প্রতি আধা ঘন্টায় শিশু ধর্ষণ! ডিআর কঙ্গোতে ভয়াবহ চিত্র!

গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্রে (ডিআরসি) চলমান সংঘাতের মধ্যে শিশুদের উপর যৌন সহিংসতার উদ্বেগজনক চিত্র তুলে ধরেছে জাতিসংঘ। জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে দেশটির পূর্বাঞ্চলে শিশুদের উপর ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নের ঘটনা ব্যাপক হারে বেড়েছে।

জাতিসংঘের মুখপাত্র জেমস এল্ডারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, শুধুমাত্র এই দুই মাসেই প্রায় ১০ হাজার ধর্ষণ ও যৌন সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে, যার মধ্যে ৩৫ থেকে ৪৫ শতাংশ ভুক্তভোগীই শিশু। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, প্রতি আধা ঘণ্টা পর পর একজন শিশু ধর্ষণের শিকার হচ্ছে।

কঙ্গোর পূর্বাঞ্চলে এম২৩ বিদ্রোহী গোষ্ঠী ও সরকারি বাহিনীর মধ্যে তীব্র লড়াই চলছে। এর ফলস্বরূপ, হাজার হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং অনেকে নিহত হয়েছে। জাতিসংঘের মতে, শিশুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং এটি একটি পদ্ধতিগত সংকট। একে যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে এবং এর মাধ্যমে পরিবার ও সম্প্রদায়ের মধ্যে ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করা হচ্ছে।

জাতিসংঘের পক্ষ থেকে এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে এবং জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছে। তারা প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ এবং ভুক্তভোগীদের জন্য উপযুক্ত সহায়তা প্রদানের উপর জোর দিয়েছে। এল্ডার বলেছেন, “নির্যাতিত শিশুদের পাশে বিশ্বকে দাঁড়াতে হবে, তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল হতে হবে। অপরাধীদের অবশ্যই বিচারের আওতায় আনতে হবে।”

ডিআরসিতে ১৯৯৪ সালের রুয়ান্ডা গণহত্যার পর থেকেই বিদ্রোহী গোষ্ঠী ও সরকারি বাহিনীর মধ্যে সহিংসতা চলে আসছে। সম্প্রতি, এম২৩ বিদ্রোহীরা দ্রুতগতিতে অগ্রসর হয়ে পূর্বাঞ্চলের গোমা ও বুকাভু শহর দখল করে নেয়। জাতিসংঘ এবং পশ্চিমা দেশগুলো রুয়ান্ডাকে এম২৩-কে অস্ত্র দিয়ে সহায়তা করার জন্য অভিযুক্ত করেছে, যদিও রুয়ান্ডা এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

ইউনিসেফ সতর্ক করে বলেছে, শিশুদের উপর সহিংসতার এই বৃদ্ধি কেবল একটি যুদ্ধকালীন ঘটনা নয়, বরং এটি একটি গভীর সংকট। সংস্থাটি মনে করে, এই ধরনের সহিংসতা পরিবার ও সমাজের উপর ধ্বংসাত্মক প্রভাব ফেলে। শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং তাদের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *