অস্ট্রেলিয়ার নির্বাচনে ‘গণতন্ত্র সসেজ’ বিতর্কের জন্ম দিয়েছে উবার ইটস।
অস্ট্রেলিয়ায় আসন্ন নির্বাচনের দিন, খাদ্য সরবরাহকারী সংস্থা উবার ইটস ‘গণতন্ত্র সসেজ’ সরবরাহ করার ঘোষণা দিয়েছে। তবে তাদের এই পদক্ষেপে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে, কারণ ঐতিহ্যগতভাবে এই সসেজগুলো স্থানীয় স্কুল, চার্চ এবং বিভিন্ন কমিউনিটি হলগুলোতে নির্বাচনের দিন বিক্রি করা হয়, যা তাদের তহবিল সংগ্রহের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস।
‘গণতন্ত্র সসেজ’ আসলে কি? এটি হলো রুটির মধ্যে একটি সসেজ, যা অস্ট্রেলিয়ার নির্বাচন কেন্দ্রগুলোতে ভোটারদের জন্য পরিবেশন করা হয়। এটি শুধু একটি খাবার নয়, বরং স্থানীয় সম্প্রদায়ের জন্য অর্থ সংগ্রহের একটি উপায়। সাধারণত, স্থানীয় সংগঠনগুলো নির্বাচনের দিন এই সসেজ বিক্রি করে অর্থ সংগ্রহ করে থাকে, যা তাদের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে সাহায্য করে।
উবার ইটস-এর এই উদ্যোগে অনেকেই তাদের অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। তাদের মতে, একটি বহুজাতিক কোম্পানির এই ধরনের উদ্যোগ ঐতিহ্যকে খর্ব করে এবং স্থানীয় কমিউনিটির পরিবর্তে কর্পোরেট মুনাফার দিকে বেশি মনোযোগ দেয়। সামাজিক মাধ্যমে অনেকে এই পদক্ষেপকে ‘অস্ট্রেলীয় সংস্কৃতির পরিপন্থী’ হিসেবেও উল্লেখ করেছেন।
উবার ইটস অবশ্য জানিয়েছে, তারা এই সসেজ বিক্রির মাধ্যমে সংগৃহীত অর্থের একটি অংশ অস্ট্রেলিয়ান রেড ক্রস পার্টনারদের দান করবে। তারা নির্দিষ্ট কিছু শহরে এই পরিষেবা চালু করেছে, যেখানে প্রতিটি সসেজের জন্য প্রায় ১১.৬ অস্ট্রেলিয়ান ডলার (প্রায় ১,০০০ বাংলাদেশী টাকা) খরচ হবে। এই মূল্যের মধ্যে ডেলিভারি চার্জও অন্তর্ভুক্ত।
তবে, এই বিতর্কের মাঝেও ‘গণতন্ত্র সসেজ’-এর জনপ্রিয়তা এখনো তুঙ্গে। ২০১৬ সালে অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ডিকশনারি সেন্টার এটিকে বর্ষসেরা শব্দ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে, যা এই খাবারের সংস্কৃতিতে গভীর প্রভাবের প্রমাণ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অস্ট্রেলিয়ার সংস্কৃতিতে নির্বাচন এবং স্থানীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর। নির্বাচনের দিনটিতে সাধারণত বিভিন্ন ধরনের খাবারের স্টল বসে, যা স্থানীয়দের একত্রিত হওয়ার এবং একে অপরের প্রতি সমর্থন জানানোর সুযোগ করে দেয়। উবার ইটস-এর এই উদ্যোগ সেই ঐতিহ্যকে কতটা প্রভাবিত করবে, তা এখন দেখার বিষয়।
তথ্য সূত্র: The Guardian