সংগীত শিল্পী ক্যাসি’র সাক্ষ্যগ্রহণের মধ্য দিয়ে ডিডি’র বিরুদ্ধে যৌন পাচার মামলার বিচারকার্য শুরু হয়েছে। মার্কিন র্যাপ সংগীতের পরিচিত মুখ, শন ‘ডিডি’ কম্বসের বিরুদ্ধে নারীদের যৌন নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে।
নিউইয়র্কের একটি আদালতে এই বিচার চলছে, যেখানে ডিডি’র বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে নারীদের মাদক খাইয়ে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করতে বাধ্য করার অভিযোগ আনা হয়েছে।
সোমবার (স্থানীয় সময়) আদালতের শুনানিতে প্রসিকিউটররা জানান, ডিডি দীর্ঘদিন ধরে তার প্রভাব খাটিয়ে নারীদের সঙ্গে এমন নৃশংস আচরণ করেছেন। এই মামলায় অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী হতে যাচ্ছেন সংগীত শিল্পী ক্যাসি, যাঁর আসল নাম ক্যাসান্ড্রা ভেন্টুরা।
ডিডি’র বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ এনে তিনি এর আগে একটি মামলাও করেছিলেন।
২০২৩ সালে ক্যাসি’র করা মামলার পরেই ডিডি’র বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ আসতে শুরু করে। ২০১৬ সালে লস অ্যাঞ্জেলের একটি হোটেলে ডিডি ক্যাসিকে মারধর করেন, এমন একটি ভিডিওচিত্রও গত বছর প্রকাশিত হয়, যা ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়।
সিএনএন সেই ভিডিও প্রচার করার পর ডিডি’কে ক্ষমা চাইতে হয়।
আদালতে উপস্থাপন করা ভিডিওতে দেখা যায়, ডিডি একটি সাদা তোয়ালে পরে ক্যাসিকে মারধর করছেন, লাথি মারছেন এবং টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যাচ্ছেন। হোটেলের এক নিরাপত্তা কর্মী ইসরায়েল ফ্লোরেজ আদালতে সাক্ষ্য দেন।
তিনি জানান, ঘটনার সময় এক নারীর চিৎকার শুনে তিনি সেখানে যান। ডিডিকে চেয়ারে বসে “শয়তানের মতো দৃষ্টি” নিয়ে তাকিয়ে থাকতে দেখেন তিনি।
ফ্লোরেজকে ডিডি’র পক্ষ থেকে ঘুষ দেওয়ার চেষ্টা করা হলেও তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন। ফ্লোরেজ ডিডি’কে তার কক্ষে ফিরে যেতে বলেন।
সহকারী প্রসিকিউটর এমিলি জনসন আদালতে জানান, ডিডি প্রায়ই ক্যাসিকে মারধর করতেন এবং সামান্য কারণেই করতেন। এমনকি, ক্যাসি যদি যৌন সম্পর্ক স্থাপনে রাজি না হতেন, তবে তার ক্যারিয়ার ধ্বংস করে দেওয়ার হুমকিও দিতেন ডিডি।
জনসন আরও বলেন, ডিডি অন্য নারীদেরও যৌন নির্যাতন করেছেন। এদের মধ্যে ‘জেনি’ নামের এক নারীর প্রতি ডিডি’র আক্রমণের অভিযোগও রয়েছে।
ক্যাসির করা মামলার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বিষয়টি মীমাংসা হয়ে গেলেও, এর পরে আরও অনেক নারী ডিডি’র বিরুদ্ধে একই ধরনের অভিযোগ এনেছেন। ডিডি’র আইনজীবী টেনি গেরাগোস শুনানিতে অভিযোগ করেন, ডিডি’র বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো মূলত অর্থ আদায়ের উদ্দেশ্যে করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ডিডি’র আচরণ অনেকের কাছে “অশোভন” মনে হতে পারে, তবে তার বিরুদ্ধে এই ধরনের কোনো অভিযোগ আনা হয়নি।
ডিডি বর্তমানে ব্রুকলিনের একটি কারাগারে বন্দী আছেন। যদি তিনি দোষী সাব্যস্ত হন, তবে তার ১৫ বছর থেকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস