ডিফকে হারিয়ে সেমিফাইনালে চেলসির মুখোমুখি, কিভাবে ঘটল এই অঘটন?

শিরোনাম: অপ্রত্যাশিত চমক: ইউরোপের সেমিফাইনালে জায়ান্ট চেলসির মুখোমুখি অপেক্ষাকৃত দুর্বল দল ডjurgården

ফুটবল বিশ্বে প্রায়ই এমন কিছু ঘটনা ঘটে যা কল্পনার বাইরে। এবার তেমন এক ঘটনার সাক্ষী হতে চলেছে ইউরোপ। অপেক্ষাকৃত দুর্বল দল সুইডেনের Djurgården পৌঁছে গেছে ইউরোপা কনফারেন্স লিগের সেমিফাইনালে, যেখানে তাদের প্রতিপক্ষ হিসেবে রয়েছে ইংলিশ ক্লাব চেলসি। ফুটবলপ্রেমীদের জন্য এটি সত্যিই একটি অপ্রত্যাশিত এবং উত্তেজনাপূর্ণ মুহূর্ত।

সুইডেনের ক্লাব Djurgården-এর এই অসাধারণ পথচলা শুরু হয়েছিল বাছাইপর্ব থেকে। তারা একের পর এক বাধা পেরিয়ে গ্রুপ পর্বে নিজেদের জায়গা করে নেয়। গ্রুপ পর্বের খেলা শেষে নকআউট পর্বে তাদের পারফরম্যান্স ছিল আরও উজ্জ্বল। অস্ট্রিয়ার র‍্যাপিড ভিয়েনাকে ৪-১ গোলে হারিয়ে তারা সেমিফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে।

এই জয়ের পর Djurgården-এর ক্রীড়া পরিচালক বসি অ্যান্ডারসন-এর চোখেমুখে ছিল বাঁধভাঙা আনন্দ। তিনি বলেন, “আমি খুবই গর্বিত। চেলসি, রিয়াল বেটিস, ফিওরেন্তিনার মতো দলের সঙ্গে সেমিফাইনালে Djurgården! এটা অবিশ্বাস্য।”

ফুটবলের ইতিহাসে চেলসি একটি সুপরিচিত নাম। তারা ইউরোপের অন্যতম সেরা ক্লাব হিসেবে পরিচিত। তাদের খেলোয়াড় এবং ক্লাবের বাজেট Djurgården-এর থেকে অনেক বেশি।

বাজার মূল্যের হিসেবে Djurgården-এর পুরো দলের দাম যেখানে প্রায় ১৮ মিলিয়ন পাউন্ড (বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ২৫০ কোটি টাকার মতো), সেখানে চেলসির অন্যতম খেলোয়াড় কোল পালমারের দামই প্রায় এর সাত গুণ। স্বাভাবিকভাবেই, মাঠের লড়াইয়ে দুই দলের মধ্যে বিস্তর পার্থক্য থাকার কথা।

কিন্তু কনফারেন্স লিগ নামক এই প্রতিযোগিতাই সম্ভবত সেই সুযোগ করে দিয়েছে অপেক্ষাকৃত ছোট দলগুলোকে, যেখানে তারা তাদের সামর্থ্য প্রমাণ করতে পারবে।

Djurgården-এর এই সাফল্যের পেছনে রয়েছে তাদের দৃঢ় মনোবল এবং মাঠের লড়াইয়ে সেরাটা উজাড় করে দেওয়ার মানসিকতা। ক্লাবটি এই মৌসুমে কনফারেন্স লিগ থেকে ১০ মিলিয়ন পাউন্ডের বেশি আয় করতে পারে।

এই টুর্নামেন্ট তাদের সমর্থকদের জন্য এনে দিয়েছে এক দারুণ আনন্দ। খেলোয়াড় এবং সমর্থকরা সবাই একটি অবিস্মরণীয় অভিজ্ঞতার সাক্ষী হতে চলেছে।

তবে, সেমিফাইনালের আগে Djurgården-কে কিছু কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হচ্ছে। দলের কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়, যেমন—ওস্কার ফালেনিয়াস এবং নিনো জিউজেল, ইনজুরির কারণে মাঠের বাইরে রয়েছেন।

এছাড়াও, দলের কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়কে এই টুর্নামেন্টের জন্য নিবন্ধন করা হয়নি। দলের কোচ ইয়ানি হনকাভারার জন্য সেরা দল নির্বাচন করা এখন বেশ কঠিন।

তিনি জানিয়েছেন, চেলসি খুবই সুসংগঠিত একটি দল। তাদের আক্রমণ যেমন শক্তিশালী, তেমনি রক্ষণও বেশ জমাটবদ্ধ। তাই, তাদের বিপক্ষে ভালো ফল করতে হলে নিজেদের সেরাটা দিতে হবে।

Djurgården-এর খেলোয়াড়দের মধ্যে জাপানি ডিফেন্ডার কেইতা কোসুগি এবং নরওয়েজিয়ান মিডফিল্ডার টোবিয়াস গুলিকসেন-এর পারফরম্যান্স নজর কাড়ার মতো। কোসুগি সম্প্রতি শোনান বেলমারে থেকে এসেছেন এবং তিনি দলের রক্ষণে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন।

অন্যদিকে, গুলিকসেন-এর অসাধারণ টেকনিক প্রতিপক্ষকে সমস্যায় ফেলতে সক্ষম।

সবকিছু বিবেচনা করে, চেলসির বিপক্ষে Djurgården-এর জয় সহজ হবে না। তবে, ফুটবলে অঘটন নতুন কিছু নয়। Djurgården-এর খেলোয়াড়রা যদি তাদের সেরাটা দিতে পারে, তাহলে চমক লাগানো সম্ভব।

এখন দেখার বিষয়, তারা এই কঠিন লড়াইয়ে কেমন করে।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *