যন্ত্রণা উপেক্ষা! চিকিৎসকের কথা শুনে যা হলো, শুনলে শিউরে উঠবেন!

শিরোনাম: চিকিৎসকদের অবহেলায় ১৮ বছরের তরুণীর শরীরে বাসা বাঁধা টিউমার, অস্ত্রোপচারে হারাতে হলো ডিম্বাশয়

অস্বস্তিকর শারীরিক যন্ত্রণা নিয়ে চিকিৎসকের কাছে গেলেও প্রথমে গুরুত্ব দেননি তারা। মাসের পর মাস ধরে চলা এই যন্ত্রণার কারণ অবশেষে ধরা পড়ল অস্ত্রোপচারে। যুক্তরাষ্ট্রের আরকানসাসের বাসিন্দা, তরুণী সাভানা স্টুথার্সের জীবনের এই অভিজ্ঞতাই এখন আলোচনার বিষয়।

চিকিৎসকদের উদাসীনতার কারণে কিভাবে একটি মেয়ের জীবন ও স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়তে পারে, সেই গল্প শুনুন।

২০২৩ সালের মার্চ মাসে, আঠারো বছর বয়সী সাভানা একটি নন-হরমোনাল গর্ভনিরোধক পদ্ধতি হিসেবে কপার আইইউডি (IUD) ব্যবহার করা শুরু করেন। এর কিছুদিন পরেই তিনি তলপেটে চাপ অনুভব করতে শুরু করেন এবং অল্প রক্তক্ষরণ হতে থাকে।

বিষয়টি নিয়ে তিনি চিকিৎসকের পরামর্শ চাইলে তারা বিষয়টিকে তেমন গুরুত্ব দেননি। চিকিৎসকেরা জানান, শরীরে আইইউডি-র সঙ্গে মানিয়ে নিতে হয়তো এক-দু’ বছর সময় লাগবে।

কিন্তু সাভানার শারীরিক কষ্ট ক্রমশ বাড়তে থাকে। জুলাই মাস নাগাদ যন্ত্রণা তীব্র আকার ধারণ করে। তাঁর মনে হতে শুরু করে, যেন কেউ তাঁর জরায়ুর বাম পাশে ছুরি ধরে আছে।

তিনি চিকিৎসকের কাছে আল্ট্রাসাউন্ড করার জন্য অনুরোধ করেন, কিন্তু তাঁর সেই অনুরোধও প্রত্যাখ্যান করা হয়। চিকিৎসকেরা জানান, আইইউডি সঠিক স্থানেই আছে এবং উদ্বেগের কোনো কারণ নেই।

দিনের পর দিন এই যন্ত্রণা সহ্য করতে করতে সাভানা একসময় হতাশ হয়ে পড়েন। এরপর সেপ্টেম্বরে তাঁর যন্ত্রণা চরম পর্যায়ে পৌঁছায়।

তিনি তাঁর মাকে টেক্সট করে জানান, তাঁর মনে হচ্ছে, বাম পাশে কেউ যেন ছুরিকাঘাত করছে। এরপর হালকা রক্তক্ষরণ দ্রুত বেড়ে যায় এবং তা ভয়ঙ্কর রূপ নেয়।

এরপর অক্টোবরে জরুরি বিভাগে পরীক্ষার পর জানা যায়, তাঁর বাম ডিম্বাশয়ে ৮ সেন্টিমিটারের একটি সিস্ট (Cyst) তৈরি হয়েছে। দ্রুত অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

কিন্তু অস্ত্রোপচারের সময় চিকিৎসকেরা দেখেন ভিন্ন চিত্র। সিস্টের আকার বেড়ে ১০ সেন্টিমিটারে পৌঁছেছে, যা একজন ডাক্তারের মুঠোর সমান। অস্ত্রোপচারে সাভানার বাম ডিম্বাশয়টি শরীর থেকে আলাদা হয়ে যায় এবং সেটি নষ্ট হয়ে যায়।

ডিম্বাশয়টির ভেতরে পাওয়া যায় দাঁত, চুল এবং ফ্যাটযুক্ত একটি টিউমার, যা আসলে একটি টেরাটোমা (Teratoma)।

চিকিৎসকেরা জানান, এই ধরনের টিউমার খুবই বিরল। অস্ত্রোপচারের পর সাভানার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলেও, তাঁর মানসিক আঘাত ছিল অনেক গভীর।

সাভানা তাঁর অভিজ্ঞতা সামাজিক মাধ্যমে তুলে ধরেন। তিনি জানান, কিভাবে চিকিৎসকেরা তাঁর শারীরিক কষ্টের কথাকে গুরুত্ব দেননি। তাঁর মতে, সামান্য একটি আল্ট্রাসাউন্ড পরীক্ষার মাধ্যমে হয়তো তাঁর ডিম্বাশয়টি রক্ষা করা যেত।

বর্তমানে সাভানা সুস্থ আছেন এবং তাঁর শরীরে অবশিষ্ট থাকা ডিম্বাশয়টির স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল সেবন করছেন। তাঁর অভিজ্ঞতা থেকে তিনি অন্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, শরীরের কোনো কষ্ট হলে, তা চেপে না গিয়ে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে এবং নিজের শরীরের কথা শোনা উচিত।

তথ্যসূত্র: আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *