোগকে সমর্থন জানিয়ে ডেমোক্রেট দলের অন্য সিনেটররা বিভিন্ন সময়ে তাকে প্রশ্ন করেন, যার ফলে তিনি কিছুক্ষণের জন্য বিরতি নিতে পেরেছিলেন।
সিনেটের ডেমোক্রেট দলের নেতা চাক শুমার বুকারের এই “দৃঢ়তা ও প্রত্যয়”-এর প্রশংসা করেন।
তবে, সিনেটে দীর্ঘতম বক্তৃতার রেকর্ড এখনো ভাঙতে পারেননি বুকার। ১৯৫৭ সালে সাউথ ক্যারোলাইনার সিনেটর স্ট্রম থারমন্ড নাগরিক অধিকার আইনের বিরুদ্ধে প্রায় ২৪ ঘণ্টা ১৮ মিনিট কথা বলেছিলেন।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান