বিখ্যাত র্যাপ সঙ্গীত শিল্পী শন কম্বস, যিনি ‘ডিডি’ নামেই পরিচিত, তার বিরুদ্ধে ওঠা যৌন নির্যাতনের অভিযোগের বিচার প্রক্রিয়া এখন শেষের পথে।
নিউ ইয়র্কের ম্যানহাটন ফেডারেল আদালতে এই মামলার বিচার চলছে এবং শুক্রবার এখানে জুরি নির্বাচনের চূড়ান্ত ধাপ সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল।
ডিডি’র বিরুদ্ধে র্যাকেটিয়ারিং এবং যৌন ব্যবসার অভিযোগ আনা হয়েছে।
আদালতে বিচারক এবং আইনজীবীরা মিলিত হয়ে ৪৫ জন সম্ভাব্য জুরি সদস্যের মধ্য থেকে ১২ জন জুরি এবং ৬ জন বিকল্প সদস্য বাছাই করার প্রক্রিয়া শুরু করেছেন।
এই জুরিরাই আগামী দুই মাস ধরে ডিডির বিচার শুনবেন।
গত কয়েকদিন ধরে সম্ভাব্য জুরিদের নানা প্রশ্ন করে তাদের নিরপেক্ষতা যাচাই করা হয়েছে।
এমনকি যৌন কার্যকলাপের কিছু ‘অস্পষ্ট’ ভিডিও দেখেও তারা যেন মামলার বিষয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেন, সে বিষয়টিও নিশ্চিত করা হয়েছে।
ডিডি, যিনি পেশাগত জীবনে ‘ব্যাড বয় রেকর্ডস’-এর প্রতিষ্ঠাতা, সেপ্টেম্বরে গ্রেপ্তার হওয়ার পর নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন।
বর্তমানে তিনি ব্রুকলিনের একটি ফেডারেল কারাগারে বন্দী রয়েছেন।
অভিযোগ প্রমাণিত হলে, ডিডিকে কমপক্ষে ১৫ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে, এমনকি যাবজ্জীবন কারাদণ্ডও হতে পারে।
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ডিডি ২০০৪ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে তাঁর খ্যাতি ও ক্ষমতা ব্যবহার করে নারীদের ওপর যৌন নির্যাতন করেছেন।
এর মধ্যে ছিল ‘ফ্রিক অফস’ নামে পরিচিত ঘটনা, যেখানে নারীদের জোর করে পুরুষ যৌনকর্মীদের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করতে বাধ্য করা হতো এবং ডিডি সেই দৃশ্য ভিডিও করতেন।
অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, ডিডি তাঁর শিকারদের মারধর, শ্বাসরোধ এবং চুল ধরে টেনে নিয়ে যেতেন।
এমনকি একবার তিনি এক নারীকে বারান্দা থেকে ঝুলিয়েছিলেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
ডিডির আইনজীবীরা বলছেন, প্রসিকিউটররা সম্মতিসূচক যৌন সম্পর্ককে অপরাধ হিসেবে গণ্য করার চেষ্টা করছেন।
তারা অবশ্য স্বীকার করেছেন যে ডিডি বিভিন্ন মাদকদ্রব্য সেবন করতেন, তবে তিনি চিকিৎসা নিয়েছেন।
ডিডির বিরুদ্ধে প্রধান প্রমাণ হলো ২০১৬ সালে একটি হোটেলে তাঁর দীর্ঘদিনের বান্ধবীকে মারধরের ভিডিও।
গত বছর সিএনএনে এই ভিডিওটি প্রচারিত হওয়ার পর ডিডি ক্ষমা চেয়ে বলেছিলেন, ‘ভিডিওতে আমার কাজের জন্য আমি সম্পূর্ণভাবে দায়ী।
কাজটি করার সময় আমি যেমন ঘৃণা বোধ করেছি, এখনো তেমনই করছি।’
সোমবার থেকে বুধবার পর্যন্ত বিচারক অরুণ সুব্রামনিয়ানের জিজ্ঞাসাবাদের সময় অনেক সম্ভাব্য জুরির মুখেই ডিডির বান্ধবীকে মারধরের ভিডিওটির কথা শোনা গেছে।
এদের মধ্যে কয়েকজনকে নিরপেক্ষ না হওয়ার কারণে জুরি প্যানেল থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস