মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ডেনমার্কের মধ্যে গ্রিনল্যান্ড নিয়ে উত্তেজনা বাড়ছে। ডেনমার্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রী লার্স লওক রাসমুসেন সম্প্রতি মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্সের বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, মিত্রদের সঙ্গে আলোচনার এই ধরনের ভাষা কাম্য নয়।
গ্রিনল্যান্ডে ডেনমার্কের ভূমিকা নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনার জবাবে তিনি এই মন্তব্য করেন। মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্স গ্রিনল্যান্ডে ডেনমার্কের বিনিয়োগ এবং সুরক্ষার অভাব নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
তিনি ইঙ্গিত দেন যে, যুক্তরাষ্ট্র গ্রিনল্যান্ডের নিরাপত্তা আরও ভালভাবে নিশ্চিত করতে পারে এবং হয়তো গ্রিনল্যান্ডকে ডেনমার্ক থেকে স্বাধীনতা দিতে পারে। এই অঞ্চলে রাশিয়া ও চীনের ক্রমবর্ধমান আগ্রহের প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপ বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ।
ডেনমার্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাসমুসেন জোর দিয়ে বলেন, ডেনমার্ক এরই মধ্যে আর্কটিক অঞ্চলের নিরাপত্তা বৃদ্ধিতে বেশি অর্থ বিনিয়োগ করেছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে প্রস্তুত।
তিনি উল্লেখ করেন, ডেনমার্ক ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। ডেনিশ প্রধানমন্ত্রী মেটে ফ্রেডেরিকসেনও ভাইস প্রেসিডেন্টের এই দাবির বিরোধিতা করে বলেছেন, ডেনমার্ক একটি নির্ভরযোগ্য মিত্র।
তিনি ইরাক ও আফগানিস্তানে মার্কিন সৈন্যদের সঙ্গে ডেনিশ সৈন্যদের অংশগ্রহণের কথা উল্লেখ করেন। গ্রিনল্যান্ড একটি স্ব-শাসিত ডেনিশ অঞ্চল, যা কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
এর উত্তরে রয়েছে আর্কটিক মহাসাগর, যা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কাছে সামরিক ও অর্থনৈতিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ। গ্রিনল্যান্ডের নেতারাও যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।
স্থানীয় আইনপ্রণেতারা নতুন সরকার গঠনের বিষয়ে একমত হয়েছেন এবং তারা যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব বিস্তারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার ঘোষণা দিয়েছেন।
এদিকে, ডেনমার্ক সরকার জানিয়েছে, তারা আর্কটিক অঞ্চলের নিরাপত্তা জোরদার করতে নতুন করে প্রায় ২.১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করছে।
এর মধ্যে তিনটি নতুন নৌ জাহাজ, দীর্ঘ-পাল্লার ড্রোন ও স্যাটেলাইট অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ১৯৫১ সালের একটি দ্বিপাক্ষিক প্রতিরক্ষা চুক্তির কথা উল্লেখ করে রাসমুসেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র চাইলে গ্রিনল্যান্ডে তাদের সামরিক উপস্থিতি আরও বাড়াতে পারে।
অন্যদিকে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের সময়েও গ্রিনল্যান্ডকে যুক্তরাষ্ট্রের অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা করা হয়েছিল। ট্রাম্প মনে করেন, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার জন্য গ্রিনল্যান্ড খুবই জরুরি।
কোটি কোটি ডলার বিনিয়োগ করেও গ্রিনল্যান্ডে ডেনমার্ক ভালো কাজ করেনি, এমন অভিযোগের জবাবে রাসমুসেন বলেন, তারা যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে এ ধরনের ভাষা আশা করেন না।
তথ্যসূত্র: আল জাজিরা