গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের (DRC) সাবেক প্রেসিডেন্ট জোসেফ কাবিলাকে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে অভিযুক্ত করে তার রাজনৈতিক দল ‘পিপলস পার্টি ফর রিকন্সট্রাকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসি’ (PPRD)-কে নিষিদ্ধ করেছে দেশটির সরকার। একইসঙ্গে, কাবিলার সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
শনিবার দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, এম২৩ বিদ্রোহী গোষ্ঠীর প্রতি ‘অস্পষ্ট’ মনোভাব প্রদর্শনের কারণে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
কঙ্গোর পূর্বাঞ্চলে এম২৩ বিদ্রোহীদের তৎপরতা আবারও সহিংসতা বাড়িয়ে তুলেছে। রুয়ান্ডা থেকে আসা বিদ্রোহীদের সঙ্গে খনিজ সম্পদ নিয়ন্ত্রণের লড়াইয়ের জেরে কয়েক দশক ধরে এখানে সংঘাত চলছে।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, এই লড়াইয়ে হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছে এবং কয়েক লক্ষ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এম২৩ বিদ্রোহীরা ইতোমধ্যে গোমা ও বুকাভুর মতো গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলো দখল করেছে।
বর্তমান প্রেসিডেন্ট ফেলিক্স তিশেসেকি কাবিলার বিরুদ্ধে বিদ্রোহের প্রস্তুতি এবং এম২৩-সহ একটি জোটকে সমর্থন করার অভিযোগ এনেছেন। বিচার মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, কাবিলার পাশাপাশি দলের অন্যান্য শীর্ষ নেতাদের সম্পদও বাজেয়াপ্ত করা হবে।
যদিও কাবিলা বা তার দল থেকে সরাসরি কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি, তবে কাবিলার মুখপাত্র বারবারা নজিম্বি জানিয়েছেন, সাবেক প্রেসিডেন্ট খুব শীঘ্রই জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেবেন।
পিপিআরডি’র সেক্রেটারি ফার্দিনান্দ কাম্বেরে এই নিষেধাজ্ঞাকে সংবিধানের ‘প্রকাশ্য লঙ্ঘন’ বলে উল্লেখ করেছেন।
খবর অনুযায়ী, কাবিলা দক্ষিণ আফ্রিকায় দুই বছর কাটানোর পর সম্প্রতি দেশে ফিরেছেন। ধারণা করা হচ্ছে, তিনি ২০২০ সালের নির্বাচনের আগে দেশ ছেড়েছিলেন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, কাবিলা বর্তমানে গোমায় অবস্থান করছেন, তবে তার উপস্থিতি এখনো নিশ্চিত করা যায়নি।
জোসেফ কাবিলা ২০০১ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত কঙ্গোর প্রেসিডেন্ট ছিলেন। তার শাসনামলে ২০০৬ এবং ২০১১ সালের নির্বাচনগুলোতে জালিয়াতি ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছিল।
২০১৯ সালে তিনি ক্ষমতা হস্তান্তরের আগে দুই বছর ধরে ব্যাপক বিক্ষোভ হয় এবং আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ে। কঙ্গোর স্বাধীনতা লাভের পর এটি ছিল শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রথম ঘটনা।
এর আগে, কাবিলা এক সাক্ষাৎকারে জানান, দেশের রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা সংকট সমাধানে তিনি ভূমিকা রাখতে চান।
এম২৩ বিদ্রোহীদের সঙ্গে কঙ্গো সরকারের শান্তি আলোচনা এপ্রিল মাসে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল, যা বর্তমানে স্থগিত করা হয়েছে।
জাতিসংঘ এবং বেশ কয়েকটি আঞ্চলিক সরকার রুয়ান্ডার বিরুদ্ধে এম২৩-কে সমর্থনের অভিযোগ এনেছে, যদিও রুয়ান্ডার প্রেসিডেন্ট পল কাগামে তা অস্বীকার করেছেন।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা