শিরোনাম: ডিজিটাল টোকেন: বিশ্বজুড়ে বিনিয়োগের নতুন দিগন্ত, বাংলাদেশের জন্য সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ
বিশ্বজুড়ে আর্থিক খাতে পরিবর্তনের হাওয়া লেগেছে, আর এর কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে ‘টোকেনাইজেশন’–এর ধারণা।
সোজা কথায়, শেয়ার, বন্ড, এমনকি জমির মতো বাস্তব সম্পদকে ডিজিটাল ‘টোকেন’-এ রূপান্তর করা হচ্ছে, যা ব্লকচেইন প্রযুক্তির মাধ্যমে সুরক্ষিত থাকে।
ক্রিপ্টোকারেন্সির মতোই এই টোকেনগুলো কেনাবেচা করা যায়, যা বিনিয়োগের জগৎকে আরও সহজলভ্য করে তুলছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টোকেনাইজেশন বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এক নতুন বিপ্লব ঘটাতে পারে।
এর ফলে সাধারণ বিনিয়োগকারীরাও সহজে বিভিন্ন সম্পদে বিনিয়োগ করতে পারবেন।
আগে যেখানে বড় বিনিয়োগকারীরা সুবিধা পেতেন, সেখানে এখন ছোট বিনিয়োগকারীরাও সমান সুযোগ পাবেন।
খরচ কমবে, স্বচ্ছতা বাড়বে, এবং বিনিয়োগের প্রক্রিয়া হবে আরও সহজ।
তবে, এর কিছু ঝুঁকিও রয়েছে।
সমালোচকরা বলছেন, টোকেনাইজেশন প্রচলিত নিরাপত্তা আইনকে দুর্বল করে দিতে পারে।
বিশেষ করে, বেসরকারি কোম্পানির শেয়ারের টোকেন তৈরির ক্ষেত্রে ঝুঁকি বেশি।
কারণ, তালিকাভুক্ত কোম্পানির মতো তাদের আর্থিক হিসাব জনসমক্ষে প্রকাশ করার বাধ্যবাধকতা নেই।
ইতিমধ্যে, বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে এই প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে।
‘রবিনহুড’ এর মতো কিছু প্ল্যাটফর্ম তাদের ইউরোপীয় গ্রাহকদের জন্য তালিকাভুক্ত কোম্পানির টোকেনাইজড শেয়ার কেনাবেচা করার সুযোগ দিচ্ছে।
এছাড়াও, ‘ব্ল্যাকরক’ এবং ‘ফ্রাঙ্কলিন টেম্পলটন’-এর মতো বড় আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোও ডিজিটাল সম্পদের দিকে ঝুঁকছে।
ধারণা করা হচ্ছে, ২০৩০ সাল নাগাদ টোকেনাইজড সম্পদের বাজার ২ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছাতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ডিজিটাল সম্পদের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছেন।
তাঁর সময়ে ডিজিটাল সম্পদ-সংক্রান্ত নিয়মকানুন সহজ করার চেষ্টা করা হয়েছে।
তবে, নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো এখনো সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
বিশেষ করে, টোকেন ইস্যু করার ক্ষেত্রে কোম্পানিগুলোকে তাদের দায়বদ্ধতা সম্পর্কে সচেতন থাকতে বলা হয়েছে।
এই পরিবর্তনের ঢেউ বাংলাদেশেও লাগতে পারে।
টোকেনাইজেশন দেশের বিনিয়োগের ধরন পাল্টে দিতে পারে, বিশেষ করে প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য নতুন বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি হতে পারে।
তবে, এর জন্য প্রয়োজন উপযুক্ত নীতিমালা ও নিয়ন্ত্রক কাঠামোর।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনকে (বিএসইসি) এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে হবে।
টোকেনাইজেশনের ধারণাটি এখনো নতুন।
তাই, বিনিয়োগের আগে ভালোভাবে সবকিছু জেনে বুঝে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস