ভাইরাল টিকটক, বাজারে চাহিদা বাড়ায় কোণঠাসা কুটির পনির প্রস্তুতকারকরা!

সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কুটির পনিরের চাহিদা বাড়ছে, যা প্রস্তুতকারকদের জন্য এক নতুন চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করেছে। সম্প্রতি, খাদ্য বিষয়ক একটি নতুন ট্রেন্ডের কারণে এই পনিরটির বিক্রি ব্যাপক হারে বেড়েছে।

বাজারে চাহিদা এত বেড়েছে যে সরবরাহকারীরা তা সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়ছে। সেই কারণে প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবারের চাহিদা বাড়ছে, আর কুটির পনির সেই চাহিদা মেটাতে সক্ষম।

আগেকার দিনে এই পনিরকে মূলত স্বাস্থ্য সচেতন এবং ডায়েট করা মানুষের খাবার হিসেবেই দেখা হতো। কিন্তু বর্তমানে, টিকটক-এর মতো প্ল্যাটফর্মে বিভিন্ন রেসিপি ভাইরাল হওয়ায় এর চাহিদা বেড়েছে।

বিভিন্ন খাদ্যপ্রেমী এবং প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এই পনির দিয়ে তৈরি নানা ধরনের পদ, যেমন – পনিরের আইসক্রিম, বিভিন্ন স্বাদের ডেজার্ট তৈরির ভিডিও আপলোড করছেন। এর ফলে, খাদ্য প্রেমীদের মধ্যে এই পনিরের ব্যবহার বেড়েছে, যা বাজারে এর চাহিদাকেও প্রভাবিত করেছে।

বাজার গবেষণা সংস্থা ‘সারকানা’-র তথ্য অনুযায়ী, গত এক বছরে যুক্তরাষ্ট্রে কুটির পনিরের বিক্রি প্রায় ২০ শতাংশ বেড়েছে। এর আগের বছরগুলোতেও এই বৃদ্ধি ছিল লক্ষণীয়।

২০২১ সালে এই পনিরের বিক্রি কিছুটা কমলেও, ২০২২ সাল থেকে তা আবার বাড়তে শুরু করে। বাজারের এই পরিবর্তনে অনেক প্রস্তুতকারক সংস্থা তাদের উৎপাদন বাড়াতে বাধ্য হয়েছে।

কুটির পনিরের এই ক্রমবর্ধমান চাহিদা দেখে অনেক সুপারমার্কেট তাদের পণ্য তালিকায় পরিবর্তন এনেছে। একটি সুপারমার্কেট চেইনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সুজান মরিস জানিয়েছেন, “আমরা হিসাব মিলিয়ে দেখেছি, কুটির পনির বর্তমানে একটি শক্তিশালী বাজার তৈরি করেছে।”

অনেক ব্র্যান্ড তাদের উৎপাদন ক্ষমতা বাড়াতে নতুন করে বিনিয়োগ করছে, কারণ বাজারে তাদের পণ্যের চাহিদা বাড়ছে, যা তারা সরবরাহ করতে পারছে না।

তবে, এই চাহিদা মেটানো প্রস্তুতকারকদের জন্য বেশ কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। ‘গুড কালচার’ নামের একটি ব্র্যান্ড, যারা মূলত কুটির পনির উৎপাদন করে, তাদের পণ্য এখন দোকানে খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে।

সম্প্রতি, তারা তাদের ইনস্টাগ্রাম পেজে জানিয়েছে যে, তারা বাজারে পণ্যের সরবরাহ স্বাভাবিক করার জন্য দিনরাত কাজ করছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কুটির পনিরের এই চাহিদা কেবল একটি সাময়িক প্রবণতা নয়।

কারণ, বিগত দুই বছর ধরে এর বিক্রি উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ছে। প্রস্তুতকারকদের জন্য এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, কীভাবে তারা এই চাহিদা পূরণ করতে পারে।

তারা হয় তাদের উৎপাদন ক্ষমতা বাড়াচ্ছে, না হয় নতুন অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করছে।

বাংলাদেশেও কি এমন কোনো খাদ্য প্রবণতা দেখা যায়? সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্রসারের সঙ্গে সঙ্গে, আমাদের দেশেও কি কোনো ঐতিহ্যবাহী খাবার নতুন রূপে জনপ্রিয় হচ্ছে?

অথবা, নতুন কোনো খাদ্য বিষয়ক ট্রেন্ড তৈরি হচ্ছে যা ভোক্তাদের মধ্যে সাড়া ফেলেছে? হয়তো, ভবিষ্যতে আমরাও দেখব, কোনো খাদ্যপণ্য সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে জনপ্রিয়তা লাভ করছে এবং প্রস্তুতকারকদের জন্য তা সরবরাহ করা কঠিন হয়ে পড়ছে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *