ডেনমার্কের এই স্কুলে কেন এত জনপ্রিয় শিল্পী তৈরি হয়?

ড্যানিশ সঙ্গীতের জগতে এক নতুন দিগন্ত: কোপেনহেগেন মিউজিক কনজারভেটরির সাফল্যের কাহিনী।

ইউরোপীয় সঙ্গীতের মানচিত্রে ডেনমার্কের রাজধানী কোপেনহেগেন এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। এর কারণ, শহরটির rthythmic মিউজিক কনজারভেটরিতে (RMC) তৈরি হওয়া একঝাঁক তরুণ শিল্পী, যারা তাদের ব্যতিক্রমী সঙ্গীত প্রতিভার মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে পরিচিতি লাভ করেছেন। এই কনজারভেটরি যেন আধুনিক অল্টারনেটিভ পপ সঙ্গীতের আঁতুড়ঘর।

সম্প্রতি, বিশ্বজুড়ে সঙ্গীত প্রেমীদের নজর কেড়েছে এমন কিছু শিল্পী, যাদের সৃষ্টিশীলতার কেন্দ্রবিন্দু এই RMC। এদের মধ্যে অন্যতম হলেন, ইরিকা দে কাসিয়ের, যিনি ইতিমধ্যেই ডুয়া লিপার মতো তারকার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। এছাড়াও, এখানকার প্রাক্তন শিক্ষার্থী মালিনা, অ্যাস্ট্রিড সোন, হেনিট মোটজফেল্ট, ক্লারিসা কানেলি, এবং ফাইন গ্লিন্ডভাদের মতো শিল্পীরা তাদের ব্যতিক্রমী সঙ্গীত শৈলী দিয়ে শ্রোতাদের মন জয় করেছেন।

এই কনজারভেটরির সাফল্যের পেছনে রয়েছে কিছু বিশেষত্ব। RMC-এর পাঠ্যক্রমে শিল্পীসত্তার বিকাশের উপর জোর দেওয়া হয়, যা “কুয়া” নামে পরিচিত। এখানে, শিক্ষার্থীরা তাদের তৈরি করা গান নিয়ে আলোচনা করে এবং একে অপরের কাজকে মূল্যায়ন করে।

এছাড়াও, শিক্ষকদের অবদান অনস্বীকার্য। শিক্ষক অ্যান্ডার্স প্যাজেলস জেনসেন এবং নিস বাইস্টেডের মতো অভিজ্ঞ ব্যক্তিরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গীতের কারিগরি দিক এবং আবেগগত গভীরতা বুঝতে সাহায্য করেন।

ডেনমার্কের সংস্কৃতিতেও এই কনজারভেটরির একটি বিশেষ স্থান রয়েছে। এখানে শিক্ষার পরিবেশ অত্যন্ত বন্ধুত্বপূর্ণ এবং সহযোগিতা মূলক। ডেনিশ সংস্কৃতিতে ‘জান্তেলোভেন’-এর ধারণা বিদ্যমান, যেখানে অহংকার বা বড়াই করাকে নিরুৎসাহিত করা হয়। এই সংস্কৃতি শিক্ষার্থীদের মধ্যে এক ধরনের নম্রতা তৈরি করে, যা তাদের সৃজনশীলতাকে আরও বিকশিত করতে সাহায্য করে।

RMC-এর পরিবেশও শিক্ষার্থীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কোপেনহেগেনের কেন্দ্র থেকে দূরে, হলমেন-এ অবস্থিত এই কনজারভেটরির আশেপাশে রয়েছে সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্য।

এখানে বিনামূল্যে পড়াশোনার সুযোগ রয়েছে, যা ডেনমার্কের উচ্চ কর কাঠামোর কারণে সম্ভব হয়েছে। এখানকার শিক্ষকরা সবসময় শিক্ষার্থীদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।

বর্তমানে, RMC-এর শিল্পীরা শুধুমাত্র ডেনমার্কেই নয়, আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও তাদের পরিচিতি তৈরি করছেন। জনপ্রিয় শিল্পী ডুয়া লিপা এবং কে-পপ ব্যান্ড নিউজিনস-এর মতো তারকারাও তাদের কাজের প্রশংসা করেছেন।

এই কনজারভেটরির সৃষ্টিশীল পরিবেশ এবং ব্যতিক্রমী পাঠ্যক্রম ভবিষ্যতে আরও অনেক প্রতিভাবান শিল্পী উপহার দেবে, এমনটাই আশা করা যায়।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *