যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ডোরড্যাশ (DoorDash), যুক্তরাজ্যের প্রতিদ্বন্দ্বী ডেলিভারু (Deliveroo)-কে প্রায় ৩.৯ বিলিয়ন ডলারে (বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী, যা প্রায় ৪২,৪’৮৮,২২০,০০০ বাংলাদেশি টাকার সমান) কিনে নিতে যাচ্ছে।
মঙ্গলবার উভয় কোম্পানি এই ঘোষণা দেয়। ইউরোপে নিজেদের বাজার আরও প্রসারিত করতে এবং অন্যান্য প্রতিযোগীদের সঙ্গে টিকে থাকতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
খাবার সরবরাহ ব্যবসার বাজারে ডোরড্যাশের অবস্থান আরও শক্তিশালী করতেই এই চুক্তি। জাস্ট ইট (Just Eat) এবং উবার ইটস (Uber Eats)-এর মতো বড় কোম্পানিগুলোর সঙ্গে তাদের তীব্র প্রতিযোগিতা চলছে।
বর্তমানে, ব্রিটেনের বাজার ডেলিভারুর জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে তাদের অর্ডারের ৬২% আসে। আয়ারল্যান্ড, ফ্রান্স এবং ইতালিতেও ডেলিভারুর উল্লেখযোগ্য ব্যবসা রয়েছে।
ডেলিভারুকে কেনার জন্য ডোরড্যাশ প্রতি শেয়ারের জন্য ১৮০ পেন্স দেওয়ার প্রস্তাব দেয়। মঙ্গলবার এই প্রস্তাব চূড়ান্ত হওয়ার পরে ডেলিভারুর শেয়ারের দাম প্রায় ২% বাড়ে, যা ১৭৬ পেন্স-এ পৌঁছে যায়।
ডোরড্যাশ জানিয়েছে, তারা তাদের প্রস্তাব আর বাড়াবে না। তবে অন্য কোনো কোম্পানি যদি ডেলিভারুকে কেনার প্রস্তাব দেয়, তাহলে তারা সেই প্রস্তাবের জবাব দিতে প্রস্তুত।
২০২১ সালে ডেলিভারুর শেয়ারের প্রাথমিক বাজারে (IPO) প্রতিটি শেয়ারের দাম ছিল ৩৯০ পেন্স, কিন্তু এরপর থেকে তাদের শেয়ারের দাম তেমন বাড়েনি।
কোভিড-১৯ মহামারীর সময় খাদ্য সরবরাহ ব্যবসার চাহিদা বাড়লেও, ডেলিভারুর শেয়ারের দামে সেই প্রভাব পড়েনি।
ডেলিভারুর পরিচালনা পর্ষদ এই প্রস্তাবকে তাদের শেয়ারহোল্ডারদের জন্য উপকারী বলে মনে করছে। ডেলিভারুর চেয়ার, ক্লডিয়া আর্নি এক বিবৃতিতে বলেছেন, “আমরা বিস্তারিত আলোচনার পর এই প্রস্তাবটি অনুমোদন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি, যা আমাদের সকল শেয়ারহোল্ডার এবং সংশ্লিষ্টদের জন্য ভালো হবে।”
জানা গেছে, ডেলিভারুর শেয়ারের প্রায় ১৫.৪% বিনিয়োগকারী এই চুক্তির প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। এর মধ্যে ডেলিভারুর প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধান নির্বাহী উইল শু-ও রয়েছেন।
তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, ডেলিভারুর সবচেয়ে বড় বিনিয়োগকারী অ্যামাজন (Amazon)-এর এই চুক্তিতে সমর্থন না জানানোটা বেশ লক্ষণীয়। অ্যামাজনের কাছে ডেলিভারুর ১৪.৪% শেয়ার রয়েছে।
২০২৪ সালে ডেলিভারু এবং ডোরড্যাশের সম্মিলিত অর্ডারের পরিমাণ প্রায় ৯০ বিলিয়ন ডলার ছিল। ডেলিভারুর প্রতিষ্ঠাতা উইল শু, যিনি কোম্পানির ৬.৪% শেয়ারের মালিক, এই চুক্তি থেকে প্রায় ১৭২.৪ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ১,৮৭৮,৮৯২,০০০ বাংলাদেশী টাকা) পেতে যাচ্ছেন।
তথ্যসূত্র: সিএনএন