ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের ওজন কমাতে গোপন পরামর্শ!

টাইপ ২ ডায়াবেটিস: ওজন কমানোর সঠিক পথ ও বিশেষজ্ঞের পরামর্শ। বাংলাদেশে দিন দিন বাড়ছে ডায়াবেটিসের প্রকোপ।

এই রোগের সঙ্গে ওজন বেড়ে যাওয়ারও একটা সম্পর্ক রয়েছে। ওজন কমাতে পারলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আনা সহজ হয়, কমে আসে স্বাস্থ্যঝুঁকি।

সম্প্রতি, একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, ড. জেনাহ সিওয়াক, এই বিষয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিয়েছেন। তাঁর মতে, শুধু ডায়েট বা ওষুধে ভরসা না করে সামগ্রিক জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনা প্রয়োজন।

আসুন, জেনে নিই তাঁর গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শগুলো।

ড. সিওয়াক একজন স্থূলতা বিশেষজ্ঞ। তাঁর মতে, ওজন কমানোর ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো সঠিক খাদ্যাভ্যাস।

কোনো একটি নির্দিষ্ট ডায়েট অনুসরণ করার চেয়ে খাবারের গুণগত মান উন্নত করা জরুরি। খাবারের তালিকায় শস্য, সবজি, ফল, এবং স্বাস্থ্যকর প্রোটিন রাখতে হবে।

সেই সঙ্গে ফাস্ট ফুড ও চিনিযুক্ত খাবার বর্জন করতে হবে। হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে মেডিটেরিয়ান ও ড্যাশ ডায়েটের মতো স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস অনুসরণ করা যেতে পারে।

তবে, এমন ডায়েট বেছে নিতে হবে যা দীর্ঘ সময় ধরে অনুসরণ করা সম্ভব। প্রয়োজনে একজন পুষ্টিবিদের পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে।

ওজন কমানোর ক্ষেত্রে ঘুমের গুরুত্ব অপরিসীম। পর্যাপ্ত ঘুম না হলে শরীরে ক্ষুধা সৃষ্টিকারী হরমোন বাড়ে, ফলে বেশি খাবার খাওয়ার প্রবণতা তৈরি হয়।

ঘুমের সমস্যা দূর করতে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।

ডায়াবেটিস ও ওজন নিয়ন্ত্রণে ওষুধ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ওজেম্পিক, ওয়েগোভি, এবং মাউঞ্জারোর মতো ওষুধগুলো এক্ষেত্রে সাহায্য করতে পারে।

এগুলো শরীরে ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়ায় এবং ক্ষুধা কমায়। তবে, ওষুধ সবসময় জীবনযাত্রার পরিবর্তনের পরিপূরক হিসেবে কাজ করে, এটা মনে রাখতে হবে।

মানসিক স্বাস্থ্যও এক্ষেত্রে খুব গুরুত্বপূর্ণ। ওজন কমানোর চেষ্টা করার সময় অনেক ধরণের মানসিক চাপ আসতে পারে।

হতাশ হওয়া বা শরীরের গঠন নিয়ে দুশ্চিন্তা হওয়াটা স্বাভাবিক। মানসিক স্বাস্থ্যকে গুরুত্ব দিতে হবে এবং প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞের সাহায্য নিতে হবে।

বন্ধু, পরিবার বা সাপোর্ট গ্রুপের মাধ্যমে মানসিক সমর্থন পাওয়া যেতে পারে।

ওজন কমানো একটি সময়সাপেক্ষ প্রক্রিয়া। দ্রুত ওজন কমানোর চেষ্টা না করে ধীরে ধীরে স্বাস্থ্যকর উপায়ে ওজন কমাতে হবে।

প্রতি সপ্তাহে শরীরের ওজনের ১ শতাংশের বেশি কমানো উচিত নয়। ওজন কমার পাশাপাশি, শরীরের অন্যান্য পরিবর্তনগুলোকেও গুরুত্ব দিতে হবে, যেমন – রক্তের শর্করার মাত্রা, কোলেস্টেরল এবং লিভারের কার্যকারিতা।

ডায়াবেটিস নিরাময়ের ক্ষেত্রে জেনেটিক বা বংশগত কারণও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যাদের পরিবারে ডায়াবেটিসের ইতিহাস আছে, তাদের ক্ষেত্রে এই রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

তবে, স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করে এই রোগের ঝুঁকি কমানো যেতে পারে।

সবশেষে, মনে রাখতে হবে, ডায়াবেটিস একটি জটিল রোগ এবং এর চিকিৎসা পদ্ধতি সবার জন্য একই রকম নাও হতে পারে।

তাই, একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সঠিক খাদ্যাভ্যাস, ব্যায়াম এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়া উচিত।

তথ্য সূত্র: হেলথলাইন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *