অন্ধকারে প্রকৃতির জাদু! যা আপনার মন ভালো করে দিতে পারে

মনের শান্তি ফিরিয়ে আনতে রাতের প্রকৃতির সান্নিধ্য!

রাতের আকাশে তাকিয়ে তারা গোনা অথবা জ্যোৎস্নার রাতে হেঁটে বেড়ানো – প্রকৃতির এই নীরব রূপও যে আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হতে পারে, তেমনটাই বলছেন বিশেষজ্ঞরা। আজকাল মানসিক স্বাস্থ্যের গুরুত্ব বাড়ছে, তাই প্রকৃতির কাছাকাছি যাওয়াটা আমাদের জন্য খুব জরুরি।

দিনের আলোয় গাছপালা, নদী বা পাহাড়ের কাছাকাছি থাকার উপকারিতা সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানি। কিন্তু রাতের অন্ধকারে প্রকৃতির সাথে সময় কাটানোটাও যে আমাদের মনে ভালো প্রভাব ফেলতে পারে, সে বিষয়ে নতুন গবেষণাগুলো আলোকপাত করছে।

গবেষকরা ‘নাইট স্কাই কানেক্টেড ইনডেক্স’ (Night Sky Connected Index) তৈরি করেছেন, যার মাধ্যমে রাতের আকাশের সাথে মানুষের সংযোগ কতটা গভীর, তা পরিমাপ করা যায়।

এই সূচক তৈরি করতে অনেক মানুষের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে এবং একটি পরীক্ষার জন্য ৪০৬ জন সাধারণ মানুষের ওপর সমীক্ষা চালানো হয়েছে। সমীক্ষার ফলাফলে দেখা গেছে, যাদের মধ্যে রাতের আকাশের সঙ্গে সংযোগ বেশি, তাদের মানসিক স্বাস্থ্য এবং সুখের অনুভূতিও বেশি।

প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক বা ‘নেচার কানেক্টেডনেস’-এর বিষয়টি আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রাতের বেলা প্রকৃতির কাছাকাছি থাকলে, বিশেষ করে তারা ভরা আকাশের দিকে তাকালে এক ধরনের মুগ্ধতা তৈরি হয়, যা আমাদের মানসিক শান্তির জন্য খুব প্রয়োজনীয়।

গবেষণায় দেখা গেছে, এই মুগ্ধতা আমাদের মনকে শান্ত করতে, উদ্বেগমুক্ত করতে এবং সামগ্রিক সুস্থ জীবন ধারণে সাহায্য করে।

রাতের প্রকৃতির সাথে কাটানো সময়কে ‘ডার্ক নেচার অ্যাক্টিভিটিস’ বা রাতের প্রকৃতির কার্যকলাপ হিসেবেও উল্লেখ করা হয়। এই ধরনের কার্যকলাপ ইকোথেরাপির একটি অংশ হতে পারে।

ইকোথেরাপি হলো প্রকৃতি-ভিত্তিক এক ধরনের চিকিৎসা, যা প্রকৃতির সান্নিধ্যে আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়।

রাতের বেলা বাইরে হাঁটা, জ্যোৎস্নার রাতে পাহাড় বা গ্রামের পথে হেঁটে বেড়ানো অথবা বন্ধু-বান্ধবদের সাথে মিলে বনফায়ারের আয়োজন করা – এগুলো সবই ডার্ক নেচার অ্যাক্টিভিটিসের অন্তর্ভুক্ত।

তবে রাতের বেলা প্রকৃতির কাছাকাছি যাওয়ার সময় কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন। রাতের বেলা হাঁটার সময় উজ্জ্বল রঙের পোশাক পরা উচিত, যাতে অন্যদের চোখে পড়া যায়।

এছাড়াও, সাথে একটি টর্চলাইট রাখা ভালো। বনফায়ারের পরিকল্পনা করলে স্থানীয় নিয়মকানুন সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নিতে হবে।

সুতরাং, দিনের আলোয় প্রকৃতির সান্নিধ্যে যাওয়া যেমন আমাদের জন্য উপকারী, তেমনই রাতের অন্ধকারে প্রকৃতির কাছাকাছি সময় কাটানোটাও আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।

রাতের আকাশে তারা দেখা, রাতের বেলা হেঁটে বেড়ানো বা বনফায়ারের মতো কার্যকলাপগুলো আমাদের মানসিক শান্তির জন্য সহায়ক হতে পারে।

তাই, রাতের বেলা প্রকৃতির নীরবতা উপভোগ করে মানসিক শান্তির ঠিকানা খুঁজে নিতে পারেন।

তথ্য সূত্র: হেলথলাইন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *