ডগি ব্যাগ-এর বিদায় ঘণ্টা? রেস্টুরেন্টের খাবার এখন ফেলার তালিকায়!

রেস্টুরেন্টের খাবার: বাসি খাবার কি সত্যিই আর থাকছে না?

আজকাল রেস্টুরেন্টে খাবার খাওয়ার পর অবশিষ্ট খাবার বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার প্রবণতা যেন কমছে। উন্নত দেশগুলোতে, বিশেষ করে আমেরিকা ও যুক্তরাজ্যে এই চিত্র বেশি দেখা যাচ্ছে।

অনেকে একে “ডগি ব্যাগ”-এর সংস্কৃতি হিসাবেও চেনেন, যেখানে খাবার শেষে অতিরিক্ত অংশ একটি বাক্সে ভরে গ্রাহকদের দেওয়া হতো। কিন্তু এখন এই চল প্রায় উঠেই যাচ্ছে।

এর কারণ কী?

বিষয়টি বুঝতে হলে কয়েকটি কারণ বিবেচনা করতে হবে। প্রথমত, অনেকের মধ্যে অবশিষ্ট খাবার চেয়ে নেওয়ার একটা অস্বস্তি কাজ করে। অনেকে মনে করেন, এটা যেন কিছুটা লজ্জার।

রেস্টুরেন্টে যাওয়ার আসল উদ্দেশ্য তো সুন্দর পরিবেশ ও ভালো খাবারের স্বাদ নেওয়া। সেখানে অর্ধেক খাওয়া স্টেক পলিথিনের প্যাকেটে ভরে বাড়ি নিয়ে আসাটা অনেকের কাছে আকর্ষণীয় মনে হয় না।

কিন্তু খাবারের অপচয় একটি গুরুতর সমস্যা। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, একজন আমেরিকান বছরে গড়ে প্রায় ২৬ কেজি খাবার প্লেটে ফেলে দেন, যার আর্থিক মূল্য প্রায় ৩৫,০০০ টাকার বেশি।

এই বিপুল পরিমাণ খাদ্য নষ্ট হওয়া সত্যিই উদ্বেগের বিষয়। এমনকি, ফ্রান্সের মতো দেশেও, যেখানে “ডগি ব্যাগ”-এর ধারণা জনপ্রিয় নয়, সেখানেও খাদ্য অপচয় কমাতে উৎসাহিত করা হচ্ছে।

তাহলে উপায় কী? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, খাবারের অপচয় কমাতে হলে পরিবেশ সচেতনতা বাড়াতে হবে। সেই সঙ্গে রেস্টুরেন্টগুলোতে খাবারের পরিমাণ কমিয়ে আনা যেতে পারে।

প্রতিটি পরিবেশনে যদি একজন মানুষের খাওয়ার উপযোগী পরিমাণ খাবার পরিবেশন করা হয়, তাহলে অনেক খাবার নষ্ট হওয়া থেকে বাঁচানো সম্ভব।

এই পরিস্থিতিতে, আমাদের দেশের চিত্রটা কেমন? বাংলাদেশেও খাদ্য অপচয় একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে, বিয়ে বাড়িতে অথবা রেস্টুরেন্টগুলোতে প্রচুর খাবার নষ্ট হয়।

সঠিক পরিকল্পনা ও সচেতনতার অভাবে অনেক খাবার ফেলে দেওয়া হয়, যা আমাদের অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর।

খাদ্য অপচয় রোধে আমাদের আরও বেশি সচেতন হতে হবে। রেস্টুরেন্টগুলোতে খাবারের পরিমাণ কমিয়ে আনা, প্রয়োজন অনুযায়ী খাবার অর্ডার করা এবং অবশিষ্ট খাবার নষ্ট না করে তা ব্যবহারের চেষ্টা করা যেতে পারে।

আসুন, আমরা সবাই খাদ্য অপচয় রোধ করি এবং একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ি।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *