মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক আলোচনা এবং পরামর্শ দেওয়ার ক্ষেত্রে ড. জন ডেলনি’র জনপ্রিয়তা বাড়ছে, বিশেষ করে এমন একটি সময়ে যখন অনেকেই তাদের ভেতরের কথাগুলো বলতে চান।
ডেভ র্যামসের নেটওয়ার্কের একটি অনুষ্ঠানে তিনি মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কথা বলেন এবং শ্রোতাদের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান দেন।
বর্তমানে ইউটিউবে তার ১.২ মিলিয়ন এবং ইন্সটাগ্রামে ১.৫ মিলিয়নের বেশি অনুসারী রয়েছে।
ডেলনি’র অনুষ্ঠানে আসা মানুষেরা তাদের ব্যক্তিগত জীবনের নানা গোপন কথা শেয়ার করেন।
কারো বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক, কারো বোনদের মধ্যে গর্ভপাত বিষয়ক ভিন্নমত, এমনকি প্রিয় বন্ধুর স্ত্রীর সাথে সম্পর্ক গড়ার মতো বিষয়ও আলোচনা হয়।
শ্রোতাদের মধ্যে পুরুষ, নারী, রক্ষণশীল খ্রিস্টান, ট্রাক চালক, সেনা সদস্য, পুলিশ অফিসার ও কৃষকসহ বিভিন্ন পেশার মানুষজন রয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক সংকট বাড়ছে, এমন পরিস্থিতিতে ডেলনির অনুষ্ঠান অনেকের কাছে নির্ভরযোগ্য আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে।
কারণ তিনি মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক সমস্যাগুলো সহজভাবে উপস্থাপন করেন এবং শ্রোতাদের সাথে বন্ধুর মতো মিশে যান।
ডেভিড কেসলারের মতে, ডেলনি’র এই দিকটি অনেক মানুষের কাছে আকর্ষণীয়, কারণ তিনি একই সাথে একজন পেশাদার পরামর্শদাতা এবং একজন ভালো বন্ধু।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক আলোচনা থেরাপির বিকল্প হতে পারে না।
তবে ডেলনির মতো প্ল্যাটফর্ম মানুষের মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক যাত্রা শুরু করতে সহায়তা করতে পারে।
ড. ফ্রাঙ্ক সিলিও’র মতে, পডকাস্টের মাধ্যমে মানুষ মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে জানতে পারে, যা তাদের জন্য উপকারী।
ডেলনি’র মতে, সমাজে মানুষের মধ্যে সংযোগ কমে যাওয়ায় তারা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে।
তিনি চান, মানুষ যেন কোনো বিষয়ে একমত না হলেও একে অপরের প্রতি সহানুভূতিশীল থাকে।
তিনি মনে করেন, সবার জন্য তার দরজা খোলা।
ডেলনির বেড়ে ওঠা টেক্সাসে।
তার বাবা ছিলেন একজন গোয়েন্দা।
ছোটবেলায় বাবার পেশাগত কারণে তিনি বিভিন্ন মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক সমস্যা ও ঘটনার সাথে পরিচিত হন।
পরবর্তীতে তিনি মনোবিজ্ঞান ও মানবিক বিষয়ে পড়াশোনা করেন।
বর্তমানে তিনি কাউন্সেলর শিক্ষা ও তত্ত্বাবধান বিষয়ে ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেছেন।
ডেলনি তার ব্যক্তিগত জীবনের কিছু অভিজ্ঞতাও শেয়ার করেন।
একবার তিনি অনুভব করেছিলেন, তার বাড়ির ভিত্তি দুর্বল হয়ে যাচ্ছে।
যদিও অন্যরা তেমন কিছু দেখেনি, তবুও তিনি আতঙ্কে ছিলেন।
এছাড়া, বিবাহিত জীবনেও তিনি বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিলেন।
এসব অভিজ্ঞতা থেকে তিনি মানসিক স্বাস্থ্য ও সম্পর্কের গুরুত্ব উপলব্ধি করেন।
ডেলনি মনে করেন, মানুষের মধ্যে সম্পর্ক তৈরির সুযোগ কমে যাচ্ছে।
আগে যেখানে প্রতিবেশীর কাছ থেকে চিনি ধার করা হতো, সেখানে এখন ডেলিভারি অ্যাপ ব্যবহার করা হয়।
পুরুষদের মধ্যে দুর্বলতা প্রকাশ করার ক্ষেত্রে অনীহা দেখা যায়।
ডেলনি চান, মানুষ যেন একে অপরের প্রতি সহানুভূতিশীল হয় এবং তাদের মধ্যে ভালো সম্পর্ক বজায় থাকে।
তথ্যসূত্র: সিএনএন