যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ডোরড্যাশ-এর সঙ্গে ২.৯ বিলিয়ন পাউন্ডের বিনিময়ে চুক্তি করতে যাচ্ছে ব্রিটিশ ফুড ডেলিভারি কোম্পানি ডেলিভারু। এই চুক্তির ফলে ডেলিভারুর কর্মীরা যেমন সুবিধা পাবে, তেমনি এর প্রতিষ্ঠাতা উইল শু-এরও বিপুল অর্থ উপার্জনের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
২০১৩ সালে উইল শু এবং গ্রেগ ওরলোস্কি নামক দুই বন্ধু মিলে ডেলিভারু প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠার পর থেকে দ্রুত ব্যবসা বাড়লেও, কোভিড-১৯ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর তাদের ব্যবসায় কিছুটা ভাটা পড়ে। মূলত লকডাউনের সময় রেস্টুরেন্ট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ফুড ডেলিভারির চাহিদা বেড়ে গিয়েছিল, যা ডেলিভারুর ব্যবসায় ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছিল।
বর্তমানে ডোরড্যাশ-এর এই অধিগ্রহণের মাধ্যমে বিশ্ববাজারে নিজেদের অবস্থান আরও সুসংহত করতে চাইছে তারা।
ডেলিভারুর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শেয়ার প্রতি ১৮০ পেন্সের বিনিময়ে ডোরড্যাশের সঙ্গে চুক্তি সম্পন্ন হবে। এই চুক্তির ফলে ডেলিভারুর কর্মীদের প্রায় ৬৫ মিলিয়ন পাউন্ড পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ডেলিভারুর প্রতিষ্ঠাতা উইল শু-এর কোম্পানির ৬.৪% শেয়ার রয়েছে এবং তিনি প্রায় ১৭২ মিলিয়ন পাউন্ড পেতে পারেন। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, “আমরা এখন একটি নতুন দিগন্তের সূচনা করতে যাচ্ছি। ডোরড্যাশ এবং ডেলিভারু একই ধরনের চিন্তা-ভাবনা করে এবং তাদের ভিশন ও মূল্যবোধও একই রকম।”
উইল শু, যিনি একসময় ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকার হিসেবে কাজ করতেন, গভীর রাতে খাবার পাওয়া কঠিন হওয়ায় ফুড ডেলিভারির ধারণা নিয়ে আসেন। ডেলিভারু প্রতিষ্ঠার আগে তিনি নিজেই স্কুটার চালিয়ে খাবার পৌঁছে দিতেন।
ডেলিভারু, চার বছর আগে লন্ডনের স্টক মার্কেটে তালিকাভুক্ত হয়েছিল। ২০১৯ সালে শেয়ার প্রতি ৩৯০ পেন্স দাম নির্ধারণ করা হলেও, প্রথম দিনেই শেয়ারের দাম ২৬% কমে গিয়েছিল। এই কারণে কোম্পানিটি ‘ফ্লপেরু’ নামেও পরিচিতি লাভ করে।
ডেলিভারু বর্তমানে ১ লক্ষ ৭৬ হাজার রেস্টুরেন্ট, মুদি দোকান এবং অন্যান্য বিক্রেতাদের সঙ্গে কাজ করে। গত বছর তাদের সক্রিয় গ্রাহকের সংখ্যা ছিল মাসে প্রায় ৭০ লক্ষ। তাদের অধীনে ১ লক্ষ ৩০ হাজারের বেশি রাইডার কাজ করে।
যদিও কোভিড-১৯ এর সময় ব্যবসা বাড়লেও, পরবর্তীতে চাহিদা কিছুটা কমে আসে। কোম্পানিটি জানিয়েছে, তারা ২০২৪ সালে প্রায় ১২ মিলিয়ন পাউন্ড প্রি-ট্যাক্স মুনাফা করেছে এবং তাদের মোট রাজস্ব ছিল ২.১ বিলিয়ন পাউন্ড।
বর্তমানে, ডোরড্যাশ যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় ফুড ডেলিভারি অ্যাপ। বাংলাদেশের বাজারেও ফুড ডেলিভারি সেবার চাহিদা বাড়ছে।
ফুডপান্ডা, পাঠাও ফুডের মতো অনেক প্রতিষ্ঠান এখানে খাবার সরবরাহ করে। বিশ্ব অর্থনীতির এই পরিবর্তনে, ডেলিভারু ও ডোরড্যাশের এই চুক্তি আন্তর্জাতিক বাজারে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান