আকাশে ভয়ঙ্কর বিপদ! ল্যান্ড করার সময় ভেঙে গেল বিমানের অংশ, তারপর…

ফেব্রুয়ারী মাসের মাঝামাঝি সময়ে টরন্টো পিয়ারসন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে একটি বিমান দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটে। ডেল্টা এয়ারলাইন্সের একটি আঞ্চলিক জেট বিমান, যা আসলে এন্ডেভার এয়ারলাইন্স কর্তৃক পরিচালিত হচ্ছিল, অবতরণের সময় উল্টে যায়।

কানাডার পরিবহন নিরাপত্তা বোর্ড (Transportation Safety Board of Canada) -এর প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, বিমানের ল্যান্ডিং গিয়ার-এর একটি অংশ ভেঙে যাওয়ার কারণেই এই দুর্ঘটনা ঘটে।

গত ১৭ই ফেব্রুয়ারীর এই দুর্ঘটনায় সৌভাগ্যবশত বিমানের সকল যাত্রী ও ক্রু’দের মধ্যে কেউ নিহত হননি। ফ্লাইটটি ছিল মিনিয়াপলিস থেকে টরন্টোগামী ডেল্টা কানেকশন ফ্লাইট ৪৮১৯।

রানওয়েতে অবতরণের সময় বিমানের প্রধান ল্যান্ডিং গিয়ার-এর একটি অংশ ভেঙে যায়। এর ফলে বিমানটির ডান দিকের ডানা ভেঙে যায় এবং বিমানে আগুন ধরে যায়।

দুর্ঘটনায় বিমানের ৮০ জন যাত্রী ও ক্রুর মধ্যে ২১ জন আহত হন, যাদের মধ্যে ২ জনের অবস্থা গুরুতর ছিল।

তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, অবতরণের মুহূর্তে বিমানের ডানদিকের প্রধান ল্যান্ডিং গিয়ার-এর সাথে যুক্ত একটি ‘সাইড-স্টේ’ ভেঙে যায়। এর ফলে ল্যান্ডিং গিয়ারটি ভেঙে যায় এবং বিমানের ডান দিকের ডানা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

ডানা ভেঙে যাওয়ার কারণে বিমানে থাকা প্রায় ৬,০০০ পাউন্ড জেট ফুয়েল বের হয়ে আসে, যা দ্রুত আগুন ধরিয়ে দেয়। ককপিটের দরজা আটকে যাওয়ায় পাইলটদের জরুরি নির্গমন পথ দিয়ে বের হতে হয়।

এই দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানের জন্য কানাডার পরিবহন নিরাপত্তা বোর্ড বিস্তারিত তদন্ত শুরু করেছে। বোর্ডের চেয়ার, ইয়োয়ান মারিয়ার এক বিবৃতিতে বলেছেন, “দুর্ঘটনা বা ঘটনার কারণ সাধারণত একটিমাত্র থাকে না।

এর পেছনে জটিল এবং পারস্পরিক সম্পর্কযুক্ত অনেকগুলো বিষয় জড়িত থাকে।

চূড়ান্ত কারণ নির্ধারণ করতে প্রায় ৬০০ দিন সময় লাগতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

দুর্ঘটনার আগে, বিমানটি অবতরণের কয়েক সেকেন্ড পূর্বে পাইলটদের সতর্ক করে। দ্রুত অবতরণের কারণে বিমানটি ডান দিকে ৭.৫ ডিগ্রি হেলে যায়।

তদন্তকারীরা বিমানের ফ্লাইট কন্ট্রোল উপাদানগুলো পরীক্ষা করেছেন, তবে কোনো ত্রুটি খুঁজে পাননি। তারা দুর্ঘটনার কারণ জানতে সিমুলেটরের মাধ্যমে অবতরণের প্রক্রিয়াটি কয়েকবার পর্যবেক্ষণ করেছেন।

ভবিষ্যতে, নিরাপত্তা বোর্ড বিমানের ডানা তৈরির উপাদান, ল্যান্ডিং গিয়ার এবং ডানাগুলির সার্টিফিকেশন, অবতরণ কৌশল, পাইলট প্রশিক্ষণ, এবং জরুরি অবস্থার মোকাবিলার জন্য ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্টদের প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন বিষয় খতিয়ে দেখবে।

ডেল্টা এয়ারলাইন্স এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, যাত্রী ও ক্রুদের নিরাপত্তা তাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তারা কানাডার পরিবহন নিরাপত্তা বোর্ডের তদন্তে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করছে।

এই ঘটনা বিমান পরিবহন শিল্পের নিরাপত্তা এবং রক্ষণাবেক্ষণের গুরুত্বের বিষয়টি আরও একবার মনে করিয়ে দেয়।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *