মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন নীতিমালায় পরিবর্তনের খবর: বাংলাদেশের জন্য এর অর্থ কি?
যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য ও মানব পরিষেবা বিভাগ (Department of Health and Human Services) সম্প্রতি কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন অনুমোদন এবং কাদের জন্য এটি সুপারিশ করা হবে, সেই সংক্রান্ত নীতিমালায় কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন এনেছে। এই পরিবর্তনের ফলে ভ্যাকসিন প্রাপ্তি এবং ব্যবহারের ক্ষেত্রে বেশ কিছু প্রভাব পড়তে পারে।
আসুন, জেনে নেওয়া যাক এই পরিবর্তনগুলো আসলে কী এবং এর সম্ভাব্য প্রভাবগুলো কী হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ঔষধ প্রশাসন (Food and Drug Administration) বা FDA সম্প্রতি কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের অনুমোদন প্রক্রিয়ার একটি নতুন কাঠামো তৈরি করেছে। নতুন এই কাঠামোর অধীনে, ভ্যাকসিনগুলো মূলত বয়স্ক আমেরিকান নাগরিক এবং গুরুতর অসুস্থতার ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের জন্য সীমিত করা হতে পারে।
এর বাইরে, গর্ভবতী নারী ও সুস্থ শিশুদের জন্য ভ্যাকসিন সুপারিশের তালিকা থেকেও এই ভ্যাকসিন বাদ দেওয়া হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (Centers for Disease Control and Prevention) বা CDC বিভিন্ন অসুস্থতার একটি তালিকা তৈরি করেছে, যা কোভিড-১৯ সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। এই তালিকায় রয়েছে—অ্যাজমা, ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, অতিরিক্ত ওজন এবং ধূমপানের ইতিহাস।
FDA-এর নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এই ধরনের শারীরিক সমস্যা রয়েছে এমন ব্যক্তি, যাদের বয়স ৬ মাস বা তার বেশি, তাঁরা কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন পাওয়ার যোগ্য হবেন। ধারণা করা হচ্ছে, এই নতুন কাঠামোর অধীনে, যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ১০ থেকে ২০ কোটি মানুষ ভ্যাকসিন পাওয়ার যোগ্য হতে পারেন।
গর্ভবতী মায়েদের ক্ষেত্রে, CDC আগে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের সুপারিশ করলেও, নতুন নীতিমালায় তা বাদ দেওয়া হয়েছে। তবে এর কারণ এখনো স্পষ্ট নয়।
অন্যদিকে, যাদের বয়স ৬৫ বছরের কম এবং কোনো অন্তর্নিহিত স্বাস্থ্য সমস্যা নেই, তাদের জন্য নতুন ভ্যাকসিন অনুমোদন পেতে হলে আরও গভীর ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের (Clinical Trial) প্রয়োজন হবে বলে জানা গেছে।
এখন প্রশ্ন হলো, এই পরিবর্তনগুলো আমাদের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ?
আসলে, এই পরিবর্তনের ফলে বিশ্বব্যাপী ভ্যাকসিন নীতি এবং প্রাপ্তির ক্ষেত্রে কিছু প্রভাব পড়তে পারে। বিশেষ করে, কোভিড-১৯ মোকাবিলায় বিভিন্ন দেশের পদক্ষেপগুলো কেমন হবে, তা বুঝতে এই ধরনের পরিবর্তনগুলো জানা জরুরি।
এই পরিবর্তনের ফলে ভ্যাকসিন পাওয়া আরও কঠিন হয়ে যেতে পারে। যদিও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকারি স্বাস্থ্য বীমা (যেমন—মেডিকেয়ার এবং মেডিকেইড) এর আওতায় থাকা এবং নতুন যোগ্যতার মানদণ্ড পূরণ করা ব্যক্তিরা সম্ভবত ভ্যাকসিন গ্রহণ করতে পারবেন।
তবে বেসরকারি বীমা কোম্পানিগুলো কীভাবে তাদের কভারেজ পরিবর্তন করবে, সে বিষয়ে এখনো অনেক অনিশ্চয়তা রয়েছে।
যদি কেউ নতুন যোগ্যতার মানদণ্ড পূরণ না করেন, তাহলে ভ্যাকসিন পাওয়া কঠিন হতে পারে এবং সেক্ষেত্রে নিজের পকেট থেকে অর্থ খরচ করতে হতে পারে।
এই মুহূর্তে, যুক্তরাষ্ট্রে যে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনগুলো পাওয়া যাচ্ছে, সেগুলোকে FDA নিরাপদ হিসেবেই বিবেচনা করে। তবে নতুন নীতিমালার কারণে, সুস্থ শিশু এবং প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ভ্যাকসিন অনুমোদন পেতে আরও বেশি গবেষণার প্রয়োজন হবে।
যুক্তরাষ্ট্রে ভ্যাকসিন নীতিতে এই পরিবর্তনগুলো সেখানকার জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় প্রভাব ফেলতে পারে। তাই, এই বিষয়ে সচেতন থাকাটা জরুরি।
তথ্য সূত্র: CNN