বিখ্যাত মার্কিন র্যাপার শন “ডিডি” কম্বসের বিরুদ্ধে যৌন পাচার ও র্যাকেটিয়ারিংয়ের অভিযোগে নিউইয়র্কের আদালতে বিচার শুরু হয়েছে। এই মামলার প্রথম দিনের শুনানিতে ডিডির বিরুদ্ধে নারীদের ওপর বছরের পর বছর ধরে চালানো নির্যাতনের ভয়াবহ চিত্র উঠে এসেছে।
আদালতের কার্যক্রম শুরু হয় গত সোমবার, যেখানে জুরি নির্বাচন, প্রাথমিক বক্তব্য এবং সাক্ষীদের জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়।
ডিডি, যিনি একাধারে র্যাপার, সঙ্গীতশিল্পী এবং ‘ব্যাড বয় রেকর্ডস’-এর প্রতিষ্ঠাতা, বর্তমানে ফেডারেল হেফাজতে রয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলোর মধ্যে রয়েছে যৌন পাচার, জোরপূর্বক শ্রম, এবং পতিতাবৃত্তির উদ্দেশ্যে নারী পাচার।
অভিযোগ প্রমাণিত হলে, ডিডির ১৫ বছর থেকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে।
মামলার শুনানিতে উঠে আসে ডিডির প্রাক্তন প্রেমিকা ও সঙ্গীতশিল্পী ক্যাসাান্ড্রা ভেন্টুরার (যিনি ‘ক্যাসি’ নামেই পরিচিত) নির্যাতনের একটি ভিডিও, যা ২০১৬ সালের। ভিডিওতে দেখা যায়, একটি হোটেলের লিফটের ভেতরে ডিডি ক্যাসিকে ধাক্কা মেরে মাটিতে ফেলে দিচ্ছেন এবং লাথি মারছেন।
এরপর তিনি ক্যাসিকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যান।
আদালতে সাক্ষ্য দেন লস অ্যাঞ্জেলেস পুলিশের এক কর্মকর্তা। ২০১৬ সালে তিনি ইন্টারকন্টিনেন্টাল লস অ্যাঞ্জেলেস-এর নিরাপত্তা প্রহরী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি জানান, এক নারীর কাছ থেকে সাহায্যের জন্য ফোন পাওয়ার পর তিনি ঘটনাস্থলে যান এবং সেখানে ক্যাসি ও ডিডিকে দেখতে পান।
ওই সময় ক্যাসিকে বিধ্বস্ত অবস্থায় দেখা যায়।
শুনানিতে আরও জানা যায়, ডিডি তাঁর প্রভাব খাটিয়ে নারীদের যৌন নির্যাতনের শিকার করতেন। সরকারি কৌঁসুলিরা জানান, ডিডি ‘ফ্রিক-অফ’ নামে পরিচিত যৌন পার্টিগুলোতে জড়িত ছিলেন, যেখানে মাদক ব্যবহারের পাশাপাশি একাধিক যৌনকর্মীও উপস্থিত থাকতেন।
এইসব ঘটনার শিকার নারীদের ব্ল্যাকমেল করার জন্য ভিডিও ধারণ করা হতো বলেও অভিযোগ আনা হয়েছে।
ডিডির আইনজীবী অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি জানান, ডিডির সঙ্গে নারীদের সম্পর্ক ছিল পারস্পরিক সম্মতির ভিত্তিতে এবং তাঁদের মধ্যে কোনো ধরনের নির্যাতন হয়নি।
আইনজীবীর দাবি, অভিযোগকারীরা মূলত আর্থিক সুবিধার জন্য এমনটা করছেন।
আদালতে দ্বিতীয় দিনের শুনানি মঙ্গলবার (গতকাল) শুরু হয়। যেখানে ক্যাসিকে জেরা করার কথা রয়েছে। এছাড়া, ডিডির আরও কয়েকজন অভিযোগকারীর সাক্ষ্যগ্রহণেরও সম্ভাবনা রয়েছে।
বিচার প্রক্রিয়াটি প্রায় দুই মাস ধরে চলতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আদালতের কার্যক্রম সরাসরি সম্প্রচারিত হচ্ছে না এবং ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াকেও আদালত কক্ষে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়নি।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা