যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্রেটিক পার্টির অভ্যন্তরীণ কোন্দল: বিতর্কের কেন্দ্রে কেন মার্টিন।
যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্রেটিক ন্যাশনাল কমিটির (DNC) নতুন চেয়ারম্যান কেন মার্টিন দলের নেতৃত্ব গ্রহণের পর থেকেই নানা বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন। দলের ভেতরে আর্থিক সংকট, নেতাদের মধ্যে মতবিরোধ এবং কৌশলগত দুর্বলতা সহ বিভিন্ন অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।
সম্প্রতি মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন-এর এক প্রতিবেদনে এই চিত্র উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রধান হিসেবে মার্টিনের কার্যকালে দলের তহবিল সংগ্রহে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে।
এমনকি দলের পক্ষ থেকে বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে অর্থ সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও, তা পূরণ করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
উদাহরণস্বরূপ, কেনটাকি রাজ্যের গভর্নর অ্যান্ডি বেশিয়ার কাছে নিউ জার্সি ও ভার্জিনিয়ার গভর্নর নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য পাঁচ মিলিয়ন ডলার করে সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মার্টিন।
কিন্তু পরে আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়ে।
শুধু তাই নয়, সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আইনি খরচ বহন করতে হচ্ছে ডিএনসিকে।
বাইডেনের আইনজীবীদের বিল বাবদ কয়েক লক্ষ ডলার এরই মধ্যে খরচ হয়েছে।
এছাড়াও, ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের নির্বাচনী প্রচারণার সময়কার দেনা এখনো পরিশোধ করতে হচ্ছে, যা মার্টিনের জন্য নতুন সংকট তৈরি করেছে।
মার্টিনের নেতৃত্ব নিয়ে দলের ভেতরে ভিন্নমত রয়েছে।
দলের কিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি যেমন রাজ্য পর্যায়ের নেতারা মনে করেন মার্টিন ভালো কাজ করছেন।
কিন্তু অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং দলের কৌশলবিদদের মতে, মার্টিন দলের জন্য তেমন কিছুই করতে পারছেন না।
তারা মার্টিনকে ‘প্রাসঙ্গিকতাহীন’ হিসেবেও অভিহিত করেছেন।
তাদের মতে, দলের মূল মনোযোগ এখন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো থেকে সরে গিয়ে ছোটখাটো বিষয়ে আটকে গেছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, রিপাবলিকান ন্যাশনাল কমিটি (RNC) এর তুলনায় ডিএনসির তহবিল অনেক কম।
জুলাই মাসের শেষ দিকে আরএনসির হাতে যেখানে ছিল ৮৪.৩ মিলিয়ন ডলার, সেখানে ডিএনসির ছিল মাত্র ১৩.৯ মিলিয়ন ডলার।
এই পরিস্থিতিতে মার্টিনকে বিভিন্ন সমালোচনার মুখোমুখি হতে হচ্ছে।
কেউ কেউ তার উপর অতি-আশ্বাস দেওয়ার অভিযোগ এনেছেন।
আবার কারো কারো মতে, তিনি দলের মধ্যে বিভেদ তৈরি করছেন এবং পুরনো নেতাদের কোণঠাসা করছেন।
তবে মার্টিনের সমর্থকরা মনে করেন, তিনি দলের ভিত মজবুত করার চেষ্টা করছেন।
তারা মনে করেন, রাজ্য পর্যায়ের দলগুলোকে আরও শক্তিশালী করতে পারলে আগামী নির্বাচনে ভালো ফল করা সম্ভব হবে।
মিসৌরি ডেমোক্রেটিক পার্টির চেয়ার, রাস কার্নাহানের মতে, মার্টিন দলের দুর্বলতাগুলো কাটিয়ে উঠতে চান এবং রাজ্যের দলগুলোর জন্য অবকাঠামো তৈরি করতে চান।
ডিএনসির অভ্যন্তরে আসন্ন পরিবর্তনগুলো নিয়েও আলোচনা চলছে।
মার্টিন দলের কার্যকারিতা বাড়ানোর জন্য কিছু সংস্কারের চেষ্টা করছেন।
তবে দলের পুরনো অনেক সদস্য, বিশেষ করে কৃষ্ণাঙ্গ নেতারা মনে করছেন, তাদের গুরুত্ব কমে যাচ্ছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ডেমোক্রেটিক পার্টিকে ঘুরে দাঁড়াতে হলে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর প্রতি মনোযোগ দিতে হবে।
তথ্য সূত্র: CNN