ফিলিস্তিনিদের অধিকারের পক্ষে কথা বলার কারণে বন্ধু হারানোর বেদনাদায়ক অভিজ্ঞতা নিয়ে মুখ খুললেন এক লেখক। সম্প্রতি প্রকাশিত এক নিবন্ধে তিনি জানিয়েছেন, ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত নিয়ে তাঁর স্পষ্ট অবস্থানের কারণে কীভাবে বহুদিনের বন্ধুত্বগুলো ভেঙে গেছে।
লেখকের মতে, ফিলিস্তিনিদের প্রতি হওয়া অবিচার এবং তাঁদের দুঃখ-কষ্টের কথা তুলে ধরাটা একজন লেখকের নৈতিক দায়িত্ব। তিনি মনে করেন, এই বিষয়ে নীরব থাকাটা প্রকারান্তরে অন্যায়ের সঙ্গে আপোস করার শামিল।
তাই, নিজের মতপ্রকাশের কারণে বন্ধুদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন হলেও, তিনি সত্য কথা বলা থেকে পিছপা হননি।
নিবন্ধে লেখক উল্লেখ করেছেন, ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি দখলদারিত্ব কোনো জটিল বিষয় নয়। নিপীড়ন, বর্ণবৈষম্য কিংবা গণহত্যা—এগুলো সবই অন্যায্য এবং এর অবসান হওয়া উচিত।
যারা ফিলিস্তিনিদের অধিকারের কথা বলেন, তাঁদের অনেকে নানা ধরনের সমালোচনার শিকার হন। লেখকের ভাষায়, কেউ হয়তো তাঁর সাহসের প্রশংসা করেন, আবার কেউ তাঁকে খারাপ ভাষায় আক্রমণ করেন।
অনেকে তাঁকে চুপ করিয়ে দেওয়ারও চেষ্টা করেন। তবে, লেখক এসব প্রতিকূলতা সত্ত্বেও লেখা চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
বন্ধুত্ব হারানোর বিষয়টি লেখককে ব্যথিত করেছে, তবে তিনি মনে করেন, সত্য প্রকাশ করতে গেলে কিছু ত্যাগ স্বীকার করতে হয়।
তাঁর মতে, অনেক সময় আমরা যাদের খুব ভালো বন্ধু ভাবি, হয়তো তারা আমাদের সম্পর্কে ততটা ধারণা রাখে না, আবার যারা আমাদের চেনে, তারাও হয়তো আমাদের সম্পর্কে ভুল ধারণা পোষণ করে।
ইসরায়েলের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক রয়েছে এমন কিছু বন্ধুর সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিন্ন হয়েছে। তাঁদের প্রতি লেখকের কোনো অভিযোগ নেই।
লেখক তাঁদের ভালো চান এবং তাঁদের উদ্বেগকে সম্মান করেন।
ইসরায়েলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার নামে ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব খর্ব করা হলে, সেটি শান্তি হতে পারে না। এটি বরং এক ধরনের আধিপত্য, যা নিষ্ঠুর ও ক্ষমাহীন।
লেখক মনে করেন, এই ধরনের ক্ষতির মধ্য দিয়ে একটা স্পষ্টতা আসে, যা সম্পর্কের গভীরতা ও সত্যতাকে নতুন করে চিনতে শেখায়।
বর্তমানে ফিলিস্তিনি শিশুদের জীবন যুদ্ধের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। লেখক চান, তারা যেন দখলদারিত্ব, সন্ত্রাস ও শোকের বাইরে এসে স্বাভাবিক জীবন ফিরে পায়।
তাঁর আশা, ফিলিস্তিনি শিশুরা আবার খেলাধুলা ও পড়াশোনার সুযোগ পাবে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, যেকোনো মানুষের জন্য শোক যেন দৈনিক রুটিন না হয়।
ন্যায়বিচার সবার জন্য সমান হতে হবে এবং মানবতার জয়গান গাইতে হবে।
যারা তাঁর থেকে দূরে সরে গিয়েছেন, তাঁদের প্রতি লেখকের বক্তব্য হলো—তিনি জানেন, তাঁরা যা করছেন, তা সঠিক ও ন্যায্য।
লেখকও তাই মনে করেন। তিনি লেখেন, আঘাত দেওয়ার জন্য নয়, বরং অবিচার দূর করার জন্য।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা