রাশিয়ার টেনিস খেলোয়াড় দারিয়া কাসাতকিনা সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার হয়ে খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এই পরিবর্তনের কারণ হিসেবে তিনি নিজের যৌন অভিমুখী পরিচয় এবং রাশিয়ার বর্তমান সামাজিক পরিস্থিতিকে তুলে ধরেছেন।
কাসাতকিনা দীর্ঘদিন ধরেই স্পেইন ও দুবাইতে বসবাস করছিলেন, এবং ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে নিরপেক্ষ অ্যাথলেট হিসেবে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন।
বর্তমানে বিশ্বের ১২ নম্বর এই টেনিস তারকা গত সপ্তাহে অস্ট্রেলিয়ার স্থায়ী নাগরিকত্বের আবেদন মঞ্জুর হওয়ার পর নতুন দেশের হয়ে খেলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তিনি জানিয়েছেন, নিজের “গে” পরিচয় নিয়ে রাশিয়ায় স্বাধীনভাবে জীবন কাটানো তার জন্য কঠিন ছিল।
আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা যায়, তিনি মনে করেন, নিজেকে প্রকাশ করতে হলে এই পদক্ষেপ নেওয়া ছাড়া তার আর কোনো উপায় ছিল না।
২০২২ সালের জুলাই মাসে কাসাতকিনা প্রকাশ্যে তার সমকামিতার কথা জানান। এরপর থেকেই তিনি রাশিয়ার এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়ের অধিকার নিয়ে সোচ্চার হয়েছেন। তার এই সিদ্ধান্তের পেছনে রাশিয়ার বিতর্কিত “গে-বিরোধী আইন”-এর ভূমিকা রয়েছে।
২০১৩ সালে এই আইনটি পাস হওয়ার পর থেকে এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়ের অধিকার খর্ব করা হচ্ছে। এমনকি, সমকামিতা স্বাভাবিক—এমন ধারণা প্রচার করাও সেখানে নিষিদ্ধ।
ইউরোপে এলজিবিটিকিউ মানুষের অধিকারের ক্ষেত্রে রাশিয়াকে সবচেয়ে খারাপ দেশগুলোর মধ্যে গণ্য করা হয়। মানবাধিকার সংস্থাগুলির মতে, তুরস্ক ও আজারবাইজানের চেয়েও খারাপ পরিস্থিতি সেখানে বিদ্যমান।
কাসাতকিনা তার নতুন আবাসস্থল হিসেবে মেলবোর্নকে বেছে নিয়েছেন এবং অস্ট্রেলিয়াকে একটি “স্বাগতম” ও “ভালোবাসার জায়গা” হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
আগামীকাল সাউথ ক্যারোলাইনার চার্লসটনে অনুষ্ঠিতব্য টুর্নামেন্টে তিনি প্রথমবারের মতো অস্ট্রেলিয়ার প্রতিনিধিত্ব করবেন। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, “অবশ্যই, এটা আমার জন্য আবেগপূর্ণ। আমাকে এর সঙ্গে অভ্যস্ত হতে হবে। তবে আমি অস্ট্রেলিয়ার হয়ে খেলার এই নতুন অধ্যায় শুরু করতে পেরে খুবই আনন্দিত।”
তথ্য সূত্র: সিএনএন