হলিউডে ফ্যাশন দুনিয়ায় নতুন এক পরিবারের উত্থান হচ্ছে, যাদের নাম ক্রফোর্ড-গারবার। কার্দাশিয়ান এবং বেকহ্যাম পরিবারের মতো, সিন্ডি ক্রফোর্ড, তাঁর স্বামী র্যান্ডে গারবার এবং তাঁদের দুই সন্তান কাইয়া ও প্রেসলি গারবার ফ্যাশন জগতে নিজেদের স্থান পাকা করতে নেমেছেন। সম্প্রতি, তাঁরা খেলাধুলার পোশাক প্রস্তুতকারক ‘ভোরি’র সঙ্গে এক বিশাল চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন।
**ফ্যাশন সাম্রাজ্যের নতুন দিগন্ত**
এই পরিবারের সদস্যরা তাঁদের ব্যবসার কৌশল হিসেবে একটি শক্তিশালী ব্র্যান্ড তৈরি করার চেষ্টা করছেন। তাঁদের মূল লক্ষ্য হলো, ফ্যাশন বাজারের স্বপ্ন বিক্রি করা। একজন ব্রিটিশ জনসংযোগ পরামর্শক মার্ক বোরকোওস্কি এই উদ্যোগকে ‘বহু-প্রজন্মীয় ব্র্যান্ডিং’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তাঁর মতে, ক্রফোর্ড-গারবার পরিবার দীর্ঘমেয়াদি এবং সুচিন্তিত পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে।
সিন্ডি ক্রফোর্ড এবং র্যান্ডে গারবারের দীর্ঘ, কলঙ্কমুক্ত দাম্পত্য জীবন তাঁদের সাফল্যের চাবিকাঠি।
ভোরির সঙ্গে করা প্রচারাভিযানে দেখা যায়, মালিবুর একটি সমুদ্র সৈকতের বাড়িতে পরিবারের সকলে একসঙ্গে সময় কাটাচ্ছেন। ছবিগুলোতে স্বাস্থ্য এবং আভিজাত্যের এক উজ্জ্বল চিত্র ফুটে উঠেছে।
তাঁরা বাগান, সমুদ্র এবং ব্যক্তিগত বিমানে সময় কাটাচ্ছেন। এইসব ছবিতে কাইয়া এবং র্যান্ডেকে একটি সমুদ্রতীরবর্তী ডেক-এ গিটার বাজাতেও দেখা যায়। অবশ্যই, তাঁরা ভোরির আরামদায়ক পোশাক পরেছিলেন।
সিন্ডি ক্রফোর্ড বলেছেন, “ভোরি এমন একটি জীবনযাত্রার প্রতিনিধিত্ব করে যা আমরা প্রতিদিন উপভোগ করি।
**সিন্ডি ক্রফোর্ডের সাফল্যের গল্প**
সিন্ডি ক্রফোর্ড ১৯৮৬ সালে ভোগ ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদে আসার পর থেকেই ফ্যাশন জগতে নিজের একটি আলাদা পরিচয় তৈরি করতে চেষ্টা করেছেন। তিনি একজন মডেল থেকে স্ব-নিয়ন্ত্রিত ব্র্যান্ডে পরিণত হয়েছেন।
পেপসির সঙ্গে বহু মিলিয়ন ডলারের চুক্তি, সুইস ঘড়ি প্রস্তুতকারক ওমেগার সঙ্গে ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে কাজ করা, নিজের ফিটনেস ভিডিও তৈরি করা, আসবাবপত্র এবং সৌন্দর্য সামগ্রীর ব্র্যান্ড তৈরি করা—এ সবই তাঁর সাফল্যের প্রমাণ।
তাঁর স্বামী র্যান্ডে গারবার একসময় মডেলিং করতেন। পরে তিনি একজন সফল ব্যবসায়ী হন।
তিনি জর্জ ক্লুনির সঙ্গে মিলে ‘কাসামিগোস’ নামে একটি টেকিলার ব্র্যান্ড তৈরি করেন, যা ২০১৭ সালে ১ বিলিয়ন ডলারে (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১০ হাজার ৬০০ কোটি টাকা) বিক্রি হয়।
**সন্তানদের ফ্যাশন এবং অন্যান্য কাজ**
প্রেসলি গারবার ১৬ বছর বয়স থেকে মডেলিং শুরু করেন। বর্তমানে তিনি মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক সচেতনতা তৈরিতে মনোযোগ দিচ্ছেন।
অন্যদিকে, কাইয়া গারবার মায়ের পদাঙ্ক অনুসরণ করে ফ্যাশন জগতে নাম লিখিয়েছেন। ১৫ বছর বয়সে তিনি মার্ক জ্যাকবস বিউটির মুখ হয়েছিলেন।
তিনি চ্যানেল, ভ্যালেন্তিনোসহ বিভিন্ন নামকরা ফ্যাশন ব্র্যান্ডের হয়ে র্যাম্পে হেঁটেছেন। ফ্যাশনের পাশাপাশি তিনি অভিনয়ও করছেন।
এছাড়াও, কাইয়ার একটি অনলাইন বুক ক্লাবও রয়েছে। বর্তমানে ইনস্টাগ্রামে তাঁর ১ কোটির বেশি ফলোয়ার রয়েছে।
২০১৬ সালে, সিন্ডি ক্রফোর্ড এবং কাইয়া ভোগ প্যারিসের প্রচ্ছদে একসঙ্গে এসেছিলেন। ফ্যাশন জগতে তাঁদের এই উপস্থিতি বুঝিয়ে দেয়, প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে তাঁরা কীভাবে প্রভাবশালী হয়ে উঠছেন।
ক্রফোর্ড এবং কাইয়া সম্প্রতি পোশাকের ব্র্যান্ড জারা এবং ফ্যাশন লেবেল ম্যাঙ্গোর সঙ্গেও কাজ করেছেন। বোরকোওস্কি বলেছেন, “এই জুটি সাধারণ মানুষের কাছে ফ্যাশনকে পৌঁছে দিচ্ছেন, যা তাঁদের সাফল্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক।
আন্তর্জাতিক সংবাদ প্রতিবেদনের ভিত্তিতে।