দিদি’র মামলায় রায়: ব্যবসায়িক ভবিষ্যৎ কোন দিকে?

শিরোনাম: ডিডির (Diddy) দুর্দিনে: ব্যবসার ভবিষ্যৎ কী?

নব্বইয়ের দশকে মিউজিক জগতে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করা মার্কিন র‍্যাপার ও প্রযোজক শন কম্বস, যিনি ডিডি নামেই বেশি পরিচিত, বর্তমানে কঠিন সময় পার করছেন। সম্প্রতি যৌন ব্যবসার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর তাঁর বিশাল সাম্রাজ্যের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

এক সময়ের প্রভাবশালী এই সঙ্গীত তারকার ব্যবসা-বাণিজ্য এখন টালমাটাল অবস্থায়।

ডিডির বিরুদ্ধে আনা গুরুতর অভিযোগগুলোর মধ্যে তিনি যদিও কয়েকটি থেকে মুক্তি পেয়েছেন, তবে তাঁর ব্যবসায়িক জীবনে এর গভীর প্রভাব পড়েছে। ২০১৬ সালে তাঁর বিরুদ্ধে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে, যা তাঁর ভাবমূর্তিকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।

এর ফলস্বরূপ, নিউইয়র্ক সিটি তাঁর সম্মানসূচক চাবি ফিরিয়ে নেয়, এমনকি হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ও তাঁকে দেওয়া সম্মানসূচক ডিগ্রি বাতিল করে।

ডিডির ব্যবসায়িক সাম্রাজ্যের দিকে তাকালে দেখা যায়, তাঁর অনেক গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ এরই মধ্যে মুখ থুবড়ে পড়েছে। ২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠিত ‘রিভোল্ট টিভি’ থেকে তিনি সরে দাঁড়িয়েছেন এবং পরে এর মালিকানা পুরোপুরি ত্যাগ করেছেন।

একসময় জনপ্রিয় ফ্যাশন ব্র্যান্ড ‘শন জন’ এখন ম্যাকির তাক থেকে অদৃশ্য হয়ে গেছে। এছাড়া, তাঁর সঙ্গে হুলু’র একটি চুক্তিও বাতিল হয়েছে বলে জানা যায়।

তবে, এত প্রতিকূলতার মাঝেও ডিডির মিউজিক ক্যাটালগ এখনো বহাল আছে। তাঁর পুরনো রেকর্ডগুলো বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে শোনা যাচ্ছে, তবে তাঁর পুরনো খ্যাতি ফিরিয়ে আনা কঠিন হয়ে পড়েছে।

২০২৩ সালে প্রকাশিত তাঁর অ্যালবাম ‘দ্য লাভ অ্যালবাম: অফ দ্য গ্রিড’ সমালোচকদের প্রশংসা পেলেও, ডিডির বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলো তাঁর সাফল্যের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বাদ বয় রেকর্ডস (Bad Boy Records), যা একসময় ‘নটরিয়াস বি.আই.জি.’, ‘ফেইথ ইভান্স’, ‘মেজ’ এর মতো শিল্পীদের মাধ্যমে পরিচিতি লাভ করেছিল, সেই রেকর্ড লেবেলটিও বর্তমানে বেশ কঠিন সময় পার করছে।

ডিডির বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের কারণে লেবেলটি নতুন কোনো বড় ঘোষণা দিতে পারছে না।

ডিডির বিরুদ্ধে শারীরিক ও যৌন নির্যাতনের শিকার হওয়া কয়েকজন ব্যক্তি মামলা করেছেন। এর মধ্যে তাঁর সাবেক প্রেমিকা ক্যাসির সঙ্গে তিনি ইতিমধ্যে ২ কোটি ডলারের একটি আপস করেছেন। যদিও, তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা বেশিরভাগ মামলা এখনো বিচারাধীন।

ডিডির ব্যবসায়িক ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকলেও, তাঁর সঙ্গীত এখনো শ্রোতাদের মধ্যে জনপ্রিয়। স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মে তাঁর গানের চাহিদা বেড়েছে, তবে এর থেকে শিল্পীর আয়ের পরিমাণ খুব সামান্য।

অন্যদিকে, ১৯৯৮ সালে প্রতিষ্ঠিত ‘শন জন’ ব্র্যান্ডটি এখন প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে।

২০২৩ সালে ডিডি ‘এম্পাওয়ার গ্লোবাল’ নামে একটি অনলাইন মার্কেটপ্লেস চালু করেছিলেন, যেখানে কৃষ্ণাঙ্গ ব্যবসায়ীদের সহায়তা করার কথা ছিল।

কিন্তু, তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের কারণে অনেক ব্র্যান্ড এই প্ল্যাটফর্ম থেকে তাদের সম্পর্ক ছিন্ন করে।

ডিডির ব্যবসার ভবিষ্যৎ এখন অনেকটাই অনিশ্চিত। তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলো তাঁর খ্যাতি ও ব্যবসায়িক সাফল্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে, যা কাটিয়ে ওঠা তাঁর জন্য কঠিন হতে পারে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *