মেট গালা শেষ, তবে ফ্যাশনপ্রেমীদের মনে আজও সেই দাপট! কীভাবে সাজবেন?

মেট গালা শেষ হলেও, ড্যান্ডিজমের (Dandyism) আবেদন ফুরোয়নি। ফ্যাশন ও আত্মপ্রকাশের এই ধারার সঙ্গে পরিচিত হওয়া যাক, যা পোশাকে আনে আভিজাত্য আর আত্মবিশ্বাস।

সম্প্রতি নিউইয়র্কের মেট্রোপলিটন মিউজিয়ামে (Metropolitan Museum of Art) শুরু হয়েছে ‘সুপার ফাইন: টেইলারিং ব্ল্যাক স্টাইল’ (Superfine: Tailoring Black Style) শীর্ষক প্রদর্শনী। এই প্রদর্শনীতে কৃষ্ণাঙ্গ সংস্কৃতি এবং ড্যান্ডিজমকে তুলে ধরা হয়েছে, যা ফ্যাশন দুনিয়ায় নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে।

ড্যান্ডিজম আসলে কী? যারা এই বিষয়ে অবগত নন, তাদের জন্য বলা ভালো, ড্যান্ডিজম হলো পোশাকের মাধ্যমে নিজের স্বতন্ত্রতা প্রকাশ করা।

এটি শুধু দামি পোশাকের বিষয় নয়, বরং রুচি, সৃজনশীলতা এবং আত্মবিশ্বাসের প্রকাশ। আপনি কিভাবে নিজেকে উপস্থাপন করছেন, সেটাই এখানে মুখ্য।

এই ধারণা থেকেই অনুপ্রাণিত হয়ে, সাধারণ পোশাকেও কিভাবে একজন মানুষ আকর্ষণীয় হয়ে উঠতে পারে, সেই বিষয়ে কিছু পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

নিউইয়র্কের সংস্কৃতি ও স্থাপত্য ইতিহাসের অধ্যাপক মাইকেল হেনরি অ্যাডামস-এর মতে, ড্যান্ডিজম কৃষ্ণাঙ্গ সম্প্রদায়ের সংস্কৃতিতে মিশে আছে।

আত্মপ্রকাশের এই ধারা তাদের ফ্যাশনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। তিনি বলেন, “পোশাকের ক্ষেত্রে কৃষ্ণাঙ্গ মানুষের উদ্ভাবনী ক্ষমতা সবসময়ই বিদ্যমান।”

তাহলে, কিভাবে একজন ড্যান্ডি হয়ে ওঠা যায়?

প্রথমত, আত্মবিশ্বাসী হওয়া প্রয়োজন।

হারলেম হ্যাবerdashery-র সহ-মালিক গাই উড বলেন, “ফ্যাশন হলো ব্যক্তিত্বের প্রকাশ। একই দোকান থেকে পোশাক কিনেও দু’জন মানুষের মধ্যে ভিন্নতা দেখা যায়, কারণ আত্মবিশ্বাসই আসল।”

আটলান্টার স্টাইল পরামর্শদাতা মাইকেল অ্যান্ড্রু মনে করেন, ড্যান্ডিজম হলো রুচির সর্বোচ্চ প্রকাশ, যা আত্ম-প্রকাশের সুযোগ দেয়।

দ্বিতীয়ত, আকর্ষণীয় পোশাক নির্বাচন করা।

একজন ড্যান্ডির পোশাকে উজ্জ্বল রং ও পরিপাটি কাটিংয়ের (tailoring) ছোঁয়া থাকে।

তবে, এখানেও স্বকীয়তা গুরুত্বপূর্ণ। কারো হয়তো স্যুট, কারো বা ব্লেজার প্রিয়।

আবার, কেউ শার্টের সাথে আকর্ষণীয় টাই পরতে ভালোবাসেন।

আশির দশকের বিখ্যাত টেইলার জেমস ম্যাকফারল্যান্ড-এর মতে, “পোশাক পরিপাটি হলে মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা যায়।”

তাঁর কথায়, “সুন্দর পোশাক আপনাকে আত্মবিশ্বাসী করে তোলে।”

তৃতীয়ত, সৃজনশীলতা এবং উদ্ভাবনী মানসিকতা।

গাই উডের মতে, ড্যান্ডি হতে প্রচুর অর্থের প্রয়োজন নেই, বরং প্রয়োজন সৃজনশীলতা।

তিনি বলেন, “নিজের মায়ের আলমারি থেকে একটি স্কার্ফ নিয়ে গলায় বাঁধুন, অথবা অন্য কোনো উপায়ে পোশাকের সাথে যুক্ত করুন।

আত্মবিশ্বাসের সাথে সেটিই আপনাকে আকর্ষণীয় করে তুলবে।”

সবশেষে, ক্যাজুয়াল পোশাক এড়িয়ে চলা।

ম্যাকফারল্যান্ড মনে করেন, অতীতের মতো এখন আর পোশাকের প্রতি মানুষের আগ্রহ নেই।

তার মতে, পোশাকের রুচি ও ভালো পোশাক পরার সংস্কৃতি ফিরিয়ে আনা উচিত।

ফ্যাশন সবসময়ই পরিবর্তনশীল, কিন্তু ড্যান্ডিজম-এর আবেদন চিরন্তন। এটি আত্মপ্রকাশের একটি মাধ্যম, যা আমাদের নিজস্ব স্টাইল তৈরি করতে উৎসাহিত করে।

আপনিও কি আপনার পোশাকে এই ধারার ছোঁয়া আনতে চান?

তথ্য সূত্র: Associated Press

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *