অস্ট্রেলিয়ার একটি দ্বীপে হারিয়ে যাওয়ার আঠারো মাস পর, অবশেষে তার মালিকের কাছে ফিরে এলো ভ্যালেরি নামের একটি ক্ষুদে ড্যাক্সহাউন্ড কুকুর। ঘটনাটি ঘটেছে সাউথ অস্ট্রেলিয়ার উপকূলের কাছে অবস্থিত ক্যাঙ্গারু আইল্যান্ডে।
প্রায় দেড় বছর আগে, ২০২৩ সালের নভেম্বরে ভ্যালেরি নামের এই কুকুরটি হারিয়ে গিয়েছিল। এরপর থেকে তার মালিক, জর্জিয়া গার্ডনার এবং জশ ফিশলক তাদের আদরের পোষ্যটিকে ফিরে পাওয়ার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলেন।
কুকুরটি খুঁজে পাওয়ার পর জর্জিয়া জানিয়েছেন, তাদের হারিয়ে যাওয়া ভ্যালেরিকে ফিরে পেয়ে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন।
“সে সোজা আমার দিকে ছুটে এলো। লেজ নাড়তে নাড়তে সে আনন্দে কিলবিল করছিল। আমি তাকে জড়িয়ে ধরে অনেক কেঁদেছি”, তিনি বলেন।
ক্যাঙ্গারু আইল্যান্ডে কানগালা ওয়াইল্ডলাইফ রেসকিউয়ের স্বেচ্ছাসেবকরা গত ২৫শে এপ্রিল, ২০২৩ তারিখে ভ্যালেরিকে খুঁজে পান। আশ্চর্যের বিষয় হলো, বন্য পরিবেশে প্রায় ৫২৯ দিন কাটানোর পরেও কুকুরটির স্বাস্থ্য ভালো ছিল।
হারিয়ে যাওয়ার সময় ভ্যালেরির ওজন ছিল প্রায় ৪ কিলোগ্রাম, যা বর্তমানে বেড়ে ৬.৮ কিলোগ্রাম হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, সে রাস্তার পাশে মরা পশুর মাংস এবং অন্যান্য বর্জ্য খেয়ে কোনোমতে survival করেছে।
জানা গেছে, জর্জিয়া এবং জশ এই দ্বীপে ছুটি কাটাতে এসেছিলেন। একদিন ক্যাম্পিংয়ের সময় ভ্যালেরি তাদের খাঁচা থেকে পালিয়ে যায়।
এরপর অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তারা তাকে খুঁজে পাননি। পরে কানগালা ওয়াইল্ডলাইফ রেসকিউয়ের কর্মীরা প্রায় ১০০০ ঘণ্টা ধরে ৫০০০ কিলোমিটার এলাকা খুঁজে অবশেষে কুকুরটিকে উদ্ধার করেন।
কানগালা ওয়াইল্ডলাইফ রেসকিউয়ের পরিচালক জারেড কারান জানান, ক্যামেরার ছবিতে একটি ফাঁদের কাছে কুকুরটিকে ঘ্রাণ নিতে দেখা গিয়েছিল। তবে বাস্তবে তাকে এত ছোট দেখে তিনি অবাক হয়ে গিয়েছিলেন।
তিনি আরও বলেন, “কুকুরটির এই দ্বীপে টিকে থাকাটা একটা অলৌকিক ঘটনা।”
ভ্যালেরিকে এখন তার মালিকরা নিউ সাউথ ওয়েলসের আলবারিতে তাদের বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। জর্জিয়া জানিয়েছেন, ভ্যালেরিকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে তিনি একজন কুকুর বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিচ্ছেন।
বর্তমানে ভালো অবস্থায় থাকায় তাকে কাঁচা খাবার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আলবারিতে ফিরে আসার পর ভ্যালেরি তার পরিবারের অন্যান্য সদস্য, যেমন – লুসি নামের একটি বিড়াল এবং ম্যাসন নামের একটি ক্যাটল ডগের সাথে মিলিত হবে।
এছাড়াও সে তার নতুন সঙ্গী, ডরথির সাথেও পরিচিত হবে।
তথ্য সূত্র: