ড্রিডি কম্বসের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যে ক্যাসি ভেনচুরার বিস্ফোরক অভিযোগ!

বিখ্যাত মার্কিন র‍্যাপার ও সঙ্গীত প্রযোজক শন ‘ডিডি’ কম্বস-এর বিরুদ্ধে ওঠা গুরুতর অভিযোগের শুনানি চলছে। তাঁর প্রাক্তন প্রেমিকা ক্যাসান্ড্রা ভেনচুরা, যিনি পেশাগতভাবে ‘ক্যাসি’ নামেই পরিচিত, আদালতে হাজির হয়ে ডিডির বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ এনেছেন।

ভেনচুরার সাক্ষ্য অনুযায়ী, ডিডি দীর্ঘদিন ধরে তাঁর ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালিয়েছেন এবং তাঁকে যৌনকর্মে লিপ্ত হতে বাধ্য করেছেন।

শুনানিতে ভেনচুরা জানান, প্রায় দুই দশক আগে তাঁর সঙ্গে ডিডির সম্পর্ক শুরু হয়। শুরুতে তাঁদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল। ২০০৬ সালে তিনি ডিডির কোম্পানি ‘ব্যাড বয় রেকর্ডস’-এর সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হন।

এরপর মায়ামির একটি নৌকার পার্টিতে তাঁদের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হয়। ভেনচুরা বলেন, ডিডির সঙ্গে সময় কাটানোটা অন্যদের কাছে ঈর্ষণীয় ছিল, কারণ তিনি তখন তাঁর ক্যারিয়ারের নিয়ন্ত্রক ছিলেন।

তবে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ডিডির কর্তৃত্বপরায়ণ ও আগ্রাসী রূপ প্রকাশ হতে শুরু করে।

আদালতে দেওয়া বক্তব্যে ভেনচুরা জানান, ডিডি তাঁর পোশাক থেকে শুরু করে কার সঙ্গে কথা বলবেন, সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করতেন। সামান্য ভুল হলেই তিনি মারধর করতেন।

ভেনচুরা আরও বলেন, “তিনি আমাকে মুখে আঘাত করতেন। আমি যদি কোনো বিষয়ে ভিন্নমত প্রকাশ করতাম, তাহলে তিনি আমার জিনিসপত্র কেড়ে নিতেন, এমনকি বাড়ি থেকেও বের করে দিতেন।” নির্যাতনের ফলস্বরূপ তাঁর শরীরে অনেক আঘাতের চিহ্ন ছিল।

অভিযোগ অনুযায়ী, ডিডি ‘ফ্রিক অফস’ নামে পরিচিত কিছু যৌন অনুষ্ঠানে ভেনচুরাকে অংশ নিতে বাধ্য করতেন। এই অনুষ্ঠানে ডিডি অন্য পুরুষদের সঙ্গে ভেনচুরার যৌন মিলন দেখতেন।

ভেনচুরা জানান, এই ধরনের অনুষ্ঠানগুলো তাঁর জন্য ছিল অত্যন্ত অপমানজনক ও কষ্টের। তিনি আরও বলেন, “ফ্রিক অফস যেন একটা কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। এর থেকে মুক্তি পাওয়ার কোনো উপায় ছিল না।”

আদালতে পেশ করা একটি ভিডিওতে দেখা যায়, ২০১৬ সালে লস অ্যাঞ্জেলের একটি হোটেলে ডিডি ভেনচুরাকে মারধর করছেন। ভেনচুরা জানান, একবার তিনি ‘ফ্রিক অফস’ থেকে বেরিয়ে যেতে চাইলে ডিডি তাঁকে মারধর করেন এবং তাঁর জিনিসপত্র কেড়ে নেন।

শুনানিতে ভেনচুরার পাশাপাশি, ড্যানিয়েল ফিলিপ নামে অপর এক ব্যক্তিও সাক্ষ্য দেন। তিনি জানান, ২০১২ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে বেশ কয়েকবার ডিডি তাঁকে অর্থের বিনিময়ে ভেনচুরার সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করতে বলেন, যেখানে ডিডি উপস্থিত ছিলেন।

ডিডির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলোর মধ্যে রয়েছে— মানব পাচার, যৌন ব্যবসা এবং অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাঁর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে।

এই মামলার রায় মার্কিন বিচারব্যবস্থার ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হবে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *