দিয়েগো জোতার মৃত্যু: শোকের ছায়া, ফুটবল বিশ্বে নেমে এল নীরবতা!

লিভারপুলের ফুটবলার ডিয়োগো জোটা: মাঠ থেকে বিদায়, শোকের ছায়া।

ফুটবল বিশ্ব হারালো এক উজ্জ্বল নক্ষত্রকে। পর্তুগালের তরুণ ফুটবলার ডিয়োগো জোটা, যিনি সম্প্রতি এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় তার ভাইয়ের সঙ্গে অকালে প্রাণ হারিয়েছেন। এই খবরে শোকস্তব্ধ হয়ে পড়েছে পুরো ফুটবল জগৎ, বিশেষ করে লিভারপুল এবং তার সমর্থকেরা।

জোটার আকস্মিক প্রয়াণে শুধু একজন প্রতিভাবান খেলোয়াড়কেই হারানো নয়, বরং হারিয়েছে একজন লড়াকু, নিবেদিত প্রাণ এবং মানবিক মানুষকে।

জোটার খেলোয়াড়ি জীবনের দিকে তাকালে তার কঠোর পরিশ্রম এবং দলের প্রতি ভালোবাসার প্রমাণ পাওয়া যায়। মাঠে তার উপস্থিতি ছিল সবসময়ই উজ্জীবিত, যা দলের খেলোয়াড় ও সমর্থকদের অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।

২০১৬ সালে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ থেকে তিনি যখন ইংলিশ ক্লাব উলভারহ্যাম্পটন ওয়ান্ডারার্সে যোগ দেন, তখন অনেকেই অবাক হয়েছিলেন। কারণ, সেই সময়ে উলভারহ্যাম্পটন দ্বিতীয় বিভাগে খেলত। কিন্তু জোটা ছিলেন আত্মবিশ্বাসী এবং নিজের প্রতি অবিচল।

তিনি প্রমাণ করেছেন, কঠোর পরিশ্রম এবং একাগ্রতা থাকলে যেকোনো কিছুই জয় করা সম্ভব। পরবর্তীতে, তিনি লিভারপুলে যোগ দেন এবং অল্প সময়ের মধ্যেই দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হয়ে ওঠেন।

২০২২ সালের অক্টোবরে ম্যানচেস্টার সিটির বিরুদ্ধে একটি ম্যাচে জোটার লড়াকু মনোভাব বিশেষভাবে চোখে পড়ে। সেই ম্যাচে যদিও তিনি কোনো গোল করতে পারেননি, কিন্তু পুরো ১০০ মিনিট ধরে তিনি ছিলেন অবিরাম।

প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়দের সঙ্গে বলের জন্য লড়াই করেছেন, এবং দলের জয়ের জন্য ছিলেন নিবেদিত। এমনকি ম্যাচের শেষ মুহূর্তে তিনি আহত হন, যার কারণে বিশ্বকাপে খেলার স্বপ্নও তার পূরণ হয়নি।

জোটার লড়াই শুধু মাঠের খেলায় সীমাবদ্ধ ছিল না। মাঠের বাইরেও তিনি ছিলেন একজন ভালো মানুষ। সতীর্থ এবং সমর্থকদের কাছে তিনি ছিলেন অত্যন্ত প্রিয়।

মাঠের বাইরে তার হাসিখুশি এবং মিশুক স্বভাব ছিল সকলের কাছে অনুকরণীয়। লিভারপুলের সমর্থকেরা তাকে ভালোবেসে ‘জোটা’ নামেই ডাকতেন।

লিভারপুলের সঙ্গে জোটার সম্পর্ক ছিল গভীর। লিভারপুল শহরটিও যেন তার আত্মার আত্মীয় ছিল। এই শহরের মানুষগুলোর মধ্যেও ছিল লড়াই করার মানসিকতা।

১৯৮১ সালের দাঙ্গার সময় থেকে শুরু করে ১৯৮৯ সালের হিলসবোরো ট্র্যাজেডি পর্যন্ত, লিভারপুল শহর অনেক কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছে। জোটা যেন তাদেরই একজন ছিলেন, যিনি সবসময় লড়ে গেছেন।

জোটার প্রয়াণে শুধু ফুটবল বিশ্ব নয়, শোকাহত তার পরিবার, বন্ধু এবং শুভাকাঙ্ক্ষীরা। পর্তুগালের গন্ডোমারে তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে।

এই শোক কাটিয়ে ওঠা সহজ নয়। তবে, জোটা তার কর্মের মাধ্যমে সকলের হৃদয়ে অমর হয়ে থাকবেন।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *