আতঙ্কে ডোমেইন, হাইতির সীমান্ত জুড়ে সেনা!

ডমিনিকান রিপাবলিক হাইতির সঙ্গে সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদার করছে।

ডমিনিকান রিপাবলিক প্রতিবেশী হাইতিতে ক্রমবর্ধমান অস্থিরতার কারণে দেশটির সঙ্গে সীমান্ত নিরাপত্তা আরও জোরদার করার ঘোষণা দিয়েছে। দেশটির প্রেসিডেন্ট লুইস আবিনাদার সম্প্রতি বলেছেন, হাইতির নাগরিকদের জন্য আশ্রয় চাওয়ার প্রেক্ষাপটে তাঁর সরকার সীমান্ত নিরাপত্তা আরও জোরদার করবে।

প্রেসিডেন্ট আবিনাদার জানান, সীমান্তে নজরদারি বাড়াতে অতিরিক্ত ১,৫০০ সেনা সদস্য মোতায়েন করা হবে। বর্তমানে সেখানে ৯,৫০০ সেনা সদস্য মোতায়েন রয়েছে। গত বছর নির্বাচনে অভিবাসন নীতি কঠোর করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি।

ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দ্বিতীয় বৃহত্তম দ্বীপটি হাইতির সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছে ডমিনিকান রিপাবলিক। প্রেসিডেন্ট আবিনাদার আরও বলেছেন, দুই দেশকে আলাদা করা সীমান্ত প্রাচীরের নতুন একটি অংশ নির্মাণের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। হাইতির সঙ্গে ডমিনিকান রিপাবলিকের সীমান্ত প্রায় ৩০০ কিলোমিটার বিস্তৃত। এর মধ্যে প্রায় ৫৪ কিলোমিটার সীমান্ত প্রাচীর নির্মাণ করা হয়েছে।

ডমিনিকান প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, সীমান্ত প্রাচীর নির্মাণের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এর ফলে আরও ১৩ কিলোমিটার প্রাচীর তৈরি করা সম্ভব হবে। এছাড়া, অভিবাসীদের আগমন ও বসবাসের সুবিধা প্রদানকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির বিধান করার লক্ষ্যে আইনি সংস্কারের পরিকল্পনাও নেওয়া হচ্ছে।

হাইতিতে চলমান সংকট বিবেচনা করে ডমিনিকান রিপাবলিক এই পদক্ষেপগুলো নিচ্ছে। গত বছর হাইতিতে ব্যাপক সহিংসতা দেখা দেয়, যার ফলে রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের অধিকাংশ এলাকা গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে চলে যায়।

জাতিসংঘের তথ্যমতে, ২০২৪ সালে হাইতিতে ৫,৬০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে এবং ১০ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এদের অনেকে প্রতিবেশী ডমিনিকান রিপাবলিকে আশ্রয় চাইছে।

ডমিনিকান রিপাবলিক হাইতির নাগরিকদের ফেরত পাঠানোর জন্য কঠোর নীতি গ্রহণ করেছে। সম্প্রতি তারা প্রতি সপ্তাহে প্রায় ১০,০০০ হাইতিয়ানকে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলো এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে বলেছে, হাইতিতে প্রত্যাবর্তনের পর তাঁদের জীবন আরও কঠিন হয়ে উঠবে। তাই যুক্তরাষ্ট্র এবং ডমিনিকান রিপাবলিকসহ অন্যান্য দেশগুলোর প্রতি এই প্রক্রিয়া বন্ধ করার আহ্বান জানানো হয়েছে।

মে মাসে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে হাইতি সম্পর্কিত বিষয়গুলো গুরুত্বপূর্ণ ছিল। প্রেসিডেন্ট আবিনাদার সীমান্ত ও অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ জোরদার করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন এবং আন্তর্জাতিক সহায়তার আহ্বান জানিয়েছেন।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *