ছেলের মৃত্যু: রেডিও তারকা ডেলিলার জীবনে নতুন আলো!

যুক্তরাষ্ট্রের জনপ্রিয় রেডিও ব্যক্তিত্ব ডেলিলা, যিনি তার শ্রোতাদের কাছে “স্যাপী লাভ সং”-এর রানী হিসাবে পরিচিত, ব্যক্তিগত জীবনে গভীর শোকের মধ্যে থেকেও কিভাবে অন্যদের অনুপ্রেরণা যোগান, সেই গল্প নিয়েই আজকের আলোচনা। ভালোবাসার গান শোনানো এবং শ্রোতাদের ভালোবাসার পরামর্শ দেওয়ার পাশাপাশি ডেলিলার জীবন কেটেছে কঠিন সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে।

ডেলিলার রেডিও অনুষ্ঠানে প্রায়ই ভালোবাসার গল্প, সম্পর্কের উত্থান-পতন নিয়ে আলোচনা হয়। শ্রোতাদের মন জয় করা এই রেডিও ব্যক্তিত্ব ব্যক্তিগত জীবনে দুই ছেলের মৃত্যুশোককে সঙ্গী করে পথ চলছেন। ২০১২ সালে তার ১৬ বছর বয়সী ছেলে স্যামি সিকেল সেল অ্যানিমিয়া নামক রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। এর পাঁচ বছর পর, ২০১৮ সালে, ডেলিলার ১৮ বছর বয়সী ছেলে জ্যাক আত্মহত্যা করে।

এই শোকের সময়েও ডেলিলা তার শ্রোতাদের জন্য সবসময় ছিলেন নিবেদিত প্রাণ। তিনি বলেন, “যখন আমি হতাশ হয়ে পড়ি বা একাকীত্ব অনুভব করি, তখন অন্যদের সঙ্গে আমার কষ্টগুলো ভাগ করে নিলে আমি নতুন করে শক্তি পাই।

মানুষের প্রতি সহানুভূতি এবং তাদের পাশে থাকার মানসিকতাই যেন তাকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করে। ডেলিলা আরও যোগ করেন, “কখনও কখনও এমন হয়, যখন আমি একদম ভেঙে পড়ি, কিন্তু যখন দেখি কেউ আমার কাছ থেকে কিছু চাইছে, তখন তাদের প্রয়োজন মেটাতে গিয়ে আমি নতুন করে জেগে উঠি।

ডেলিলার ১৫ জন সন্তান রয়েছে এবং তাদের সঙ্গে সময় কাটানো, বিশেষ করে নাতি-নাতনীদের সান্নিধ্য তাকে ভবিষ্যতের জন্য আশাবাদী করে তোলে। তিনি বিশ্বাস করেন, “মানুষ হিসেবে আমরা একে অপরের গল্প শুনি, তাদের কথা বোঝার চেষ্টা করি।

সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষ, এমনকি যারা আশ্রয়হীন, বৃদ্ধ অথবা কঠিন রোগে আক্রান্ত, তাদেরও নিজস্ব গল্প আছে, যা মূল্যবান।

ডেলিলার মতে, আজকের ডিজিটাল যুগে মানুষের মধ্যে সম্পর্কগুলো দুর্বল হয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, “প্রযুক্তি ভালো, যেমন ভিডিও কলে পরিবারের সঙ্গে কথা বলা অথবা বন্ধুদের সঙ্গে সিনেমা দেখা।

কিন্তু যখন এটি সম্পর্কের আসল বিকল্প হয়ে ওঠে, তখনই বিপদ।” ডেলিলা তার কিশোরী মেয়ের জন্য একটি সাধারণ ফোন ব্যবহার করার অনুমতি দিয়েছেন, যাতে সে জরুরি প্রয়োজনে তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে। তিনি তার সন্তানদের শিখিয়েছেন পারস্পরিক সম্পর্কের গুরুত্ব।

ডেলিলার মতে, জীবনের উত্থান-পতন, এমনকি শোককেও ভালোবাসতে হবে। “জীবনটা সুন্দর, এর প্রতিটি মুহূর্ত উপভোগ করা উচিত। প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করতে হবে, কারণ এই সুন্দর সময়গুলো দ্রুত ফুরিয়ে যায়।

তিনি মনে করেন, যারা সারাক্ষণ মোবাইল স্ক্রিনে তাকিয়ে থাকে, তারা জীবনের অনেক সুন্দর জিনিস থেকে বঞ্চিত হয়।

ডেলিলার মতে, অন্যদের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নেওয়া এবং তাদের পরামর্শ দেওয়াটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। “নিজের অভিজ্ঞতা, শক্তি এবং আশা অন্যের সঙ্গে ভাগ করে নিলে, তা মানুষকে সঠিক পথে চলতে সাহায্য করে।

তথ্য সূত্র: পিপল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *